সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধানকে দলীয় কার্যালয়ে তুলে এনে মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মারধরের পাশাপাশি প্রধানকে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে রেখে জোর করে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে, পাত্রসায়র বাসস্ট্যান্ড এলাকায়, থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। প্রহৃত ওই পঞ্চায়েত প্রধানের নাম লক্ষ্মী বাউরি। তিনি পাত্রসায়র গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। রাতে পুলিশের কাছে লক্ষ্মীবাবু পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতীম সিংহের ভাই-সহ তৃণমূলের ১০ জনের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধর করার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল প্রায় সাড়ে চারটে নাগাদ তৃণমূলের কয়েক জন পাত্রসায়র পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে প্রধানকে ডেকে নিজেদের দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। লক্ষ্মীবাবুর অভিযোগ, “প্রথমে তারা গত বছরের খরার জন্য এবার বিনামূল্যে বিপিএল’দের এককালীন বিলি করা চাল প্রাপকদের নামের মাস্টার রোল দেখতে চায়। আমি জানিয়েছিলাম, এ ভাবে সম্ভব নয়। তার পরেই ওরা আমাকে চড়, থাপ্পড়, ঘুষি মারে। ‘ওই চাল বিলি নিয়ে দুর্নীতি করেছি এবং এক দিনের মধ্যে মাস্টার রোল না দেখাতে পারলে পদত্যাগ করব’ বলে ওরা জোর করে আমাকে দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেয়।” তাঁর দাবি, “পার্থপ্রতীম সিংহের ইচ্ছানুযায়ী পঞ্চায়েতের কাজ পরিচালনা করতে রাজি না হওয়ায় তাঁর গোষ্ঠীর লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মারধর করল। চাল বিলি নিয়ে কোনওরকম দুর্নীতি হয়নি।” সন্ধ্যা ৬টার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। প্রধানকে তুলে নিয়ে গিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়ার কথা নানতে নারাজ পার্থপ্রতীমবাবু। তাঁর দাবি, “ওই চাল বিলিতে দুর্নীতি হয়েছে। প্রধান তা মেনে নিয়ে স্বেচ্ছায় মুচলেকা দিয়েছেন। তাঁকে মারধর করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বুধবার তিনি চাল বিলির মাস্টার রোল না দেখাতে পারলে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন।” এ দিকে, থানার কাছে, ঘণ্টা খানেক ধরে এই কাণ্ড চললেও পুলিশ কেন প্রধানকে উদ্ধার করতে যায় নি তা নিয়ে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন। পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “পুলিশ কেন যায় নি তা খোঁজ নিয়ে দেখব। প্রধানের অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। |