শুনানি আটকাতে ধর্মঘটে ডিলাররা, ব্যাহত পরিষেবা
ভুয়ো রেশন কার্ড বাছতে প্রশাসনের গ্রামে গ্রামে শুনানি করতে যাওয়ার প্রতিবাদে জেলা জুড়ে ধর্মঘট শুরু করেছেন রেশন ডিলাররা। সোমবার থেকে ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এর ফলে গণবন্টন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রেশন ডিলারদের দাবি, ‘ধর্মঘট’ নয়, তাঁরা ‘বয়কট’ করছেন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল এম আর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের পুরুলিয়া জেলার সম্পাদক নিরঞ্জন মাহাতো বলেন, “যেভাবে গ্রামে গ্রামে পুলিশ, প্রশাসনের আধিকারিকরা গিয়ে জনশুনানি করে ভুয়ো রেশন কার্ড বাছাই করছেন, তাতে ডিলারদের ওপর জনরোষ তৈরির সম্ভাবনা বাড়ছে। এর প্রতিবাদে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- রেশনের মাল তুলবো না, বন্টনও করবো না। ধর্মঘট নয়, বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহজুড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শুনানি হয়। তাতে কিছু ভুয়ো রেশন কার্ডও ধরা পড়েছে। সংগঠনের জেলা সম্পাদকের দাবি, “এ ভাবে এলাকায় গিয়ে তালিকা হাতে নিয়ে নাম পড়ে ভুয়ো কার্ড বাছাই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে রেশন ডিলারদের উপর জনরোষ আছড়ে পড়তে পারে। ডিলাররা আত্মহত্যাও করতে পারেন। তাই আমরা এর প্রতিবাদের পথে নেমেছি।” তিনি জানান, তাঁরাও ভুয়ো রেশন কার্ড বাদ দেওয়ার পক্ষে। তাঁরাও চান রেশন-ব্যবস্থা দুর্নীতিমুক্ত করা হোক। তাঁর দাবি, “গ্রামে গিয়ে শুনানি করা কোনও পদ্ধতি নয়। পরিবর্তে পুরনো সব কার্ড বাতিল করে নতুন কার্ড দেওয়া হোক।” যদিও মহকুমা খাদ্য নিয়ামক (পুরুলিয়া) সাধন পাঠক বলেন, “শুনানির সিদ্ধান্ত প্রশাসন নিয়েছে। এর জন্য কোথাও জনরোষের কোনও ঘটনা ঘটেছে বলেছে আমি শুনিনি।” জেলাশাসক অবনীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, এক সপ্তাহে জেলার ২২-২৩টি জায়গায় শুনানি করা হয়েছে। তাতে বেশ কিছু ভুয়ো কার্ড আটক করা হয়।” তিনিও জানান, এতগুলি জায়গায় শুনানির পরে রেশন ডিলারদের ওপর জনরোষ আছড়ে পড়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি। রেশন ডিলারদের প্রতি তাঁর বক্তব্য, “শুনানি বন্ধ হবে না। তবে, গণবন্টন ব্যবস্থায় এভাবে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় প্রশান নেবে না।”
উল্লেখ্য গত, ১ সেপ্টেম্বর খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক পুরুলিয়ায় এসে প্রশাসনিক কর্তাদের ভুয়ো রেশন কার্ড সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। মন্ত্রী বলেছিলেন, “এখানে প্রচুর ভুয়ো রেশন কার্ড ব্যবহৃত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে।” খাদ্যমন্ত্রী রেশন ডিলার ও গণবন্টন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের কাছে ভুয়ো রেশন কার্ড জমা দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভুয়ো রেশন কার্ড জমা দেওয়ার সময় সীমা ঘোষণা করেছিলেন। এর পরেই জেলা প্রশাসন ঠিক করে গ্রামে গিয়ে জনশুনানি করে ভুয়ো রেশন কার্ড সংগ্রহ করবে। সেই অনুযায়ী কয়েকটি গ্রামে ইতিমধ্যে শুনানি হয়। রেশন ডিলার গ্রামবাসীদের সামনে রেশনের উপভোক্তাদের নামের তালিকা পড়ে শোনান। কারুর কার্ড ভুয়ো হলে তা গ্রামবাসীরাই ধরিয়ে দেন। শুনানিতে উপভোক্তারা তাঁদের প্রাপ্য খাদ্য দ্রব্যের পরিমাণ জানতে চাইলে তাঁদের সেই তথ্য দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বাঘমুণ্ডি এলাকায় এমনই শুনানি হয়। সেখানে গ্রামবাসীরা রেশনে তাঁদের জন্য বরাদ্দ মালের পরিমাণ জানতে পারেন। তাঁদের অভিযোগ, এত দিন স্থানীয় রেশন ডিলার বরাদ্দের থেকে কম পরিমাণে মাল দিয়েছেন। সেই মাল তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে, গত শুক্রবার বাঘমুণ্ডির বাঁশিটাড় গ্রামে, বাঘমুণ্ডি-বলরামপুর রাস্তা তাঁরা চার ঘণ্টা অবরোধ করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.