ক্ষমতায় আসার পরেই টাটাদের সিঙ্গুরের ‘লিজ জমি’ ফেরত নিয়ে তা ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের দেওয়ার জন্য আইন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও চলছে। এরই মধ্যে অন্য এক শিল্প সংস্থার জন্য চিহ্নিত পুরুলিয়ার একটি জমি নিয়ে পুরনো নির্দেশ বাতিল করতে আজ, বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাব আনা হচ্ছে।
মহাকরণ সূত্রের খবর, ইমামি বায়োটেক সংস্থাকে ভ্যারেন্ডা চাষের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির জন্য পুরুলিয়া জেলার জয়পুর থানা এলাকার আঘরপুর মৌজায় ২৪.২০ একর জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আগেকার বামফ্রন্ট সরকার। সময়টা ছিল ২০০৮ সালের অগস্ট মাস। ওই সরকারি জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত ছিল, ৩০ বছরের জন্য জমি দেওয়া হবে ইমামি বায়োটেককে। তার বিনিময়ে সেলামি বাবদ ৩০ লক্ষ টাকা এবং বার্ষিক খাজনা হিসেবে তিন লক্ষ টাকা পাবে সরকার। রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক মুখপাত্র জানান, সেলামি এবং প্রথম বছরের খাজনার টাকা দেওয়ার কথা ছিল নির্দেশ জারির ৪৫ দিনের মধ্যে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক ও জেলার ভূমি সংস্কার আধিকারিক সম্প্রতি রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ইমামি বায়োটেক সেলামি ও খাজনার টাকা দেয়নি। ফলে তাদের অনুকূলে জমিও হস্তান্তর করা হয়নি। জেলাশাসক ও জেলার ভূমি সংস্কার আধিকারিক দু’জনেই আগের নির্দেশ বাতিল করার প্রস্তাব দেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদেশ বাতিলের প্রস্তাব দেয় রাজ্যের ভূমি সংস্কার দফতর। সরকারের এক মুখপাত্র জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ওই সংস্থার জন্য চিহ্নিত জমির পূর্ণ দখল নিতে আগেকার সরকারি নির্দেশ বাতিল করা হবে। সেই জন্য প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় পেশ করা হচ্ছে।
কিন্তু ইমামি বায়োটেক ভ্যারেন্ডা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েও পিছিয়ে গেল কেন?
ওই সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, “রাজ্যের মধ্যে পুরুলিয়াতেই প্রথম ভ্যারেন্ডা প্রকল্পের জন্য অ-চাষযোগ্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু জমির সেলামি ও খাজনা বাবদ আগের সরকার যে-অর্থ চেয়েছিল, সেটা খুবই বেশি। আমরা টাকার অঙ্ক কমাতে বলেছিলাম। কিন্তু সরকার তাতে রাজি হয়নি। বাধ্য হয়েই আমরা প্রকল্প গড়া থেকে বিরত থাকি।” |