নদীর বুক থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালি পাচার করার অভিযোগ আগে থেকে ছিলই। এত দিন প্রশাসন পদক্ষেপ না নেওয়ায় এ বার বাসিন্দারা নিজেরাই বেআইনি বালি ভর্তি ট্রাক্টর আটক করলেন। মঙ্গলবার সিমলাপাল ব্লকের মণ্ডলগ্রাম মোড়ের ঘটনা। ১৪টি ট্রাক্টর আটক করা হয়। পরে খাতড়া মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের উপস্থিতিতে আটক করা ট্রাক্টরগুলি পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অবৈধভাবে বালি তুলে পাচার করার অভিযোগে ১০ জন ট্রাক চালককে গ্রেফতার করা হয়। আটক করা ১৪টি ট্রাক্টরের মধ্যে ৬টিতে বালি ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়পণ্ডা নদীর মণ্ডলগ্রামের ঘাটে বালি বোঝাই করে কয়েকটি ট্রাক্টর গ্রামের ভিতর দিয়ে আড়রা-পাঁচমুড়া রাস্তায় যাচ্ছিল। সকাল ৬ টা নাগাদ স্থানীয় কুচাকোল, শিউলি, ধাদকীডাঙা, বাদিয়ারা ও মণ্ডলগ্রামের কয়েকশো বাসিন্দা মণ্ডলগ্রাম মোড়ে ট্রাক্টরগুলি আটক করেন। তাঁদের দাবি, আটক করা ট্রাক্টরগুলি থেকে বালি তোলার প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র-সহ আনুসঙ্গিক কাগজপত্র মেলেনি। তাই সেগুলি আটক করা হয়। |
পরে, খাতড়া মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দিলিপ ঘোষ ও সিমলাপাল ব্লকের রাজস্ব আধিকারিক শ্রীকান্ত মণ্ডল ঘটনাস্থলে যান। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। দিলিপবাবু বলেন, “বালি তোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ট্রাক্টরগুলিতে ছিল না। বালি ভর্তি ছ’টি ট্রাক্টর তাই আটক করা হয়েছে। ট্রাক্টর মালিকদের এ জন্য মোটা টাকা জরিমানা করা হবে।”
স্থানীয় মণ্ডলগ্রামের মনোজকুমার দাস, পার্থসারথী শতপথী, শিউলি গ্রামের অশ্বিনী ষন্নিগ্রহীদের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরে জয়পণ্ডা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে বাইরে পাচার করছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। বালি ভর্তি ট্রাক ও ট্রাক্টর প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত গ্রামের ভিতরের দিয়ে যাতায়াত করায় রাস্তা ভেঙেচুরে গিয়েছে। অবৈধভাবে বালি তোলা বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া দাবিতে বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু, বালি পাচার বন্ধ হয়নি।” তাই এ দিন নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে বালি পাচার বন্ধ করার জন্য ট্রাক্টর আটক করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে সিমলাপালের বিএলএলআরও বিধান বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, “খবর পেয়ে মাঝে মধ্যেই আমরা বেআইনিভাবে বালি পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি। মোটা টাকা জরিমানাও করেছি।” |