বাসকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার কান্দি মহকুমার চারটি কলেজে ধর্মঘট পালন করেছে ছাত্র পরিষদ। ওই দিন গোকর্ণে দু’দফায় এক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করা হয়। খড়গ্রাম থানার খড়গ্রাম ও নগরে আধ ঘণ্টা করে পথ অবরোধও করে ছাত্র পরিষদ। সোমবার দুপুরে বাস ভাড়াকে কেন্দ্র করে কান্দি বাসস্ট্যান্ড চত্বরে সংঘর্ষের পর কান্দি থানার পুলিশ ওই রাতে এক বাসকর্মীকে গ্রেফতার করে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার আন্নাপ্পা ই বলেন, “এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”
তবে ছাত্রদের বক্তব্য, বাস ভাড়া নির্ধারণ করা নিয়ে প্রশাসনের ঢিলেঢালা মনোভাবই সমস্যা তৈরি করছে। ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, পাঁচ বছর আগে কান্দির মহকুমা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ছাত্র সংগঠন বাস মালিক ও বাসকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে ছাত্রদের ভাড়ার ছাড় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়া দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তারপরে দফায় দফায় বেশ কয়েকবার জ্বালানি ও যন্ত্রাংশের দাম বেড়েছে। তারপরে ছাত্রদের ভাড়ার সংশোধন কিন্তু হয়নি। তবে ছাত্রেরা নিজেরাই পাঁচ বছর আগে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে এখন বেশি ভাড়া দেয় বলে দাবি। কিন্তু বাসমালিকদের অন্ধকারে রেখে বাসকর্মীরা ছাত্রদের কাছ থেকে পুরো ভাড়াই দাবি করেন। সেই কারণেই গণ্ডগোল চলছে।
ছাত্রদের দাবি, ফের বৈঠক করে ছাত্রদের জন্য ভাড়ার তালিকা নতুন করে বানানো হোক। তা হলে সেই ভাড়ার তালিকাই মেনে চলতে হবে বাসকর্মীদের। ছাত্র পরিষদের জেলা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব ঘটক বলেন, “বাসভাড়া নিয়ে প্রায়ই নানা অশান্তির খবর পাই। বাসকর্মীদের মারে তিন জন ছাত্র জখম পর্যন্ত হলেন। তবু দোষীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। পুলিশ নিষ্ক্রীয় থাকলে মহকুমা জুড়ে আন্দোলনে নামব আমরা।” তিনি বলেন, “বাধ্য হয়েই আমরা কলেজ ধর্মঘট করেছি।”
তবে মুর্শিদাবাদ জেলা মোটর শ্রমিক সমন্বয় সমিতির সম্পাদক বিনয় সাহা বলেন, “ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষে বাসকর্মীরা জড়িতই ছিলেন না। আমাদের কর্মীদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে অন্য লোক মারধর করেছে। পুলিশ তদন্ত করলে সব ডানা যাবে। আমরা তাই চাই পুলিশ ভাল করে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করুক।”
বাস ভাড়ার দাবিতে বাল সিন্ডিকেটের সহ সভাপতি ফুলু মিঞা ছাত্র পরিষদের দাবিকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, “ছাত্রদের জন্য ভাড়া যদি কম নিতে হয়, তা হলে তা ঠিক কত হবে, সেটা প্রশাসন ঠিক করে দিক। তা হলে গণ্ডগোল কমবে।” |