মাওবাদী সন্দেহে বেধড়ক পিটুনি সিপিএম কর্মীকে
‘গণ-আদালতে’ বন্দুকের কুঁদো দিয়ে মারধর চলছিল এক প্রৌঢ়কে। যৌথ বাহিনী পৌঁছে যাওয়ায় কোনও রকমে প্রাণে বাঁচলেন বেলপাহাড়ির বাঁশপাহাড়ি অঞ্চলের মাহাতোবাঁধের প্রৌঢ় সিপিএম কর্মী নলিনী মুড়া। জখম নলিনীবাবুকে ভর্তি করা হয়েছে ঝাড়গ্রাম মহকুমা হাসপাতালে। সোমবার রাতের ওই ঘটনায় জঙ্গলমহলে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মাওবাদীরাই মাহাতোবাঁধের ঘটনায় জড়িত বলে দাবি বেলপাহাড়ির সিপিএম বিধায়ক দিবাকর হাঁসদা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের।
নলিনীবাবুর নিজেরও দাবি, “বাঁশপাহাড়ির সিপিএম নেতা অনিল মাহাতোর সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ রাখা যাবে না ফতোয়া দিয়ে মাওবাদীরাই আমাকে মারছিল। আরও চার জনের খোঁজও করছিল ওরা। যৌথ বাহিনী চলে আসায় প্রাণে বেঁচেছি।” ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার গৌরব শর্মার বক্তব্য, “গোলমালের খবর পেয়ে চার কিলোমিটার দূরের নেগুড়িয়া ক্যাম্প থেকে মাহাতোবাঁধে পৌঁছে বাহিনী এক ‘আক্রান্ত’কে উদ্ধার করে। বাহিনীর পৌঁছনোর খবরে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।” হামলাকারীদের প্রকৃত পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন এসপি।
স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ দু’জন মহিলা-সহ জনা পনেরোর একটি সশস্ত্র দল মাহাতোবাঁধে আসে। নেতৃত্বে মাওবাদী স্কোয়াড নেতা মদন মাহাতো ছিলেন বলেই সূত্রের দাবি। গ্রামবাসীদের একটি মাঠে জড়ো করে পাঁচ সিপিএম কর্মীর খোঁজ করে তারা। চার জন গা ঢাকা দিলেও নলিনীবাবু পালাতে পারেননি। পরে বাহিনী পৌঁছনোর খবরে সশস্ত্র-দলটি রাজাবাসার জঙ্গলের দিকে পালায়। এলাকায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সিপিএমের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ‘জঙ্গলমহল সুরক্ষা কমিটি’র নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে বছরখানেক আগেও নলিনীবাবুকে মাওবাদীরা মারধর করেছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার দুপুরে আবার লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ি অঞ্চলের ভাঙাব্রিজ লাগোয়া মোরাম রাস্তায় তল্লাশি চালানোর সময় দু’টি চ্যালেঞ্জার মাইন উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী। সম্প্রতি লালগড় থেকে অন্তত তিন দফায় মাইন উদ্ধারের ঘটনাও মাওবাদী-আতঙ্কই উস্কে দিচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে বাহিনীর তৎপরতাও আগের তুলনায় বেড়েছে। মাহাতোবাঁধে সোমবার রাতের অন্ধকারেই বাহিনীর পৌঁছে যাওয়াই তার প্রমাণ। ধরপাকড়ও সমানে চলছে। সোমবার শালবনির পাথরপাড়া থেকে জনগণের কমিটির নেতা সন্তোষ মাহাতোকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। লালগড় থানার রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় মঙ্গলবার তাঁকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে ৭ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। মাওবাদী-কমিটির দাপাদাপি বরদাস্ত করতে যে তাঁরা নারাজ, তা জানান দিচ্ছেন জঙ্গলমহলের সাধারণ মানুষও। মঙ্গলবার বিকেলেই ঝাড়গ্রাম শহরের মধুবন এলাকায় মাওবাদী স্কোয়াড সদস্য সন্দেহে লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো ওরফে উলু নামে এক যুবককে মারধর করে জনতা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করায় পুলিশ। লক্ষ্মীকান্তের বাড়ি কুলডিহা গ্রামে। মধুবন এলাকার একটি দোকানে এসে লক্ষ্মীকান্ত কয়েক জনকে হুমকি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.