|
|
|
|
দিল্লির দৌড়ে এগোতে অনশনে ‘কলঙ্কমুক্ত’ মোদী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সুপ্রিম কোর্টের গতকালের রায়কে ঢাল করেই ফের জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রে আসার চেষ্টা শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী।
গুজরাতের দাঙ্গা প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের গত কালের রায়ের বিভিন্ন ব্যাখ্যা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, এই রায় কারও জয় নয়, কারও পরাজয় নয়। কিন্তু ওই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন, ২০০২-এর দাঙ্গায় যে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই, গোটাটাই অপপ্রচার, তা প্রমাণিত হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। ‘কলঙ্কমুক্ত’ মোদী এ বার গুজরাতে শান্তি, ঐক্য এবং সৌহার্দ্যের পরিবেশ তৈরি করতে তিন দিনের অনশনে বসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর গতকাল মোদী ট্যুইটারে শুধু দু’টি শব্দ ব্যয় করেছিলেনঈশ্বর মহান। কিন্তু আজ রাজ্যের মানুষের উদ্দেশে এক খোলা চিঠিতে তিনি বলেছেন, ২০০২ সালে দাঙ্গার পর থেকেই ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর এবং গুজরাত সরকারের নামে নানা মনগড়া অভিযোগ করা হয়েছে। এই সব মিথ্যা অভিযোগের অবসান হল। তবে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরেও গুজরাতের ‘বদনাম’ করার প্রক্রিয়া বন্ধ হবে বলে মনে করেন না তিনি।
তাঁর কথায়, “তবুও শক্ত হাতে গুজরাতকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য শনিবার থেকে সদ্ভাবনা কর্মসূচি নিচ্ছি। গুজরাতে শান্তি, ঐক্য ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ তৈরি করতে তিন দিনের অনশনে বসব।” গত কালের রায়ের পর কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং সমাজকর্মী তিস্তা শেতলওয়াড় বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় কোনও ভাবেই দায়মুক্ত করেনি নরেন্দ্র মোদীকে। কোনও ‘ক্লিনচিট’ও দেওয়া হয়নি। বিজেপি নেতারা ঘরোয়া স্তরেও স্বীকার করছেন সেই কথা। কারণ, নিম্ন আদালতে শুনানি চলবে এবং তার মোড় কোন দিকে গড়ায়, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা আছে। তবুও মোদীর কাছে স্বস্তির বিষয় একটাই। গুজরাত দাঙ্গার প্রায় দশ বছর পরেও এখনও পর্যন্ত তাঁর ভূমিকা নিয়ে কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করা সম্ভব হয়নি। সেটাকেই কাজে লাগিয়ে ফের জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আসার চেষ্টা করছেন মোদী। বিজেপি যখন নেতৃত্বের সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সঙ্ঘ পরিবার লোকসভা ভোটের আগে কোনও নেতাকে তুলে ধরতে নারাজ, ঠিক সেই সময় আডবাণী রথযাত্রার ঘোষণা করে আসলে সুকৌশলে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থীর দৌড়ে এগিয়ে রাখতে চাইছেন।
মোদীও ঠিক একই ভাবে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সুকৌশলে পুঁজি করে গুজরাত দাঙ্গায় নিজেকে ‘কলঙ্কমুক্ত’ করতে চাইছেন। আডবাণীও যেমন বলছেন না, তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে থাকতে চান। মোদীও সে কথা মুখ ফুটে বলছেন না। কিন্তু তিনি জানেন, পরের লোকসভা নির্বাচনে যদি তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে থাকতে হয়, তাহলে গুজরাত দাঙ্গার কলঙ্ক ঘোচাতেই হবে। কারণ, বিজেপি একক শক্তিতে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে নীতীশ কুমারের মতো বিজেপির পুরনো সঙ্গীরা প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর নামে আপত্তি জানাতে পারেন।
কংগ্রেস এখন থেকেই মোদীর সেই পরিকল্পনায় জল ঢালতে চায়। দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আজ বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট কোনও ভাবেই মোদীকে ছাড় দেয়নি। নিম্ন আদালতে শুনানি বাকি। কিন্তু মোদী যে ভাবে রাজনৈতিক সততার পরিচয় দিতে চাইছেন, তা নাটক ছাড়া কিছু নয়। যাঁর মধ্যে নীতির লেশমাত্র নেই, এই আত্মশুদ্ধির প্রয়াস দেখিয়ে তিনি জনতাকে মূর্খ বানাতে পারবেন না।” |
|
|
|
|
|