মহকুমার বিভিন্ন বাস চলাচলকারী রাস্তা বেহাল। রামপুরহাট মহকুমা দিয়ে যাওয়া পানাগড়-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের হালও শোচনীয়।
এই অবস্থায় রাস্তা সংস্কার-সহ ৮ দফা দাবিতে মঙ্গলবার রামপুরহাট মহকুমায় প্রতীকী বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখা এবং রামপুরহাট বাস কর্মচারী সমন্বয় কমিটি। স্বাভাবিক ভাবেই এই ধর্মঘটের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে মহকুমা জুড়ে। মহকুমার ১৮টি বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন কমপক্ষে ২১০টি বেসরকারি বাস চলাচল করে। সেগুলি এ দিন চলেনি। ফলে চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন নিত্যযাত্রী থেকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা। পাশাপাশি বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতেই এ দিন কিছু রুটে ট্রেকার চলাচল বন্ধ রেখেছিল ট্রেকার মালিক সমিতিও।
দুইয়ের জেরে রাস্তায় বেরনো মানুষজনের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। সামান্য কিছু সরকারি বাস আর সুযোগ বুঝে চড়া ভাড়া হাঁকা ‘প্রাইভেট’ গাড়ির ভরসাতেই এ দিন যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়েছে। অনেকে বেরিয়েও যানবাহন না পেয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। মুরারই, নলহাটি, রাজগ্রাম, মল্লারপুরএই সব রুটে অফিসযাত্রী ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের ট্রেনের ভরসায় যাতায়াত করতে হয়েছে। মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকজনদের ভরসা ছিল যন্ত্রচালিত ভ্যান। একই সঙ্গে রামপুরহাট মহকুমা জুড়ে বেসরকারি বাস বন্ধ থাকায় লাগোয়া মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর, ফরাক্কা, রঘুনাথগঞ্জ, লালগোলা, কান্দি থেকে আসা বাসগুলিও রামপুরহাটের মধ্যে চলাচল করেনি। একই ভাবে মালদহ, কৃষ্ণনগর, নবদ্বীপ রুটের বেসরকারি বাসও এ দিন রামপুরহাটে ঢোকেনি। |
ভরসা ট্রাকই। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম। |
মূলত রাস্তা মেরামতির দাবি থাকলেও আরও কিছু দাবিদাওয়া রয়েছে বাস মালিক সমিতির। তবে বেহাল রাস্তা নিয়েই ক্ষোভ সবচেয়ে বেশি মালিক সংগঠন ও বাসকর্মী সংগঠনের। তাদের ক্ষোভ, ভেঙেচুরে যাওয়া খন্দেভরা রাস্তায় রোজ বাস চালাতে গিয়ে চালক যেমন নাকাল হচ্ছেন, তেমনই কিছু না কিছু যন্ত্রাংশ বা চাকা বিগড়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে মালিকদের। তার উপরে রয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। ছোটখাটো দুর্ঘটনায় বাসকর্মীদের ধরে মামলা রুজু করে পুলিশ হেনস্থা করছে বলেও অভিযোগ। সাধারণ মানুষের রাগ গিয়েও পড়ছে বাস চালকের উপরে। একই সঙ্গে মালিক সংগঠনের দাবি, বিভিন্ন রাস্তায় বেআইনি ভাবে যন্ত্রচালিত ভ্যান, ট্রেকার ও প্রাইভেট গাড়ি যাত্রী তুলে নেওয়ায় তাঁদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।
জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সভাপতি জামিরুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসনকে আগাম জানিয়ে এলাকায় এলাকায় মাইকিং করে এ দিনের বাস ধর্মঘটের ব্যাপারে প্রচার চালানো হয়েছিল। এ দিন আমাদের ২১০টি বাস চলেনি। পাশাপাশি বেহাল রাস্তা সারানোর আমাদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে কিছু রুটে এ দিনও ট্রেকারও চলেনি।” তিনি জানান, প্রতীকী বাস ধর্মঘট হলেও রাস্তা অবরোধ করার কর্মসূচি থেকে আপাতত তাঁরা সরে এসেছেন। তবে এর পরেও যদি প্রশাসনের টনক না নড়ে, তা হলেও আন্দোলন কর্মসূচি আরও বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি জামিরুল ইসলামের। |