সৃজনমুখর
ছবি: অনিতা দত্ত
বাংলার কবি-সাহিত্যিক ও সৃজনকর্মীদের সম্মিলিত অংশগ্রহণে এক সৃজনমুখর সাহিত্য ও নাট্যানুষ্ঠানের সাক্ষী থাকল শহর জলপাইগুড়ি। আয়োজক সৃষ্টি মাইম থিয়েটার ও লিটল ম্যাগাজিন দ্যোতনা। প্রথম দিন বসেছিল সাহিত্যের আড্ডা, মঞ্চস্থ হয় মূকনাট্য। সরোজেন্দ্রদেব রায়কত সাংস্কৃতিক কলাকেন্দ্রে এই আড্ডায় উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ওপার বাংলার কবি-সম্পাদক ওবায়েদ আকাশ, কবি মনিরুজ্জামান মিন্টু, সোহেল মাজাহার, মামুন মুস্তাফা, মহম্মদ হিরা, জার্মানি থেকে আসা পত্রিকা-সম্পাদক ও ভাষা-গবেষক জুলি রির্টজ। ছিলেন জ্যোৎস্নেন্দু চক্রবর্তী, আনন্দগোপাল ঘোষ, প্রসাদ রায়, উমেশ শর্মা, তপতী সাহা, অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, কৃষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিন্দিতা গুপ্ত রায় প্রমুখ। কবি, নাট্যকার, সম্পাদক, গায়ক, নৃত্যশিল্পীদের অংশগ্রহণে, তাঁদের অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান ও আগামী অভিমুখ অন্বেষণে, গানে, গল্পে, তর্ক-বিতর্কে জমে ওঠে আসর। কলকাতা থেকে আসা জার্নি নাইনটিজ-এর সম্পাদক রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়, রিভিউ প্রিভিউ-এর সম্পাদক মারুফ হোসেন দ্বিধাগ্রস্ত এই সময়ের কথা তুলে ধরেন। কবি ও শালুক পত্রিকার সম্পাদক ওবায়েদ আকাশের গলায় বাংলাদেশে এই প্রজন্মের সামনে দিশাহীন বিপন্নতার কথা ধরা পড়ে। নাট্যকর্মী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, বর্তমান সময় প্রলোভনের যে গভীর খাদ পেতে রয়েছে, সেখানে সত্যসৃষ্টির বিপদের কথা। সুরে সুরে ভরিয়ে দেন শৈবাল বসু ও মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস। পুষ্পবৃক্ষে জল সিঞ্চন করেন পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত শিল্পী ও গবেষক নিরঞ্জন গোস্বামী। দ্যোতনার ৩৩ বর্ষ সংখ্যা প্রকাশ করেন লোকসংস্কৃতি গবেষক বিমলেন্দু মজুমদার, কবি বিজয় দে-র হাত ধরে প্রকাশিত হয় শৌভিক দে সরকারের কাব্যগ্রন্থ যাত্রাবাড়ি। আকাশ পালচৌধুরির আবৃত্তি দিয়ে সূচনা হয় দ্বিতীয় পর্বের। সুন্দরবন অঞ্চলের লোককথা ‘বনবিবি’ ও জলপাইগুড়ি জেলার লোককাহিনি অবলম্বনে মঞ্চস্থ হয় মূকনাট্য ‘দখিন বায়’। প্রযোজনা সৃষ্টি মাইম থিয়েটার। জলপাইগুড়ির লোকাচারের পাশাপাশি এই নাটকে ব্যবহৃত হয়েছে সুন্দরবনের লোকবিশ্বাস। দ্বিতীয় দিন ‘অভিনয়ে আঙ্গিকের ব্যবহার’ বিষয়ে বলেন নিরঞ্জন গোস্বামী। জলপাইগুড়ি কলাকুশলীর প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হয় রবীন্দ্রনাথের ‘বিসর্জন’। ক্ষুদ্র পত্র-পত্রিকার প্রদর্শনী ও বিপণনের ব্যবস্থা ছিল দু’দিনই। অনুষ্ঠানটিকে সার্থক করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল জলপাইগুড়ির নাট্য সংস্থা চিত্তপট, কলাকুশলী, লিটল ম্যাগাজিন ‘সৃজনী’, শিলিগুড়ি-র ‘মল্লার’।

পর্বতারোহী
আয়কর কর্মী তথা পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস ২০১০-এর ১৯ মে এভারেস্টে আরোহণ করেন এবং গত ২০ মে জয় করেন কাঞ্চনজঙ্ঘা-ও। সহযোগী ছিলেন কৃষ্ণনগর মাউন্টেনিয়ারিং ক্লাবের সদস্য বসন্ত সিংহরায়। এই সাফল্যের জন্য সম্প্রতি তাঁর সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল জলপাইগুড়ি ইনকাম ট্যাক্স গেজেটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। ওই মঞ্চে শহরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও জেলা সংগঠনের পক্ষ থেকেও তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হয়। সিনে সোসাইটি, সাহিত্য সংগঠন দ্যোতনা, নেচার অ্যান্ড ট্রেকার ক্লাব, সৃষ্টি মাইম থিয়েটার তাদের অন্যতম। সংগীতের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ‘সৃজা’-র শিল্পীরা। স্বাগত ভাষণ দেন আই টি গোয়া-র সম্পাদক ধীরাজ সিংহরায়। প্রধান অতিথি ছিলেন মিহিরকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবর্ধনার উত্তরে দেবাশিসবাবু বলেন, প্রকৃতির প্রতি আকর্ষণ ও শ্রদ্ধা বাড়াতে হবে। মাতৃসমা এই পৃথিবীর কথা সবাইকে জানতে হবে। তিনি শৃঙ্গজয় কথাটি বলতে চান না। তাঁর কাছে শৃঙ্গ থেকে শৃঙ্গে পৌঁছনো মায়ের কাছেই যাওয়া। পায়েল নৃত্য ছন্দমের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয় সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের বার্তা। মদন থাপা-র পরিচালনায় পরিবেশিত হয় পুরুলিয়ার লোকনৃত্য থেকে নেপালি লোকনৃত্য। সিনে সোসাইটি-র সহযোগিতায় প্রদর্শিত হয় এভারেস্ট ও কাঞ্চনজঙ্ঘা অভিযানের সময় ক্যামেরাবন্দি বিভিন্ন মুহূর্ত।

শিশুদের জন্য
ছবি: সুদীপ দত্ত
জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশন-এর পরিচালনায় শুরু হয়েছে গদাধর শিশু উন্নয়ন প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে একশো জন শিশুকে, বয়স ৬-১০ বছর। এরা হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের। বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজ চলছে কাদোবাড়ির দাসপাড়ার জেলেপাড়াতে। প্রকল্পের আওতাধীন শিশুদের জন্য রয়েছে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা, ব্রতচারী, পড়াশোনা, খাদ্য, ঐতিহ্য ও নিয়মানুবর্তিতা বিষয়ক শিক্ষা, ইত্যাদি। প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৩টে থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলে এই কর্মসূচি। প্রথমে শিশুদের দুধ, মুড়ি, বাদাম ইত্যাদি দেওয়া হয়, তার পর ব্রতচারী। রয়েছে আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য ধ্যান। তার পর কয়েকটি বিভাগে শিশুদের ভাগ করে পড়াশোনা। শিক্ষার্থীদের আত্মীয়রাই শিক্ষকতার কাজ করেন। এর জন্য তাঁরা পারিশ্রমিকও পান। মিশনের সম্পাদক স্বামী অক্ষয়ানন্দ জানান, এই প্রকল্প উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, মালদহ ও জলপাইগুড়িতে শুরু হয়েছে। শ্রীরামকৃষ্ণের ১৭৫তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে এই প্রকল্প। চলবে ২০১৪ পর্যন্ত। তিনি আরও জানান, পরিকল্পনা রয়েছে অডিয়ো ভিস্যুয়াল ব্যবস্থার মাধ্যমে সব সম্প্রদায়ের জন্য নৈতিক শিক্ষাদান করা।

মেঠো পথ
পত্রিকার নাম ‘মেঠো পথ’। বেরোয় দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিকুল গ্রাম থেকে। সম্পাদক নিমাইচন্দ্র সরকার। পত্রিকার নামেই মাটির ঘ্রাণ। লোকসংস্কৃতিই বিশেষ প্রাধান্য পায়-- লোকপ্রবাদ, লোক ছড়া, লোক ধাঁধা, লোককাহিনি সবই থাকে দুই মলাটে।


উত্তরের কড়চা,এ বি পি প্রাঃ লিমিটেড,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.