|
|
|
|
‘ই-রিটার্ন আগেই ছিল’ |
বৈধতা পেয়েছে অনলাইন লটারি, অভিযোগ অসীমের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
অনলাইন লটারির উপরে ‘চার্জ’ বসিয়ে রাজ্য সরকার তাকে ‘ঘুরপথে’ স্বীকৃতি দিয়েছে বলে অভিযোগ করলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। তাঁর মতে, অনলাইন লটারির আসক্তিমূলক ক্ষতিকর প্রভাব সমাজের উপরে রয়েছে বলে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার তাকে বেআইনি ঘোষণা করার পক্ষপাতী ছিল। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাম সরকারের পক্ষে কিছু করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তারা ওই লটারির উপরে কর আদায় বন্ধ করে দিয়েছিল। কারণ, কর আদায় করলে সেই জিনিসকে ‘বৈধতা’ দেওয়া হয়। |
একই সঙ্গে অসীমবাবুর দাবি, কর প্রশাসনে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা সংক্রান্ত যে সব ঘোষণা নতুন রাজ্য সরকার করেছে, তার সবই বামফ্রন্ট জমানায় চালু হয়ে গিয়েছিল। নিজের ২০১০-১১ সালের বাজেট বক্তৃতা এবং ট্রেড সার্কুলার থেকে উদ্ধৃত করে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, কর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করে যথেষ্ট সাড়াও পেয়েছিল বাম সরকার। নথিভুক্ত ব্যবসায়ীর সংখ্যা ২০০৫ সালের ১ লক্ষ ১৭ হাজার থেকে ১ মার্চ, ২০১১-য় ২ লক্ষ ২২ হাজারে দাঁড়িয়েছিল এবং তার মধ্যে ২ লক্ষ ১০ হাজারই ই-রিটার্ন দাখিল করেছিলেন। অসীমবাবু সোমবার আলিমুদ্দিনে বলেন, “কর ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের কথা বলার সময় এই তথ্যগুলি উল্লেখ করা উচিত।” তিনি কি নতুন সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাভাষণের অভিযোগ আনছেন? স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে অসীমবাবুর জবাব, “এই ধরনের কিছু বলতে আমার শালীনতায় বাধে। আমি উপযুক্ত তথ্যগুলি উল্লেখ করলাম, যেগুলি কর ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বলা উচিত।” বর্তমান অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে চিঠি পাঠিয়ে তিনি কি এই বিষয়গুলি স্মরণ করিয়ে দেবেন?
অসীমবাবুর বক্তব্য, “নতুন করে চিঠি দেওয়ার দরকার নেই। সবই নথিপত্রে আছে। বর্তমান অর্থমন্ত্রী এক বার বলেছিলেন, আমার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। হয়তো ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সময় পাননি।”
নতুন সরকারেরও অনলাইন লটারিকে ‘নিষিদ্ধ’ করা উচিত বলেই অসীমবাবু মনে করেন। তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে চলতি মামলাতেই রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে জানানো যেতে পারে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অসীমবাবুর কথায়, “আমরা বরাবরই বলে এসেছি, আসক্তিমূলক অনলাইন লটারির ক্ষতিকর সামাজিক প্রভাব রয়েছে। ২০০৪-০৫ সালে রাজ্যে এর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছিল। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমরা বলেছিলাম, একটি সভা ডেকে সকলের বক্তব্য শুনুন। পরে মামলা হয়। কলকাতা হাইকোর্ট থেকে মামলা সুপ্রিম কোর্টে যায়।” অসীমবাবু জানান, বিগত রাজ্য সরকার চেয়েছিল ওই লটারিকে বেআইনি বলে গণ্য করা হোক। সেই জন্যই তা থেকে কর নেওয়া তারা বন্ধ করেছিল। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, “কর নিলে (যদিও এই সরকার ‘চার্জ’ বলছে) বিষয়টি স্বীকৃতি পেয়ে যায়। প্রকারান্তরে তাকে বৈধতা দেওয়া হয়।” বিক্রয় করের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবসায়ীদের নাম নথিভুক্ত হওয়া, কর সংক্রান্ত হিসাব দাখিল করা, হিসাব দাখিলের পরে করযোগ্য হলে কর দেওয়া, অন্য রাজ্য থেকে পণ্য আনার ক্ষেত্রে ‘ওয়েবিল’ তৈরি সব ক্ষেত্রেই অনলাইন ব্যবস্থার সুবিধা দেড় থেকে এক বছর আগেই বাম জমানায় চালু করে দেওয়া হয়েছিল বলে অসীমবাবু এ দিন জানান। করপ্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেওয়া এবং তথ্যের কারচুপি হলে জরিমানার ব্যবস্থাও ইতিমধ্যেই চালু। অসীমবাবু বোঝাতে চেয়েছেন, নতুন সরকার যা ‘নতুন’ বলে দাবি করছে, তার সবই প্রচলিত ছিল। |
|
|
|
|
|