জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে (কালেক্টরেট) নজরদারি চালাতে ক্যামেরা বসালেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ। কোনও দফতরে কোনও কর্মী তাঁর সিটে রয়েছেন কি না কিংবা দূরদূরান্ত থেকে জেলা প্রশাসনের সদর দফতরে আসা মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন কি নাক্যামেরায় চোখ রেখে এ সবই সরাসরি দেখবেন খোদ জেলাশাসক।
দিন কয়েক আগে বন দফতরের একটি কার্যালয়ে একই রকম ভাবে ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তবে কর্মীদের একাংশ তা মেনে নিতে পারেননি। সম্প্রতি বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন জেলা সফরে এলে, বনকর্মীদের একাংশ তাঁর কাছে ক্যামেরা বসানো নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা জানান। মন্ত্রী অবশ্য স্পষ্টই জানিয়ে দেন, কর্মীরা তাঁদের কাজ করুন। এ সবে কেন মাথা ঘামাতে যাবেন! |
সোমবার থেকে জেলাশাসকও নিজের দফতরে ক্যামেরা লাগিয়ে নজরদারি শুরু করে দিলেন। আপাতত প্রশাসনিক ভবনের পাঁচটি জায়গায় এ ধরনের ক্যামেরা বসানো হয়েছে। জেলাশাসকের আপ্ত-সহায়কের দফতর, জেলা নির্বাচন দফতর, আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকের কার্যালয় এবং সাধারণ বিভাগের দুই জায়গায় ছোট্ট ক্যামেরা লেগেছে। মনিটর খোলা রয়েছে জেলাশাসকের ঘরে। জেলাশাসকের কথায়, “সাধারণ মানুষ যেখানে যেখানে বেশি আসেন, আপাতত সেখানেই ক্যামেরা বসেছে। ধাপে ধাপে অন্যত্রও বসবে।” তবে শুধু দফতরের ভিতরে নয়, গোটা প্রশাসনিক ভবন চত্বরেই কী ঘটছে, তা নজরে রাখতে শীঘ্রই সেখানেও ক্যামেরা বসানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। অবনীন্দ্র সিংহ বলেন, “বাইরে থেকে বিভিন্ন লোকজন আসেন। নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এই ক্যামেরার মেমোরিতে তিন মাস পর্যন্ত রেকর্ডিং থাকবে।”
কেন এই সিদ্ধান্ত, সে প্রশ্নের জবাবে জেলাশাসকের ব্যাখ্যা, “প্রথমত কর্মসংস্কৃতিতে গতি আসবে। তা ছাড়া, কোনও কর্মী নিজের সিটে আছেন কি না, তা-ও জানা যাবে সঙ্গে সঙ্গে।” এ প্রসঙ্গে কো-অর্ডিনেশন কমিটির জেলা সম্পাদক প্রচেতাকুমার দাসের প্রতিক্রিয়া, “জেলাশাসক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ভাল কথা। কর্মীদের উপরে নজরদারির আমরা কোনও বিরোধিতা করছি না। তবে আমাদের প্রশ্ন, আধিকারিকেরা তাঁদের নিজেদের দফতরে থাকবেন তো? কারণ তাঁদের সই ছাড়া তো সেই দফতরে কাজ হবে না!” |