লক্ষ্যের এক তৃতীয়াংশ স্কুলও চালু হয়নি পূর্বে
মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ বাড়াতে বছর তিনেক আগে পূর্ব মেদিনীপুরে ২৯০টি আপার প্রাইমারি স্কুল চালুর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল জাতীয় সর্বশিক্ষা মিশন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই লক্ষ্যমাত্রার এক তৃতীয়াংশ স্কুলও চালু না হওয়ায় তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদ ও কিছু পঞ্চায়েত সমিতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দেবব্রত মণ্ডলের অবশ্য সব ‘দায়’ চাপিয়েছেন পূর্বতন বাম সরকারের উপরেই। তিনি বলেন, “আপার প্রাইমারি স্কুল চালুর জন্য প্রথম পর্যায়ের প্রস্তাব অনুমোদন নিয়ে নানা ভাবে টালবাহানা করেছিল বিগত বামফ্রন্ট সরকার। পরবর্তী পর্যায়ে গত মে মাসে ১৯৭টি স্কুলের অনুমোদন দেওয়া হয়। তার আগেই ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়ে যাওয়ায় স্কুলগুলি চালু করা যায়নি। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে স্কুলগুলি চালু হবে।”
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুপাতে মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য ২০০৭-০৮ সালে জাতীয় সর্বশিক্ষা মিশন আপার প্রাইমারি স্কুল চালুর পরিকল্পনা নেয়। মিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় পিছু একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই উদ্দেশ্যেই আপার প্রাইমারি স্কুল চালুর ভাবনা, যেখানে পঞ্চম থেকে ধাপে ধাপে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া যাবে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বর্তমানে মাধ্যমিক স্কুল ৬৬৬টি। এ ছাড়া জেলায় ১৫৩টি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র ও ১০টি মাদ্রাসা রয়েছে। সব দিক বিচার-বিবেচনা করে জেলায় আরও ২৯০টি আপার প্রাইমারি স্কুল গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর জন্য জেলার ২৫টি ব্লক থেকে তালিকাও বানানো হয়েছিল ২০০৭-০৮ অর্থবর্ষে। ব্লক স্তর থেকেই এলাকা চিহ্নিত করে জেলা পরিষদে প্রস্তাব আসে।
২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পূর্ব মেদিনীপুরের বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলা পরিষদ আপার প্রাইমারি স্কুল তৈরির জন্য যে সব এলাকা চিহ্নিত করেছিল, তার মধ্যে বেশ কয়েকটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে পরবর্তী তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদ। তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদ তখন নতুন তালিকা করে প্রস্তাব জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে। শেষমেশ প্রথম পর্যায়ে ৫০টি স্কুল গড়ার প্রস্তাবে সায় দেয় জেলা সর্বশিক্ষা মিশন। ২০১০-এ ওই ৫০টি স্কুলের অনুমোদন দেয় রাজ্য সরকার। স্কুলগুলি চালুও হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে গত বছরই জেলা সর্বশিক্ষা মিশন ১৯৭টি আপার প্রাইমারি স্কুল অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠায় সরকারের কাছে। চলতি বছর মে মাসে ওই স্কুলের অনুমোদন দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু অনুমোদন পাওয়া ওই ১৯৭টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ৩৪টি এখনও পর্যন্ত চালু হয়েছে। অর্থাৎ দুই পর্যায় মিলিয়ে জেলায় এখনও পর্যন্ত মাত্র ৮৪টি স্কুল চালু হয়েছে।
সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপার প্রাইমারি স্কুল চালুর পরিকাঠামো গড়তে প্রতিটি স্কুলকে ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। স্কুলের জন্য এলাকা/জমি চিহ্নিত করে প্রস্তাব পাঠানোর পরে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় রাজ্য সরকার। জেলার খেজুরি ১ ও ২ ব্লকে যথাক্রমে ১২টি ও ৯টি স্কুল চালুর পরিকল্পনা থাকলেও এখনও পর্যন্ত একটিও স্কুল চালু হয়নি। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নতুন স্কুল গড়ার কাজে গড়িমসি ও অবহেলার অভিযোগ কিন্তু উঠছেই তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদ ও কিছু পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.