মাঝ আকাশে সন্ত্রাসের আতঙ্ক আমেরিকায়
শৌচাগারে ‘দেরি’ যাত্রীর, হাজির এফ-১৬
যাত্রিবাহী বিমান তখন মাঝ আকাশে। এক যাত্রী শৌচাগারে ঢুকেছেন তো ঢুকেইছেন। বেরোনোর নামই নেই। ৯/১১-র দশম বার্ষিকীতে আমেরিকায় আতঙ্ক তৈরির জন্য এইটুকুই যথেষ্ট ছিল।
আর হলও তাই। পরিস্থিতি সামলাতে মার্কিন প্রশাসন তড়িঘড়ি পাঠাল যুদ্ধবিমান এফ-১৬। একটা নয়। দু’ জোড়া। কারণ, দু’দু’টি বিমানে কয়েক জন যাত্রীর ‘সন্দেহজনক’ আচরণ কালঘাম ছুটিয়ে দিয়েছে প্রশাসনের। শেষমেশ এফ-১৬-এর পাহারায় দু’টি বিমানই নির্বিঘ্নে নামে। তবে ‘সন্দেহভাজন’ যাত্রীদের আটক করা হয়। চলে জেরা। পরে অবশ্য ছাড়াও পেয়ে যান তাঁরা। কিন্তু দু’টি ঘটনাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কতটা আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে মার্কিন প্রশাসন! বিমানে উঠে কোনও যাত্রীর ‘বেশি সময়’ শৌচাগারে থাকারও জো নেই!
যে দুটি বিমানে এত নাটক, তার একটি। ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৬২৩। ছবি: এ পি।
গত কাল লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছিল আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ‘ফ্লাইট-৩৪’। মার্কিন পুলিশ জানিয়েছে, বিমানের এক যাত্রী ‘অস্বাভাবিক সময়’ শৌচাগারে রয়েছেন বলে নজর পড়ে এক বিমানকর্মীর। তিনি বিষয়টি বিমানচালককে জানান। বিমানচালক ‘ঝুঁকি’ না নিয়ে খবর দেন পরিবহণ সংক্রান্ত নিরাপত্তা বিভাগে। সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। সন্ত্রস্ত মার্কিন প্রশাসন একেবারে যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে দেয় সাহায্যের জন্য। নিউ ইয়র্কের মাটি ছোঁয়া পর্যন্ত ছায়ার মতো যাত্রী বিমানটিকে ঘিরে রাখে দু’টি এফ-১৬। বিকেল চারটে দশে নির্বিঘ্নেই জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে নামে বিমানটি। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়, নিছক প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতেই বেশি সময় ধরে বিমানের শৌচাগারে নিজেকে ‘বন্দি’ রেখেছিলেন ওই যাত্রীটি। যদিও তত ক্ষণে বিমানবন্দরে পৌঁছে গিয়েছেন এফবিআইয়ের অফিসাররা। ‘সন্দেহজনক যাত্রীটি’ তো বটেই, বিমানের বাকি যাত্রীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে যে!
একই অভিজ্ঞতা ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্সের ‘ফ্লাইট ৬২৩’-এর যাত্রীদেরও। ১১৬ জন যাত্রী আর চার বিমানকর্মীকে নিয়ে ডেনভার থেকে ডেট্রয়েট যাচ্ছিল বিমানটি। ওই বিমানের এক যাত্রী প্রায় কুড়ি মিনিট শৌচাগারে আছেন বলে চোখে পড়ে দুই বিমানকর্মীর। তার একটু পর আরও দুই যাত্রীর আচরণ ‘সন্দেহজনক’ ঠেকে তাঁদের। তাঁরাও যে দীর্ঘ ক্ষণ সময় কাটাচ্ছিলেন শৌচাগারে! বিমান সংস্থার বক্তব্য, ওই যাত্রীদের আচরণে কর্মীরা মোটেও ‘ভয়’ পাননি। কিন্তু কোনও রকম ‘ঝুঁকি’ও তো নেওয়া যায় না। ব্যস সেখানেও আবার একপ্রস্ত আতঙ্ক। ওই বিমানটিকে ‘সাহায্যের’ জন্য আরও দু’টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে দেয় মার্কিন সেনা। জোড়া ‘এফ-১৬’ যথারীতি ডেনভার থেকে ডেট্রয়েট পর্যন্ত পথ পাহারা দেয় ‘ফ্লাইট ৬২৩’-কে। যদিও দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ মেট্রোপলিটন ওয়েন কাউন্টি বিমানবন্দরের একটি নির্জন রানওয়েতে নির্বিঘ্নেই নামে বিমানটি। তিন ‘সন্দেহভাজন’ যাত্রীকে আটকও করা হয় সঙ্গে সঙ্গে। আবার কিছু ক্ষণ পরে ছেড়েও দেওয়া হয়। কারণ বিমানের শৌচাগারে বেশি সময় কাটানোটা অন্তত মার্কিন আইনে অপরাধ নয়। তবে মার্কিন পুলিশের এক কর্তার কথায়, “এত যাত্রীর জীবন যেখানে জড়িত, সেখানে কোনও ঝুঁকি তো নেওয়া যায় না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.