|
|
|
|
প্রধান শিক্ষক, সম্পাদকের বিরুদ্ধে থানায় নালিশ |
তদন্তে বেনিয়ম পেল প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁতুড়ি |
সরেজমিন তদন্তে গিয়ে ভুয়ো ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা-সহ নানা অভিযোগে প্রধান শিক্ষক ও স্কুল-সম্পাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করল প্রশাসন ও শিক্ষা দফতর।
ঘটনাটি সাঁতুড়ি হাইস্কুলের। প্রধান শিক্ষক ধনঞ্জয় মাহাতো এবং পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা সিপিএমের সাঁতুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক মনবোধ মুর্মুকে বেনিয়মের অভিযোগে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত স্কুলে আটকে রেখেছিলেন। বুধবার রঘুনাথপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট জিগীষেন্দ্র সিংহ, সাঁতুড়ির বিডিও ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য এবং সহকারী স্কুল পরিদর্শক শিশিরকুমার সিংহ স্কুলে গিয়ে খাতাপত্র পরীক্ষা করেন। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, “তদন্তে স্কুল পরিচলনার কাজে বেশ কিছু বেনিয়ম ধরা পড়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে থানায় পৃথকভাবে প্রশাসন ও শিক্ষা দফতর অভিযোগ দায়ের করেছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন স্কুলের রেজিস্টার ও মিড-ডে মিলের নথি পরীক্ষা করার পরেই ভুয়ো ছাত্র ভর্তির কথা জানা যায়। ছাত্রছাত্রীদের বই কেনার টাকা দেওয়া নিয়েও বেনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। স্কুল পরিদর্শক শিশিরবাবু বলেন, “পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের প্রকৃত পড়ুয়ার সংখ্যা ২৫০ জন। অথচ, স্কুলের খাতায় আরও ১৫৬ জন ভুয়ো পড়ুয়ার নাম রয়েছে। ওই চারটি শ্রেণিতে দু’টি করে সেকশন আছে বলে খাতায় উল্লেখ থাকলেও শিক্ষকরা জানিয়েছেন, একটি করেই সেকশন রয়েছে। স্কুলে ছাত্রাবাস আছে বলে নথিতে উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে তা প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে চলে বলে জানতে পেরেছি। এই ব্যাপারগুলি বেআইনি।”
সাঁতুড়ির বিডিও ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, “অতিরিক্ত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি দেখিয়ে তাদের নামে মিড-ডে মিলের বাড়তি চাল ও টাকা নিয়ে দুর্নীতি করার সম্ভাবনা থেকে যায়। তফসিলি ছাত্র ভাতা, বই কেনার টাকার ক্ষেত্রেও একই সম্ভাবনা থাকে।” তিনি জানান, স্কুলের নথিপত্র আরও খতিয়ে দেখা অবশ্যই দরকার।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন তদন্তের জন্য স্কুল-সম্পাদক ও প্রধান শিক্ষককে আগাগোড়া স্কুলে থাকার আগাম নির্দেশ দেওয়া থাকলেও তাঁরা স্কুলে আসেননি। ফলে তদন্তে অনুপস্থিত থেকে অসহযোগিতা করার অভিযোগে সম্পাদককে আটক করার জন্য ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশ দেন। পুলিশ তাঁর সন্ধানে গিয়ে ফিরে এসে জানায়, তিনি বাড়িতে নেই। প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি। বস্তুত, ওই স্কুলের নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত ২ সেপ্টেম্বরও তৃণমূল স্কুলের ভিতরে প্রধান শিক্ষককে ঘেরাও করেছিল। বিডিও গিয়ে নথিপত্র আটক করে অফিসঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বিডিও জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রতিনিধি ওই সব নথি ও চাবি সোমবার জেলা স্কুল পরিদর্শককে দিতে গেলেও তিনি তা স্কুলের সম্পাদকের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলেন। অফিস খুলে গোপনে নথির ত্রুটি সংশোধন করার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার স্কুলে ফের বিক্ষোভ শুরু করে তৃণমূল। সাঁতুড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের অভিযোগের সত্যতা এ বার প্রশাসনও মেনে নিয়েছে। দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।” |
|
|
|
|
|