চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইয়ে আতঙ্কিত মানুষ
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে মিছিল বনগাঁয়
কের পর চুরি-ডাকাতি, কেপমারি, ইভটিজিং-এ জেরবার বনগাঁ শহর এবং সংলগ্ন এলাকার মানুষ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুললেন। পর পর কয়েকটি চুরি-ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ তুলে ক্ষুব্ধ স্বর্ণশিল্পী সমিতি বুধবার থেকে আন্দোলন শুরু করেছেন। এ দিন বনগাঁ শহরে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, পোস্টার নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল বের করেছিলেন স্বর্ণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত হাজার খানেক মানুষ। মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে তাঁরা পথসভা করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সমিতির রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। পরে মহকুমাশাসকের কাছে এবং বনগাঁ থানায় তাঁরা স্মারকলিপিও দেন।
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রসঙ্গে বনগাঁর এসডিপিও বিমলকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বনগাঁ থানার পুলিশি পরিকাঠামোয় ঘাটতি রয়েছে। তবু তার মধ্যেও আমরা যথাসাধ্য ব্যবস্থা নিয়েছি। কিছু ক্ষেত্রে সাফল্যও পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন ঘটনায় দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।’’
স্বর্ণশিল্পী সমিতির মিছিল বনগাঁয়। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসনের তরফে সমিতির তোলা অভিযোগগুলির সত্যতাও স্বীকার করা হয়েছে। মহকুমাশাসক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির তরফে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তার অনেকগুলি আগেই আমার কাছে এসেছিল। পুলিশকেও সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। এ বার বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসককে জানাব।”
মহকুমাশাসকের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর, রবিবার বনগাঁর বাটার মোড় এলাকায় একটি গয়নার দোকান থেকে দুষ্কৃতীরা আনুমানিক ১৭ লক্ষ টাকার সোনা-রূপোর গয়না চুরি করে পালিয়ে যায়। অথচ পুলিশ এখন ওই ঘটনার কোনও কিনারা করতে পারেনি। গ্রেফতার হয়নি কেউ। উদ্ধার হয়নি চুরি যাওয়া অলঙ্কারও। শুধু তাই নয়, এর কিছুদিন আগে বনগাঁয় একটি মোবাইলের দোকান থেকে কয়েক লক্ষ টাকার মোবাইল সেট চুরি হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রেও মালপত্র উদ্ধার হওয়া তো দূরের কথা, আজ পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। বাটার মোড়েই কিছুদিন আগে একটি ক্যাসেটের দোকানে ভাভঙচুরের ঘটনা ঘটে। লুঠ করা হয় টাকা, মোবাইল। আজও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ২০১০ সালের ২২ নভেম্বর বনগাঁতেই একটি গয়নার দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। প্রায় এক বছর হতে চললেও কিনারা হয়নি ওই চুরির ঘটনারও। বার বার এমন ঘটনা ঘটতে থাকলেও কেন পুলিশ কোনও কিনারা করতে পারছে না গোটা বনগাঁ শহর ও শহর লাগোয়া এলাকায় ঘুরছে সেই প্রশ্ন। পুলিশ ইচ্ছা করেই এ সব নিয়ে বেশি গা ঘামাচ্ছে না এমন অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ। আগের ঘটনা তো ছিলই। কিছুদিন আগে ফের সোনার দোকানে চুরির ঘটনায় পুলিশ এখনও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ বনগাঁর বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতি। সমিতির সম্পাদক বিনয় সিংহ বলেন, “বনগাঁ মহকুমার স্বর্ণশিল্পী ও ব্যবসায়ীরা ভীতসন্ত্রস্ত। দ্রুত চুরি যাওয়া গয়না উদ্ধার এবং দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” সমিতির আরও দাবি, গত ৬ মাসে বনগাঁয় অনন্ত ২৫টি কেপমারির ঘটনা ঘটেছে। স্কুলের সময়ে মেয়েদের স্কুলের সামনে প্রায়ই ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটছে। অনবতর চুরি যাচ্ছে সাইকেল, মোটর সাইকেল। রমরমিয়ে চলছে হেরোইনের ব্যবসা। হেরোইনখোরদের উৎপাতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। সমিতির সহ সম্পাদক দিলীপ মজুমদার বলেন, “মানুষ এমনই আতঙ্কে ভুগছেন যে অনেকে ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ সম্প্রতি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে কয়েকটি কেপমারির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।” তাঁর অভিযোগ, “পুলিশের একাংশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের আঁতাঁতের কারণেই এমনটা ঘটছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.