|
|
|
|
ওভালে বোলিং ওপেন করুক অশ্বিন |
দীপ দাশগুপ্ত |
রাত জেগে দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচটা দেখতে গিয়ে বেশ হতাশই হতে হল। খেলা দেখলে কে বলবে, মাত্র পাঁচ মাস আগে ভারতই ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন? টেস্ট সিরিজের দুঃস্বপ্নের কথায় যাচ্ছি না, একমাত্র টি-টোয়েন্টির হারটাও ছেড়ে দিলাম। কিন্তু ওয়ান ডে-তেও তো সেই একই গল্প। দুটো ম্যাচ হয়ে গেল, একটা পরিত্যক্ত, অন্যটায় হার। ওয়ান ডে সিরিজেও যদি হোয়াইটওয়াশ হয়, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সুনাম নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠবে। যে দুটো ওয়ান ডে হল, তাতে এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষে আলোর রেখা বলতে আজিঙ্ক রাহানে। চমৎকার টেম্পারামেন্ট। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ ভারতীয়দের মতো শুধু ফ্রন্টফুট নয়, ব্যাকফুটেও সমান স্বচ্ছন্দ। অহেতুক তাড়াহুড়ো নেই, যা খেলছিল সবই ক্রিকেটীয় শট। সহবাগ-গম্ভীর ফিরলে কী হবে বলা যায় না, তবে রাহানকে প্রথম দলের বাইরে রাখা কঠিন। |
|
কিন্তু সমস্যা হল, রাহানে বা রায়নার ব্যাটিং দিয়ে তো ম্যাচ জেতা যাচ্ছে না। ২৩ ওভারে ১৮৭ তুলেও কোনও ভাবে ইংল্যান্ডকে আটকানো গেল না। বাকি তিনটে ম্যাচ, ওভালে শুক্রবারের ম্যাচে হার মানেই এই সিরিজও জেতা যাবে না। সেটা যাতে না হয়, তার জন্য ধোনিকে খুব তাড়াতাড়ি কয়েকটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এক) নিজেকে ব্যাটিং অর্ডারে উপরে তুলে আনতেই হবে ক্যাপ্টেনকে। দু’নম্বর ওয়ান ডে-টায় ধোনি নেমেছিল ছয় নম্বরে। তখন মেরেকেটে তিন ওভার মতো বাকি। প্রতি বলে চালাতে হবে। সেটা তো ঝুঁকি, যে কোনও মুহূর্তে উইকেট দিতে হতে পারে। সেটাই হল। তিনটে ওয়ান ডে বাকি, ধোনি হয় চারে বা পাঁচে আসুক। যাতে অনেক বেশি বল খেলতে পারে। দ্বিতীয় ওয়ান ডে-টায় যেমন ভারতের ১৫ থেকে ২০ রান কম ছিল। ধোনি আর একটু আগে নামলে অন্য রকম কিছু হতেও পারত।
দুই) এখন আর এই সফরে কিছু হারানোর আছে বলে মনে হয় না। তা হলে কেন ঝাড়খণ্ডের ছেলে বরুণ অ্যারনকে খেলানো হবে না? প্রবীণ কুমার আর বিনয় কুমার, দু’জনেই একই ধরনের সুইং বোলার। বিনয় কুমারের বদলে অ্যারনকে নেওয়া হোক, মার খেলে খাবে। ওকে বলে দেওয়া দরকার, গতি যখন তোমার অস্ত্র, ওটাকে সম্বল করেই বল করো। জাহির খান না থাকা ভারতীয় বোলিংকে গোটা সিরিজেই একেবারে নখদন্তহীন লেগেছে। কোনও রকম বৈচিত্র্য নেই, এ-র পর বি, তারপর সি। অ্যারন দলে এসেছে স্রেফ ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করার জন্য। ওকে খেলানো দরকার।
তিন) বিশ্বকাপের সময় ফিল্ডারদের মধ্যে যে তাগিদটা ছিল, সেটা একেবারে অদৃশ্য। লম্বা সফরের অজুহাতটা মানা যাচ্ছে না, কারণ অধিকাংশ ক্রিকেটার তো ওয়ান ডে সিরিজে দেশ থেকে গিয়েছে। ফিল্ডিং আরও অনেক আঁটোসাঁটো হওয়া দরকার। সেটা কেন হচ্ছে না, তা নিয়ে ভাবতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে।
চার) দলের সঠিক কম্বিনেশনটায় সাত নম্বরে এক জন অলরাউন্ডার থাকলে ভাল হয়। রবীন্দ্র জাডেজা খারাপ ফর্মে নেই, ওর কথা ভাবা যেতে পারে। ওই জায়গায় যে খেলবে, তাকে অন্তত পাঁচটা ওভার ভাল বল করতে হবে। যেমন রায়না করছে। সাত নম্বরে নেমে মনোজ আগের ম্যাচে সাত বলে ১১ করেছে, কিন্তু সেটা দিয়ে ওকে বিচার করা ভুল। আরও দুটো সুযোগ ও পেতেই পারে।
পাঁচ) ওভালে শুক্রবার প্রবীণ কুমারের সঙ্গে অশ্বিনকে দিয়ে বোলিং ওপেন করাতে পারে ধোনি। ওপেনার কুক বাঁ হাতি, তার উপর অশ্বিনের শক্তিই হল ও পাওয়ার প্লে-র ওভারগুলোয় অনেক কম রান খরচ করে। ইংল্যান্ডের ব্যাটিংকে শুরুতেই ধাক্কা দেওয়ার একটা চাল হতে পারে অশ্বিন।
|
সাউদাম্পটনের স্কোর
ভারত |
পার্থিব ক কাইজওয়েটার বো অ্যান্ডারসন ২৮
রাহানে ক ও বো সোয়ান ৫৪
দ্রাবিড় ক অ্যান্ডারসন বো সোয়ান ৩২
কোহলি ক বেল বো সোয়ান ৯
রায়না ক স্টোকস বো ব্রেসনান ৪০
ধোনি ক বেল বো ব্রেসনান ৬
মনোজ ক বেল বো ব্রেসনান ১১
অশ্বিন রান আউট ১
প্রবীণ ন.আ. ০
অতিরিক্ত ৬
মোট (২৩ ওভারে) ১৮৭-৮
পতন: ৩০, ১০৯, ১২৫, ১৪৩, ১৬৪, ১৮২, ১৮৬, ১৮৭
বোলিং: ব্রেসনান ৪-০-৪৩-৩, অ্যান্ডারসন ৩-০-১১-১, ব্রড ৩-০-২৫-০, ডার্নবাখ ৫-০-৪৯-০, বোপারা ২-০-১৩-০,
সোয়ান ৫-০-৩৩-৩, পটেল ১-০-১১-০ |
ইংল্যান্ড |
কুক ন.আ. ৮০
কাইজওয়েটার এলবিডব্লিউ বিনয় ৪৬
বেল ক কোহলি বো অশ্বিন ২৫
বোপারা ক কোহলি বো অশ্বিন ২৪
পটেল ন.আ. ৯
অতিরিক্ত ৪
মোট (২২.১ ওভারে) ১৮৮-৩
পতন: ৬৭, ১০৫, ১৬৫
বোলিং: প্রবীণ ৪-০-৪১-০, বিনয় ৪.১-০-৩৩-১, অশ্বিন ৫-০-৪২-২, মুনাফ ৫-০-৩৫-০, কোহলি ৩-০-২২-০,
রায়না ১-০-১৩-০। |
|
|
|
|
|
|