কোচবিহারে ধর্মঘটে বাস মালিকেরা
আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তপ্ত আদালত চত্বর
বাস মালিকদের হয়ে কোনও আইনজীবী লড়ছেন না। এর জেরে উত্তপ্ত হল কোচবিহার কোর্ট চত্বর। মে মাসে মিনিবাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক আইনজীবীর। গণ্ডগোলের সূত্রপাত তখন থেকেই।
মঙ্গলবার দুপুরে বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে একদল আইনজীবীর ঢিল ছোড়াছুড়ি হয়। চলে ভাঙচুর। কোচবিহার শহরের কাছারি মোড় এলাকায় ওই গোলমালের জেরে অন্তত ১৫ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন আইনজীবীকে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ এবং র‌্যাফের জওয়ানরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। গোলমালে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ২০ জনকে।
ধৃতদের মুক্তির দাবিতে আজ, বুধবার থেকে জেলা জুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বেসরকারি পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ সমন্বয় কমিটি। পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ তুলে জেলা আদালতে পাল্টা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে কোচবিহার জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনও। জেলার বিভিন্ন মহকুমা আদালতের আইনজীবীদেরও ওই কর্মবিরতিতে সামিল হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজ্য বার কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অরুণ সরকার কোচবিহারে বলেন, “বার লাইব্রেরিতে হামলা কোনওমতেই বরদাস্ত করা যাবে না। যত দূর যেতে হয় যাব।”
আহত আইনজীবী। মঙ্গলবার হিমাংশুরঞ্জন দেবের তোলা ছবি।
কোচবিহারের ভারপ্রাপ্ত জেলাশাসক গোদালা কিরণকুমার বলেন, “গোলমালে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।” জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অশান্তির চেষ্টা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বাস মালিক এবং শ্রমিকদের মিছিলের অনুমতি ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত মে মাসের শেষে মিনিবাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় বিদ্যুৎ দাস নামে এক আইনজীবীর। পুলিশ ওই মিনিবাসটি আটক করে। বাস মালিকদের অভিযোগ, আইন মেনে বাস ছাড়াতে আদালতে যাওয়া হলে কোনও আইনজীবী ওকালতনামায় সই করতে রাজি হননি। বহু চেষ্টা করেও কোনও আইনজীবীর সাড়া না-পেয়ে এ দিন বাস মালিক ও শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ সমন্বয় কমিটি জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়। সেখান থেকে ফেরার পথে কাছারি মোড়ে আইনজীবীদের সঙ্গে গোলমাল বাধে।
কোচবিহার বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “ছক কষে বাস মালিক ও কর্মীরা আমাদের কার্যালয়ে হামলা করে আইনজীবীদের উপরে চড়াও হন। তার জেরে ১০ জন জখম হন।” অশোকবাবুর যুক্তি, “বাসের ধাক্কায় সহকর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদেই আমরা ওই মামলা নিইনি। বাস মালিকেরা বাইরের জেলা থেকে আইনজীবী এনে মামলা করতেই পারেন। সেটা না-করে বার অ্যাসোসিয়েশনে হামলা করে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা হয়।”
ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাস মালিক ও শ্রমিকদের সমন্বয় কমিটির কর্মকর্তারা। কমিটির নেতা অজিত ঘোষ, সঞ্জিত পণ্ডিতদের পাল্টা অভিযোগ, জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার পথে তাঁদের ঢিল ছোড়া হয়। সেখান থেকে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। অজিতবাবু বলেন, “ঢিলের আঘাতে আমাদের ৫ জন জখম হন। তার পরেও পুলিশ আমাদের ২০ জনকে গ্রেফতার করে। সেই জন্যই জেলা জুড়ে ধমর্ঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। বাইরের জেলা থেকেও তো আইনজীবী আনতে দেওয়া হচ্ছে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.