কেশপুরে ‘সন্ত্রাস’ চলছেই। ক’দিন আগেই এখানে দুই সিপিএম কর্মীকে সামাজিক ভাবে বয়কট করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ বার আরও এক সিপিএম কর্মীকে বয়কটের পাশাপাশি তাঁর পরিবারের কেউ পানীয় জল সংগ্রহও করতে পারবে না-বলেও ফতোয়া জারির অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। সুবিচার পেতে জেলা পুলিশ-প্রশাসন, এমনকী জেলা তৃণমূল নেতৃত্বেরও দ্বারস্থ হয়েছেন ওই সিপিএম কর্মী। তাঁর কথায়, “জল তোলা যাবে না। কারও সঙ্গে কথা বলা যাবে না। এই পরিস্থিতিতে আমারা কার্যত ঘরবন্দি।”
মঙ্গলবারই মেদিনীপুরে এসে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেন শুভঙ্কর সিংহ নামে কেশপুরের কলাগ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদচক গ্রামের ওই বাসিন্দা। শুভঙ্করবাবু সিপিএমের স্থানীয় শাখা কমিটির সম্পাদক। অভিযোগ শুনে নড়েচড়ে বসেছেন তৃণমূল নেতৃত্বও। দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি চিত্ত গড়াই বলেন, “অভিযোগ সত্যি হলে দলের লোকজনের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। এই অন্যায় কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।”
রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই কেশপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্রমাগত জুলুম-সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে। আগেও স্থানীয় কর্মীদের সতর্ক করেছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলবিরোধী কাজ করলে শাস্তির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। ক’দিন আগে দুই সিপিএম কর্মীকে বয়কটের ঘটনা সামনে আসায় জেলা তৃণমূলের অন্দরেই শোরগোল পড়ে। |
হয়েছে। চাষাবাদ বন্ধ হয়েছে। রেশন দোকানে যাওয়াও ‘নিষিদ্ধ’। গ্রামের কোনও অনুষ্ঠানে পরিবারের কেউ যোগ দিতে পারছেন না। এই সিপিএম কর্মীর স্ত্রী গ্রামেরই প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিলের রান্না করেন। এখন সেখানেও যেতে পারছেন না। সর্বশেষ, দু’সপ্তাহ হল জল-সংগ্রহও বন্ধ। শুভঙ্করবাবুর পরিবারের কেউ গ্রামের নলকূপ থেকে জল নিতে পারবেন না বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে, এখন পুকুরের জলেই দৈনন্দিন কাজ চলছে। অভিযোগ, শুভঙ্করবাবুর ছেলে, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মণিকাঞ্চনকে গ্রামের ১৮০টি বাড়িতে পাঠিয়ে বৈঠক ডাকতেও বাধ্য করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। অবশ্য সেই বৈঠকেও জট কাটেনি। তৃণমূলের ‘মাতব্বরেরা’ জানান, ২৪ হাজার টাকা জরিমানা দিতেই হবে। এই নিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন শুভঙ্করবাবু। মেদিনীপুরে এসে জেলাশাসকের কাছেও অভিযোগ জানান। তবে পরিস্থিতি পাল্টায়নি। শুভঙ্করবাবুর কথায়, “২০-২২ বছর আগে গ্রামে জমি-সংক্রান্ত এক বিবাদ বেধেছিল। ওই ঘটনায় আমাকে দুষে ২৪ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |