|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
বস্তিবাসী কলকাতা |
কলকাতায় বস্তিবাসী অনগ্রসর মানুষরা কেমন আছেন? দু-বেলা দু-মুঠো খাদ্যের জোগান আনতে পারছেন তো? এই প্রশ্ন মাথায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম কলকাতার মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকায়। গার্ডেনরিচ, ট্যাংরা, তিলজলা ও নারকেলডাঙা এলাকায় ৯৫ শতাংশ মানুষই বস্তিবাসী। ওখানে সকলের বড় সমস্যা হল বাসস্থানের। তাঁদের পর্যাপ্ত বাসস্থান তো নেই, সঙ্গে আরও নেই পানীয় জলের স্থায়ী ব্যবস্থা। তাঁদের অল্প পরিসর জায়গাতেই থাকা, খাওয়া, রান্না করা সকল কাজ করতে হয়। ওই জায়গাতেই কর্মস্থল বানিয়ে কাজ করতে হয় রুটি-রুজির জন্য।
বস্তিবাসী মুসলিমদের মধ্যে বেশির ভাগই অবাঙালি। তাঁরা হস্তশিল্পের দক্ষ শ্রমিক। ছোট ছেলেমেয়েরা প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগটাও নিতে পারছেন না। কারণ, অকল্পনীয় দারিদ্র। সঙ্গে সচেতনতার অভাব। অপুষ্টিতে ভুগছে ওরা, ওদের করুণ মুখগুলো দেখলে কঠিন হৃদয়ও গলে যায়। বেশির ভাগ বস্তিবাসী চর্মশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। জুতো, চামড়ার ব্যাগ ও নানান নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করছেন তাঁরা। কেউ কেউ রিকশা ও ভ্যান চালিয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন। এ ছাড়াও কেউ কেউ হকারি করছেন। কেউ রাজমিস্ত্রি ও ছুতোর মিস্ত্রির কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। অনেকে বিড়িও বাঁধছেন। বিভিন্ন পেশায় তাঁরা যুক্ত হয়ে সংগ্রাম করেই বেঁচে আছেন। |
|
এই বাঁচার মধ্যে কোনও আনন্দ নেই। উৎসবের দিনগুলোতেও কাজে বার হতে হয়। কেউ কেউ তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠান কিন্তু ঘরে পড়ার কোনও পরিবেশ নেই। যে দিকে তাকানো যায় শুধু চটাং চটাং আওয়াজ। জুতো তৈরি থেকে শুরু করে সব রকমের চামড়ার কাজ চলছে সেখানে। দম বন্ধ-করা পরিবেশ। বই বাঁধানোর কাজের দক্ষ শ্রমিক তাঁরাই। আবার গার্ডেনরিচের মানুষের দর্জির কাজ ও জামাকাপড় তৈরির কাজেও সুনাম রয়েছে যথেষ্ট। ট্যাংরায় চর্মশিল্পের জন্য তো ওই এলাকা একদম নরক। ওই এলাকায় ঢুকলে বিকট গন্ধে থাকতে পারা যায় না।
অনেকের থাকার জায়গা নেই। সারা দিন কাজ করে ফুটপাথে শুয়ে থাকেন। বর্ষার সময়ে রাতে ঘুমোতেই পারেন না। যার ফলে, দিনেও ঠিকঠাক কাজ করতে পারেন না। অনেকের দিনে স্বল্প আয় হয়। হাজারো বিপদ ও সমস্যার মধ্য দিয়ে তাঁদের অকল্পনীয় জীবন অতিবাহিত হচ্ছে।
অন্ন ও বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে বিভিন্ন সরকারি ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হয়ে আছেন। এলাকার কিছু দুষ্ট মানুষের অত্যাচারে তাঁরা অতিষ্ঠ।
স্বাধীনতার এত বছর পরেও তাঁদের প্রতি রাজ্য সরকার উদাসীন। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে এই সমস্যার সমাধান জরুরি। প্রতি সপ্তাহে একদিন রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মাননীয় ফিরাদ হাকিম ও জনপ্রতিনিধিরা একটা টিম করে যদি তাঁদের অভাব-অভিযোগ শোনেন ও তার প্রতিকারে এগিয়ে আসেন, তা হলে তাঁরা একটু আশার আলো দেখতে পাবেন। সরকার গঙ্গার ধার সাজাতে উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু ওই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের গভীর সমস্যার সমাধানে সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। |
ফারুক আহমেদ। ঘটকপুকুর, ভাঙড়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
|
জনগণের অংশগ্রহণ |
আনন্দবাজার পত্রিকার ‘পত্রিকা’ ক্রোড়পত্রে গৌতম চক্রবর্তীর ‘প্রমোদে ঢালিয়া দিনু’ (২১-৮) শীর্ষক নিবন্ধে শেক্সপিয়র উৎসবে জনগণের অংশগ্রহণ সম্বন্ধে যা বলেছেন, তা স্পেনের মিগেল দে সেরভানতেস-এর জন্মোৎসব সম্পর্কেও প্রযোজ্য। সপ্তাহের ছুটির দিন বিভিন্ন বয়সের মানুষ সমবেত হয়ে ‘দন কিহোতে’-র অংশবিশেষ পাঠ করতে পারেন। অন্ধ মানুষদেরও পড়ার ব্যবস্থা থাকে। স্বভাবতই কিশোর ও বৃদ্ধদের নির্বাচিত অংশগুলো এক নাও হতে পারে।
এখানে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে ভাল অপ্রকাশিত লেখা কিংবা তাঁর রচনার অংশ পড়ার অধিকার আমাদের নেই। এটি সেলিব্রিটিদের মুখনিঃসৃত হয়ে আমাদের কানে প্রবেশ করে। প্রসঙ্গত, সেরভানতেস ও শেক্সপিয়র সমকালীন। ওঁদের মৃত্যুদিনও এক। |
তরুণ ঘটক। কলকাতা-৩১ |
|
|
|
|
|