জাপানি এনসেফ্যালাইটিস শিলচরেও থাবা বসিয়েছে। ১২ দিনের জ্বরে মারা গিয়েছেন হীরকময় সেন নামে এক কারাকর্মী। এর জেরে গোটা বরাক জুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা এ রোগ ছড়ানোর জন্য দায়ী করছেন ডাস্টবিন উপচে পড়া জঞ্জাল এবং নালা-নর্দমায় জল জমে থাকাকেই। এর পরই নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ আজ বিভিন্ন সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত জঞ্জাল সাফাইয়ের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। পুরপ্রধান সুস্মিতা দেব অবশ্য ক’দিন আগে শহরের নাগরিকদের এক সভায় ডেকে এ ব্যাপারে তাঁকে পরামর্শ দিতে বলেন। জঞ্জাল নিয়ে তিনিও বিব্রত বলে প্রকাশ্য সভায় জানান সুস্মিতা। পরে পুরবোর্ডের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ ও নর্দমা সাফাইয়ের এক দিন একটি ইউনিট থাকলেও এখন দুটি কাজ দুটি পৃথক ইউনিট দেখভাল করবে। তাঁর আশা, এতে সমস্যা মিটবে।
কাছাড়ে জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যালেরিয়া অফিসার সুজয় বর্মন জানান, বরাকে এই প্রথম জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণু ধরা পড়ল। এখানে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ম্যালেরিয়া পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলে জাপানিজ এনসেফ্যালাইটিস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে ৫৮ বছর বয়সী হীরকময় সেনের রক্তের নমুনা গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট আসে। কিন্তু ধরা পড়লে কী হবে? শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ভাস্কর নাথ জানান, এই রোগের ভ্যাকসিন অসমের অন্যান্য জায়গায় থাকলেও শিলচরে দেওয়া হয়নি। সুজয়বাবুও একই ধরনের অসহায়তার কথা শোনান। এই রোগ ধরা পড়ার পর তাঁদের কী করণীয়, সে প্রশিক্ষণ শিলচরের ম্যালেরিয়া অফিসের ছোট বড় কোনও কর্মীকে দেওয়া হয়নি। তবু এটা যেহেতু মশাবাহিত রোগ সুজয়বাবুর কথায়, জেল কোয়ার্টার-সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ফিভার সার্ভে করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, কারও ম্যালেরিয়া নেই। এতে তাঁরা মোটামুটি নিশ্চিত, জাপানিজ এনসেফ্যালাইটিসে কেউ আক্রান্ত নন। পরে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় ডিডিটি ছড়ানো হয়েছে। স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলিতে ফগিং করা হয়েছে বলে জানান ম্যালেরিয়া ইন্সপেক্টর সামসুল হক মজুমদার।
এ দিকে, নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ শহরের নিয়মিত সাফাইয়ের দাবিতে ৬ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পুরসভার সামনে ধর্নায় বসবে। |