চা-শ্রমিক
মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ফের বৈঠক আজ
বিবারের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মেলেনি সমাধানসূত্র। চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে আজ, সোমবার ফের হবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক।
রাজ্যের তিন মন্ত্রী এ দিন বিকেলে মহাকরণের রোটান্ডায় মালিক ও শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন। ঠিক হয়, সোমবার ফের এ নিয়ে বৈঠক হবে। মঙ্গল ও বুধবার কলকাতায় বৈঠক হবে বাগান-শ্রমিকদের বোনাস নিয়ে।
বৈঠকের পরে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবকে পাশে নিয়ে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “চা-শিল্পকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সার্বিক ভাবে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো সব পক্ষের সঙ্গে বিশদে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা ইতিবাচক। তবে, সোমবার সকাল ১১টায় শ্রম কমিশনারের ঘরে ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। শ্রমসচিব ওই বৈঠকে থাকবেন। প্রয়োজনে আমরা তিন মন্ত্রীও ফের বৈঠকে বসব।”
দার্জিলিং পাহাড় বাদে রাজ্যের অন্যত্র চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ন্যূনতম ৬৭.৫০ টাকা। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলনের জেরে সম্প্রতি দার্জিলিঙের বিভিন্ন চা-বাগানে শ্রমিকেরা দৈনিক ৯০ টাকা করে মজুরি পান। আরএসপি-র শ্রমিক সংগঠন ইউটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি বিনয় চক্রবর্তীর ক্ষোভ, “সরকারকে বাদ দিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা-প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন মালিকদের সঙ্গে কেবল পাহাড়ের চা-বাগানের জন্য ওই চুক্তি করে। অন্য চা-বাগানগুলির শ্রমিকদের মজুরি এখনও বাড়েনি।”এই ‘পরিস্থিতি’তেই অন্য চা-বাগানগুলিতে অসন্তোষের সূত্রপাত। পাহাড় বাদে অন্য চা-বাগানগুলির শ্রমিকদের তরফে দৈনিক ১৩০ টাকা মজুরি দাবি করা হয়। মালিকপক্ষ ৯০ টাকার বেশি দিতে রাজি হননি। চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে বার ছ’য়েক বৈঠক হয়ে গিয়েছে।
মহাকরণ সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে শ্রমিকদের ৩৭টি সংগঠন এবং মালিকদের ‘কনসাল্টেটিভ কমিটি অব প্ল্যান্টার্স ফোরামের’(সিসিপিএ) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাগান মালিকেরা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বছরে ৮ টাকা হারে তিন বছরে ২৪ টাকা বাড়াতে রাজি হন। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এক ধাপে শ্রমিকদের বেশি মজুরি দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন। শেষ পর্যন্ত কোন পর্যায়ে কত টাকা বাড়বে, তা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি।
বৈঠকে সমাধান-সূত্র না মিললেও আশাবাদী শুনিয়েছে মালিক এবং শ্রমিকদু’তরফকেই। আরএসপি-র শ্রমিক নেতা গোপাল প্রধানের কথায়, “শিল্পমন্ত্রী মালিকদের এক ধাপে বেতন দেওয়ার জন্য বলেছেন। শ্রমিকেরা যাতে ভাল বেতন পান সে বিষয়ে পদক্ষেপ করতে তিনি মালিকদের আহ্বানও করেন। সোমবার আমরা ফের আলোচনায় বসব।” আইএনটিইউসি-র তরফে অলোক চক্রবর্তী বলেন, “আশা করছি, শীঘ্রই সমস্যার জট কাটবে।” পক্ষান্তরে, বাগান মালিকদের যৌথ সংগঠন সিসিপিএ-র সাধারণ সচিব মনোজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, “এ দিন প্রাথমিক কিছু কথাবার্তা হয়েছে। সোমবার পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হবে।”
প্রশাসন সূত্রের জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে শ্রমিকদের তরফে অভিযোগ করা হয়, বিভিন্ন চা বাগানের মালিক শ্রমিকদের প্রভিডেন্ড ফান্ডের (পিএফ) ১২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সে ব্যাপারে অভিযোগ হলেও কেউ গ্রেফতার হননি। এ ব্যাপারে ‘পদক্ষেপ করায়’ বিগত বাম-সরকারের বিরুদ্ধে ‘অনীহা’র অভিযোগও তোলেন শ্রমিক-প্রতিনিধিদের একাংশ। তবে শিল্পমন্ত্রী পরে বলেন, “আমরা পিএফ এবং শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দিতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের অনুরোধ জানিয়েছি। তাঁরা যাতে সদস্যদের বুঝিয়ে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দেন, তা নিয়েও অনুরোধ জানিয়েছি। এ ব্যাপারে অনীহা যেন না থাকে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.