জিটিএ বিল
রাজ্য সরকার এবং মোর্চার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ অশোকের
গোর্খা আঞ্চলিক প্রশাসন (জিটিএ) বিল পাশ করে রাজ্য সরকার পাহাড়ের মানুষের সঙ্গে ‘প্রতারণা করল’ বলে অভিযোগ করলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। একই অভিযোগের আঙুল তিনি তুলেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্বের দিকেও। যদিও মোর্চা এবং তৃণমূল নেতৃত্ব এই অভিযোগের পিছনে অশোকবাবুর ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
শুক্রবার বিধানসভায় পাশ হয় ওই বিল। রবিবার শিলিগুড়িতে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে বিল-প্রসঙ্গে ওই অভিযোগ করেন প্রবীণ সিপিএম নেতা অশোকবাবু। তাঁর দাবি, বামেরা রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার সময় পাহাড়কে ষষ্ঠ তফসিলের অন্তভুর্ক্ত করা বা স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার আলোচনা যে পর্যায়ে এগিয়ে গিয়েছিল, জিটিএ বিলে পাহাড়ের বাসিন্দাদের তা থেকে ‘অনেক কম’ ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, ‘রেগুলেশন’ তৈরির যে ক্ষমতা এ রাজ্যে পুরসভাগুলি পায়, ‘সেটুকু’ও থাকছে না গোর্খা আঞ্চলিক প্রশাসনের হাতে। অশোকবাবুর অভিযোগ, “রাজ্য সরকারের পাশাপাশি, জিটিএ বিল মেনে নিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও পাহাড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রতারণা করল।”এ প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের প্রতিক্রিয়া, “আগে অশোকবাবু বলেছিলেন, জিটিএ চুক্তি বাংলার মানুষের পক্ষে দুর্ভাগ্যের। ওই চুক্তি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দেবে। এখন উল্টে বলছেন, জিটিএ বিল পাশ করে পাহাড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। নানা প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা জিটিএ-কে দেওয়ার কথা বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। তা ছাড়া, অনেক বিষয়ে ক্ষমতাও থাকবে জিটিএ-র হাতে।” ওই তৃণমূল নেতার সংযোজন, “বিধানসভায় বিল পাশের সময় অশোকবাবুদের প্রতিনিধি তথা বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ছিলেন।তিনিও বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো এবং কয়েকটি সংশোধনীর জন্য বলা ছাড়া, বাকিটা মেনেছেন।” গৌতমবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “আসলে অশোকবাবু পুরো বিষয়টি না বুঝেই মন্তব্য করছেন। এলাকায় গোলমাল পাকানো, অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। আগুন নিয়ে খেলছেন।”
পক্ষান্তরে মোর্চার বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রীর প্রতিক্রিয়া, “পাহাড়ের মানুষের স্বার্থের কথা যদি অশোকবাবুরা ভাবতেন, তা হলে এত দিন ক্ষমতায় থেকেও সে ব্যাপারে কিছু করতে পারলেন না কেন? ওঁরা যে দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় ছিলেন, সে সময় পাহাড়ের উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়েছে। অশোকবাবুরা সুভাষ ঘিসিংয়ের সঙ্গে ষষ্ঠ তফসিল চুক্তি করছিলেন, যিনি জনগণের প্রতিনিধি নন। পাহাড়ের গণতন্ত্রকে অশোকবাবুরা ধংস করতে চেয়েছিলেন। এখনও বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছেন।” যদিও অশোকবাবুর দাবি, “বিলটা খুঁটিয়ে দেখেছি। দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল আইনের নকল বলা যেতে পারে। হুবহু নকল করায় জিটিএ বিলে অনেক ভুলভ্রান্তি রয়ে গিয়েছে, যা পরবর্তীতে জটিলতা সৃষ্টি করবে।” সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকারকে পাশে বসিয়ে এ দিন অশোকবাবু বলেছেন, “আলাদা রাজ্য এবং বাড়তি এলাকা--এই দু’টি বিষয়কে বাদ রেখে আইন, প্রশাসন এবং আর্থিক দিয়ে অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ষষ্ঠ তফসিলে বা স্বায়ত্তশাসনের ক্ষেত্রে।” প্রাক্তন মন্ত্রীর অভিযোগ, “এখন জিটিএ-কে শুধু সিদ্ধান্ত ‘এগ্জিকিউট’ (কার্যকর) করার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। অথচ, স্বশাসিত পর্ষদের ক্ষেত্রে আমরা বলেছিলাম, পাহাড়ে পরিকল্পনা এবং উন্নয়নে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে রাজ্য সরকার নয়, ‘প্ল্যানিং কমিশন’ চূড়ান্ত করবে।” তাঁর ‘কটাক্ষ’, “বাস্তবে ২০০ কোটি টাকার বিনিময়ে পাহাড়বাসীর স্বার্থকে বিসর্জন দেওয়া হল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.