পুজোর মুখে ফের চুরি বনগাঁ শহরে। এ বার একেবারে শহরের প্রাণকেন্দ্র বাটার মোড়ের একটি সোনার দোকানের দেওয়াল ভেঙে, সাটার ও গ্রিল কেটে কয়েক লক্ষ টাকার সোনা-রুপোর গয়না নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। রবিবার সকালে স্থানীয় এক মিষ্টির দোকানের মালিকের নজরে আসে ওই সোনার দোকানের দেওয়াল ভাঙা। খবর পেয়ে সোনার দোকানের মালিক তপন দত্ত ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাস্থলে আসেন এসডিপিও (বনগাঁ) বিমলকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়। তদন্তে সাহায্য নেওয়া হয় সিআইডি-র।
এসডিপিও বলেন, “চুরির ঘটনার তদন্তে সাহায্যের জন্য সিআইডি এসেছিল। ওই দোকানে আঙুলের ছাপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই দুষ্কৃতীদের ধরা সম্ভব হবে।”
এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে। উদ্বিগ্ন মহকুমা চেম্বার অব কমার্স। সংগঠনের সহ-সম্পাদক দিলীপ মজুমদার বলেন, “বাটার মোড়ের মতো এলাকায় এ ভাবে চুরি হবে ভাবাই যায় না। এর আগেও শহরে একাধিক দোকানে চুরি হয়েছে। কিন্তু দুষ্কৃতীদের পুলিশ ধরতে পারেনি। আমরা পুলিশের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছি।” |
ওই গয়নার দোকানের পাশেই রয়েছে একটি কাপড়ের দোকান। তার মালিক সুশান্ত সাধুখাঁ বলেন, “শনিবার রাত ১২টায় বেচাকেনা শেষ হয় আমাদের। দোকানের মালপত্র গুছিয়ে বাড়ি ফিরি রাত ১টা নাগাদ। তার পরেই ওই ঘটনা ঘটে থাকবে। আমরাও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।”
বস্তুত, কয়েক মাস ধরেই বনগাঁ শহর এবং পাশ্বর্বর্তী এলাকায় চুরি-ডাকাতি, ইভটিজিং, খুন-সহ অপরাধমূলক কাজকর্ম বাড়ছে। শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ নিষ্ক্রিয়। শুক্রবার মধ্য জয়ন্তীপুরে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন পেট্রাপোলের এক বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কারবারি। বাংলাদেশের দিকে চলে যাওয়ার সময়ে দুষ্কৃতীরা এক বিএসএফ জওয়ানকে কোপায়। সেই ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কয়েক মাস আগে বনগাঁ কোর্ট রোডে একটি ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জামের দোকানে, তার পরে বিচুলিহাটা এলাকায় একটি গয়নার দোকান, মতিগঞ্জে একটি মোবাইল ফোনের দোকানে চুরি হয়। কিছু দিন আগে আংড়াইল এবং সুটিয়া এলাকায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বিএসএফ জওয়ানেরা। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, রাখালদাস সেতু এবং রায়ব্রিজে ইভটিজিং প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। বেড়েছে চোরাপথে গরু পাচার এবং মানুষ পারাপারও। এতে ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে। |
বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক গোপাল শেঠ বলেন, “রোজই বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা চোরাচালানের জন্য বনগাঁয় ঢুকছে। প্রতিবাদ করলে গ্রামবাসীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। ঘটনার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।” পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসও।
এসডিপিও-র দাবি, “সীমান্ত থেকে ৫ কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি চালায় বিএসএফ। বাকি এলাকায় পুলিশ নিয়মিত নজরদারি চালায়। বিভিন্ন চুরির ঘটনার তদন্ত চলছে।”
|