|
|
|
|
বানভাসি সুতি বাঁচাতে নয়া বাঁধের পরিকল্পনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
প্রতি বছর বন্যার সঙ্গে জুঝতে সুতিতে নতুন বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে সেচ দফতর। ওই দফতরের সহকারী বাস্তুকার জ্যোতির্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রায় ১০ ফুট উঁচু ওই বাঁধ তৈরির কাজে বর্ষার পরেই হাত দিতে চলেছেন তাঁরা। খরচ হবে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা।
সুতির বীরভূম লাগোয়া বহুতলিতে ওই বাঁধ তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে। উদ্দেশ্য ঝাড়খন্ড থেকে নেমে আসা বিভিন্ন নদীর জল কিছুটা সময় ধরে রাখা। ওই বাড়তি সময়ে সুতি এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের ‘গুছিয়ে’ নেওয়ার সময় পাবেন বলে সেচ কর্তারা মনে করছেন। জ্যোতির্ময়বাবু বলেন, “অজগড়পাড়া, পাঁচগাছি, গাইঘাটায় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। যেগুলি অনুমোদনের অপেক্ষায়.” তিনি মনে করেন এর ফলে বন্যাপ্রবণ এলাকায় জল ঢোকার ক্ষেত্রে অনেকটাই রাশ টানা যাবে।
এ বছর জুন মাসেই এক বার বানভাসি হয়েছিল সুতির গ্রামগুলি। এর পর জুলাই-এর শেষ সপ্তাহ থেকে নিরবিচ্ছিন্ন বৃষ্টি ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সুতির দু’টি ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বন্যা প্রতি বছরের সমস্যা।
সেচ দফতরের এক কর্তা বলেন, “সুতিতে বন্যার কারণ অতিবর্ষণ, এই সরলীকরণটি ঠিক নয়। ২০০৪ সালের সুতির বন্যার কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে সেচ দফতর যে রিপোর্ট তেরি করেছিল তাতে স্পষ্টই বলা হয়েছিল, বাঁশলৈ ও পাগলা নদীর জলস্ফীতি প্রতি বছর ওই এলাকায় বন্যা বয়ে আনছে।” ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই নদী দু’টি বীরভূম ছুঁয়ে সুতি এলাকায় নেমে এসেছে। তারপর কার্যত এক সঙ্গে মিশে প্রায় ৩০ বর্গ কিলেমিটার জায়গা জুড়ে তৈরি করেছে বংশবাটী বিল। সেখানে জল নিয়ন্ত্রণের জন্য দু’টি লক গেটও রয়েছে। কিন্তু সেই লক গেট দীর্ঘ দিন ধরে কার্যত অকেজো। পাহাড়ি পথ বেয়ে ওই দুই নদীর বয়ে আনা পলি, আবর্জনায় বিলের গভীরতাও কমে গিয়েছে। ফলে জল ধারণ ক্ষমতা ক্রমশ কমছে বংশবাটী বিলের। সামান্য বৃষ্টিতেই পাগলা ও বাঁশলৈ-এর জল এসে বিলে পড়লেই তা উপচে পড়ছে।
সেচ দফতরের প্রতিরোধ শাখার সহকারী বাস্তুকার মানসরঞ্জন গণ বলেন, “ওই লক গেট দু’টিকে মেরামত করা দরকার। সেই সঙ্গে নদী দু’টির প্রবেশ পথে দু’টি আলাদা লক গেট করে নদীর জল সরাসরি ভাগীরথীতে নিয়ে গিয়ে ফেলার ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন। সুতিকে বাঁচানোর এ’টাই উপায়।” সুতির বিধায়ক কংগ্রেসের ইমানি বিশ্বাস এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। মানসবাবু জানান, এ ব্যাপারে ঝাড়খন্ড সরকারের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকের উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি। কিন্তু কবে? ততদিন যে সুতির বানভাসি চেহারার বিশেষ পরিবর্তন হবে না, তা জোর দিয়েই বলা যায়। |
|
|
|
|
|