সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলেছে অনেক কিছুই। শুধু হাল ফেরেনি ঘাটালের বাজারগুলির। রাস্তা দখল করে বাজারে বসার প্রবণতা বেড়েই চলছে। সঙ্কীর্ণ পথে পা ফেলাই দায়। তীব্র যানযটে তীব্র ভোগান্তি আর নিত্য দুর্ঘটনায় নাজেহাল ঘাটাল মহকুমার বাসিন্দারা। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন সংগঠন প্রশাসনের নানা মহলে দরবার করেছে। আন্দোলনও হয়েছে বহু বার। কিন্তু রাস্তার উপরে বাজার বসছে আগের মতোই। উল্টে তার সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রোড, ঘাটাল-পাঁশকুড়া এবং ঘাটাল-মেদিনীপুর রাস্তার উপর মোট ১২টি বাজার বসে। এর মধ্যে দাসপুরেই সবচেয়ে বেশি বাজার বসেদাসপুর, গৌরা, সোনামুই, বেলতলা, টালিভাটা, রাজনগর, হরিরামপুর, নাড়াজোল এলাকায়। ঘাটালের নবগ্রাম, রানির বাজার প্রভৃতি এলাকাতেও বাজার বসার ফলে রাস্তাগুলিতে ব্যাপক যানযটের সৃষ্টি হয়। অথচ, সড়কগুলি হয়ে প্রতি দিন শতাধিক স্থানীয় ও দূরপাল্লার বাস-লরি চলাচল করে। রাস্তা দখল করে বাজার বসার ফলে অত্যন্ত ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে হয়। |
এ ছাড়া মাঝে-মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে। গত পাঁচ বছরে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভাবে। দুর্ঘটনায় আহতও হয়েছেন অনেকে। ঘাটালের সিআই অসিত সামন্ত বলেন, “আমরা ব্যবসায়ীদের বহু বার সতর্ক করেছি। কিন্তু লাভ হয়নি। স্থানীয় পঞ্চায়েত-প্রশাসনকেই উদ্যোগী হতে হবে।” সমস্যার কথা স্বীকার করে দাসপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ব্যোমকেশ সামন্ত বলেন, “জমির অভাবে বিকল্প বাজারের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তবে দ্রুত দাসপুর শহরের বাজার অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্য বাজারগুলি সরানোর জন্য বিডিও, মহকুমাশাসক ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনা চলছে।” ঘাটালে রাস্তা থেকে সরিয়ে বিকল্প জায়গায় স্থায়ী বাজারের বন্দোবস্ত করার দাবি দীর্ঘ দিনের। তা সত্ত্বেও এই সমস্যার কোনও সমাধান না হওয়ার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করছেন ঘাটাল মহকুমার বাসিন্দারা। ঘাটালের মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী অবশ্য বলেন, “পুজোর পরেই এই নিয়ে অভিযান চালানো হবে।” পূর্ত বিভাগের সহকারি বাস্তুকার লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল বলেন, “আমরা বহু বার লিখিত চিঠি দিয়ে রাস্তা দখল করে ব্যবসা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি ব্যবসায়ীদের। কিন্তু লাভ হয়নি। তাই এ বার কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।” |