ভুষিমাল দোকানে ত্রাণের চাল পাচারের ঘটনায় অভিযুক্ত ঘাটাল পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর গণেশ বড়দোলইকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন এলাকার বাসিন্দারা। শনিবার ঘাটাল শহরে নাগরিক কমিটির নাম দিয়ে দেওয়ালে-দেওয়ালে পোস্টার সাঁটিয়েছেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। একই দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে সিপিএমও। এ দিকে শুক্রবারের ওই ঘটনায় ধৃত ভুষিমাল দোকান মালিক বনমালী সামন্তকে শনিবার ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বনমালীবাবুকে জেরা করে কাউন্সিলর ছাড়াও ওই ওয়ার্ড কমিটির বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত চলছে। ঘাটালের সিআই অসিত সামন্ত বলেন, “তদন্তে যাদের নাম উঠে আসবে তাদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হবে।” যদিও এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয়। তিন দিন পরেও কাউন্সিলর-সহ ঘটনায় যুক্ত বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। সিপিএমের ঘাটাল জোনাল কমিটির সম্পাদক অশোক সাঁতরা বলেন, “চাল বিক্রির জন্যই যে পাচার হচ্ছিল, তা দোকান মালিক স্বীকার করেছেন। কাউন্সিলরের নির্দেশেই চাল রেখেছিলেন বলে সরকারি আধিকারিক ও পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন তিনি। তা সত্ত্বেও মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ-প্রশাসন গড়িমসি করছে। আমরা দলের পক্ষ থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
এ দিকে, চাল পাচার নিয়ে ঘাটাল শহরে আলোড়ন পড়ায় অস্বস্তিতে রয়েছে তৃণমূল। উল্লেখ্য, জিইউসি-র হয়ে পুরভোটে গণেশবাবু লড়লেও পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। গোডাউনের ছাদ থেকে জল পড়ার জন্য চাল সরানো হয়েছিল বলে তৃণমূল দাবি করলেও এলাকার বাসিন্দারা তা মানতে নারাজ। বাসিন্দাদের বক্তব্য, বৃষ্টির জল পড়ার মতো অবস্থায় যে গোডাউনটি নেই, তা প্রশাসন তদন্ত করলেই জানতে পারবে। অন্য দিকে সিপিএমের বক্তব্য, বৃষ্টির জন্যই যদি বস্তাগুলি সরানো হয়, তা হলে বাকি ৯ বস্তা চাল কেন গোডাউনেই রয়ে গেল। এছাড়াও রাতের অন্ধকারেই বা কেন ত্রাণের চাল সরানো হল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূল নেতা তথা ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, “চাল পাচারের অভিযোগ ঠিক নয়। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই সব রটানো হচ্ছে। বৃষ্টির জল থেকে চালের বস্তাগুলি রক্ষা করতেই সরানো হয়েছিল। তবে, চাল সরানোর পদ্ধতিগত ত্রুটি হয়েছে। আমরা তাই শহরের মানুষকে সত্য ঘটনা জানানোর জন্য প্রচারে নামব।” |