মাওবাদী প্রভাবিত ১১টি ব্লকের উন্নয়নে আরও একটি ‘বিশেষ পরিকল্পনা’ তৈরি করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের কাছে সেই রিপোর্ট পাঠানোও হয়েছে। সাধারণ ভাবে জেলা প্রশাসন, রাজ্য সরকার, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর, জেলা পরিষদ বা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যানে যে কাজ হচ্ছে তার বাইরেও জঙ্গলমহলের উন্নয়নে জোর দিতেই ‘বিশেষ প্রকল্প’ বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
এই বিশেষ প্রকল্পে সেচ, পানীয় জল, গৃহহীনদের বাড়ি তৈরি থেকে রাস্তা নির্মাণ-সব কিছুই রয়েছে। যার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। মাওবাদী প্রভাবিত ১১টি ব্লকের প্রতিটিতে সেচের জন্য ১০টি করে গভীর নলকূপ তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১১০টি নলকূপ তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে প্রতি ব্লকে ২০টি করে মিনি ডিপটিউবওয়েলের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। ভূগর্ভস্থ জল ধরে রাখার জন্য প্রতিটি ব্লকে ৫টি করে ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্যাঙ্ক তৈরি করা হবে। ৫৫টি ট্যাঙ্কের জন্য ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এ সবই করা হবে সেচের সুযোগ বাড়াতে। গ্রামে-গ্রামে পাইপলাইনে পানীয় জল সরবরাহের জন্যও প্রতিটি ব্লকে ১০টি করে কমিউনিটি ট্যাঙ্ক তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। সে জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা।
গৃহহীনদের জন্য প্রতিটি ব্লকে ১০০টি করে বাড়ি তৈরি হবে। প্রতিটি বাড়ির জন্য ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছে। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। বেকার যুবকদের স্বনির্ভর করতে নানা কাজে ৬ মাসের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি ব্লকে এক হাজার যুবককে প্রশিক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। গ্রামের সঙ্গে প্রধান পাকা রাস্তার সংযোগ স্থাপনের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মতোই প্রতিটি ব্লকে অন্তত যাতে ১০ কিলোমিটার করে রাস্তা করা যায়, সে প্রস্তাবও রয়েছে বিশেষ প্রকল্পে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা।
এ ছাড়াও প্রতিটি ব্লকে একটি করে ‘কৃষি-যন্ত্র ধাবা’ তৈরি, ১০টি করে ‘গ্রামীণ হাট’ তৈরি, ১৫টি করে শস্যভাণ্ডার তৈরি করার কথাও ভাবা হয়েছে। তফসিলি জাতি-উপজাতির ছাত্রছাত্রীদের জন্য হস্টেল তৈরিরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্প মঞ্জুর হলেই কাজ শুরু হবে। |