পারাং নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ শুরুতেই ধাক্কা খেল। কত দিনে এই কাজ শেষ হবে, সে নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। অথচ সেতুটির দ্রুত নির্মাণ খুবই জরুরি।
বর্তমানে যে সেতুটি রয়েছে তা জরাজীর্ণ। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। আর এক বার সেতুটি ভেঙে পড়লে যান চলাচলই বন্ধ হয়ে যাবে। বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হবে। যদিও জেলা পরিষদের পূর্ত কমার্ধ্যক্ষ শিশির মহাপাত্রের দাবি, “এখন বর্ষার কারণে কাজ করা যায়নি। তবে নির্দিষ্ট সময়েই কাজ শেষ করতে হবে বলে ঠিকাদারকে জানানো হয়েছে।” দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার রাম পাল বলেন, “২০১২ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। তার পরই বর্ষা এসে যাওয়ায় কাজ করা যায়নি। নভেম্বর মাস থেকেই ফের কাজ শুরু হয়ে যাবে।” |
মেদিনীপুর-কেশপুর সড়কে কেশপুর ব্লকের পঞ্চমীর কাছে পারাং নদী। নদীর পাশে একটি খালও বয়েছে। ফলে পর পর দু’টি সেতু করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেতু সংস্কার না হওয়ায় জীর্ণ হয়ে পড়ে। যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এমনকী এক বার একটি অংশ ভেঙেও যায়। সেটি কোনও রকমে সংস্কার করে ফের যান চলাচল শুরু হয়। কিন্তু পুরনো সেতু যে বেশি দিন ব্যবহার করা যাবে না, তা জানিয়ে দিয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। নতুন সেতু তৈরিতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। ২০১০ সালেই নতুন সেতু তৈরির জন্য অর্থও মঞ্জুর করে দেয় রাজ্য সরকার। যদিও ২০১০ সালে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা যায়নি। জেলা পরিষদের বক্তব্য, ওই সময়ে একবার দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনও ঠিকাদার তাতে সাড়া দেয়নি। দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বান করতে হয়। কাজ শুরু করতেই দেরি হয়ে যায়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন সেতুর শিলান্যাস করা হয়। তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী শিলান্যাস করেন। অভিযোগ, নির্বাচনের আগে চমক দিতেই ঢাকঢোল পিটিয়ে শিলান্যাস হয়। কিন্তু আসল কাজের ক্ষেত্রে ঢিলেমি ছিল ষোলো আনাই। ভোটের দিকে তাকিয়ে কাজ শুরুর ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত দেরি করার অভিযোগ ওঠে এমনকী জেলা পরিষদের বিরুদ্ধেও।
প্রশাসন জানিয়েছে, নদী ও খাল মিলিয়ে ১২৩ মিটার (৭৫ মিটার ও ৪৮ মিটার) সেতু নির্মাণ করা হবে। যার জন্য প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ করেছে সরকার। বর্তমানে যে দু’টি সেতু রয়েছে তার পাশে হবে নতুন সেতু। আগের থেকেও মজবুত করে গড়ে তোলা হবে এই সেতু। যে শক্ত ভিতের উপর সেতু দাঁড়িয়ে থাকে, ইতিমধ্যেই সেই কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে বলে ঠিকাদারের দাবি। কিন্তু বর্ষায় সেগুলি অনেক দিন জলের তলায় ছিল। এখনও মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে কাজ করা যাচ্ছে না। বর্ষা শেষে ফের কাজ শুরু করা হবে। ঠিকাদারি সংস্থার দাবি, ভিত তৈরিই সব থেকে বড় কাজ। যে কাজ হয়ে থাকার অর্থ সেতু তৈরি করতে আর বেশি সময় লাগবে না। তাই আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই নতুন সেতুর উপর দিয়ে বাস চলবে বলেই ঠিকাদার সংস্থার দাবি। কিন্তু না আঁচালে তো বিশ্বাস নেই সরকারি কাজে! |