গাছ লাগান। দূষণমূক্ত সমাজ গড়ে তুলুন।
এ কথা বোঝাতে কখনও ছুটে যান ভিড় বাসে তো কখনও ট্রেনের কামরায়। বাদ যায় না গ্রাম্য মেলাগুলিও। সবুজ বাঁচাতে কী কী করা উচিত তা বোঝানোর পরেই তিনি পথচারীদের হাতে ধরিয়ে দেন বড় বড় হরফে লেখা লিফলেট। তাতে বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে, পৃথিবী কী ভাবে দূষণের শিকার।
এ ভাবেই দূষণমুক্ত সমাজ গড়তে নিজের মতো করে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পূর্বস্থলী ১ ব্লকের ভাণ্ডারটিকুরি এলাকার বাসিন্দা দুলাল দেবনাথ। বছর পয়তাল্লিশের দুলালবাবু টানা এক দশক ধরে এই কাজ করে যাচ্ছেন। পেশায় কেবল অপারেটর। স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার তাঁর। বাসিন্দারা জানান, কাজের বাইরে যতটুকু সময় পান, তার বেশিরভাগ সময়টাই কাটান সচেতনতা প্রচারে। ভাণ্ডারটিকুরি এলাকায় সবথেকে বড় মেলা হয় ব্রহ্মাণী পুজোকে কেন্দ্র করে। নদিয়া, বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ থেকে কয়েক হাজার মানুষ আসেন। এ বার সেখানেও চুটিয়ে প্রচার করেন দুলালবাবু। সেখানেও বহু মানুষকে তিনি বোঝান গাছ লাগানোর প্রয়োজনীয়তার কথা। বিলি করেনও লিফলেটও। দুলালবাবু বলেন, “শুধু এই মেলাই নয়, জনবহুল জায়গা দেখলেই প্রচারের কাজে নেমে পরি।” |
বাসিন্দারা জানান, শুধু সবুজ বাঁচাতেই নয়, এর আগে ভাগীরথীর দূষণ নিয়েও সরব হয়েছিলেন দুলালবাবু। তবে এ ব্যাপারে তাঁর অভিজ্ঞতা বিশেষ ভাল নয় বলেই জানান দুলালবাবু। তাঁর কথায়, এলাকার কিছু মানুষ কাপড়ের রঙিন সুতো ভাগীরথীতে ধোয়ার জন্য জলে বিষাক্ত রং মিশে যাচ্ছিল। ফলে নদীতে দূষণ বাড়ছিল। বিষয়টি নিয়ে তিনি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে চিঠি দেন। বছর পাঁচেক আগে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। দুলালবাবুর দাবি, জলের অপচয় বন্ধ, নিকাশির ব্যাপারেও তিনি এলাকার মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। ভান্ডারটিকুরির বাসিন্দা তারক দেবনাথের কথায়, “দুলালবাবুর চেষ্টায় এলাকায় জলের অপচয় কিছুটা হলেও বন্ধ হয়েছে।”
এই প্রচার মানুষের কাজে আসছে কি না, সে বিষয়ে অবশ্য এখনই মূল্যায়ন করতে নারাজ দুলালবাবু। তাঁর বিশ্বাস, “নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেলে এক দিন সাড়া মিলবেই।” |