|
|
|
|
জলপ্রকল্প থেকে উপযুক্ত পরিষেবা, না মেলায় ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পাঁচলা |
কেএমডিএ-র একটি জলপ্রকল্পের পরিষেবা নিয়ে হাওড়ার পাঁচলা এবং চড়া পাঁচলা এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছে। এ দিকে, প্রকল্পটির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে কেএমডিএ-র সঙ্গে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে পাঁচলা পঞ্চায়েত সমিতির।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, জলের মান বেশ নিম্ন। রাস্তার কলগুলি (স্ট্যান্ড পোস্ট) থেকে দিনে তিন বার করে জল দেওয়ার কথা থাকলেও মাঝে মাঝে সেই নিয়ম মানা হয় না। ঝিরঝির করে জল পড়ে। বহু জায়গায় জলের পাইপলাইন ফেটে গিয়েছে। পাম্প হাউসে রয়েছে দু’টি গভীর নলকূপের মধ্যে একটি দীর্ঘদিন বিকল। জলে ক্লোরিন মেশানো হচ্ছে না।
কেএমডিএ-এর বক্তব্য, তারা জলপ্রকল্পটি তৈরি করে দিয়েছে। কিন্তু এটি চালানো এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পঞ্চায়েত সমিতির। পঞ্চায়েত সমিতির পাল্টা বক্তব্য, প্রকল্পটির কাজ অসম্পূর্ণ। যে সব কাজ বাকি আছে তা কী ভাবে শেষ হবে তার ফয়সালা না-হওয়া পর্যন্ত তারা প্রকল্পটির দায়িত্ব নিতে পারবে না। সমিতির সভাপতি সুশীল অধিকারী বলেন, “কেএমডিএ প্রকল্পটির দায়িত্ব আমাদের নিতে বলছে। আমাদের বক্তব্য, বাড়ি বাড়ি জল দেওয়া হলে প্রকল্পটি থেকে আয় হত। এ বিষয়ে কেএমডিএ কী করতে চায় তা আমাদের জানাতে হবে। বহু জায়গায় পাইপলাইন পাতা হয়নি। সেখানে কী ভাবে জল যাবে সে বিষয়েও আমরা অন্ধকারে। এই সব সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। তার পরেই প্রকল্পটির দায়িত্ব আমরা নেব কিনা, সে সিদ্ধান্ত জানাব।”
সমস্যাটি মেটাতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর হাওড়া জেলা পরিষদে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে পঞ্চায়েত সমিতি এবং কেএমডিএ-এর কর্তারা থাকবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। কেএমডিএ-র হাওড়া ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার গৌতম রায় বলেন, “ওই বৈঠকে আমরা সব বিষয় নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে আলোচনা করব।”
সাতের দশকের গোড়ায় পাঁচলায় একটি জলপ্রকল্প তৈরি করে কেএমডিএ। পাইপলাইনও পাতা হয়। কথা ছিল, ওই প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু পরীক্ষামূলক ভাবে পাম্প চালানোর দিনেই কয়েক জায়গায় পাইপলাইন ফেটে যায়। পরবর্তী সময়ে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়। পরিত্যক্ত ওই প্রকল্পটির জমিতেই বছর দুয়েক আগে বর্তমান প্রকল্পটির কাজ শুরু করে কেএমডিএ। খরচ হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রকল্পটি থেকে জল দেওয়ার কাজ শুরু হয়। রাস্তার ধারে মোট ৬০টি ‘স্ট্যান্ড পোস্ট’ বসানো হয়। গ্রামবাসীরা সেখান থেকেই জল নেন।
চড়া পাঁচলা পঞ্চায়েতের প্রধান মফিজুল মল্লিক বলেন, “আমার এলাকাতেই পানীয় জলের সমস্যা বেশি। অথচ, এখানে বেশির ভাগ জায়গাতে পাইপলাইন পাতা হয়নি। যতটুকু পাইপ পাতা হয়েছে তা-ও ফেটে গিয়েছে। প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি জল দেওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। আমরা বহুবার কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে সমস্যার কথা জানিয়েছি।”
পাঁচলার তৃণমূল বিধায়ক গুলশান মল্লিক বলেন, “আসলে প্রকল্পটির রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। সেই কারণেই এই অবস্থা। প্রকল্পটি থেকে মানুষ কার্যত কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না। সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|