ফারবিশগঞ্জে পুলিশের গুলিচালনার ঘটনার তদন্তকে নীতীশ কুমার ঠান্ডাঘরে পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। আজ সকালে ‘ফারবিশগঞ্জ চলো’ অভিযান শুরু করার আগে এমনই অভিযোগ করলেন আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ। তিনি বলেন, “ফারবিশগঞ্জের ঘটনায় জড়িত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি নীতীশ সরকার। বিরোধীদের তোলা সিবিআই তদন্তের দাবিও খারিজ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ সবই আসলে পুরো ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।”
গত জুন মাসের ৩ তারিখ একটি বেসরকারি সংস্থার রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় আরারিয়ার ফারবিশগঞ্জে। সংস্থার রাস্তার একটি এলাকা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হচ্ছিল। রাস্তাটি ঘিরে দেওয়ার প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হয়ে রাস্তার দু’পাশের পাঁচিল ভাঙতে শুরু করেন। পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের হঠাতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে পুলিশ গুলি চালালে ১০ মাসের একটি শিশু-সহ চার জনের মৃত্যু ঘটে। নীতীশ কুমার পুরো ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ঘটনায় নিহত ১০ মাসের শিশুর পরিবারকে কাল ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন নীতীশ।
গত নভেম্বর মাসে রাজ্যের বিধানসভা ভোটে শোচনীয় হারের পরে লালু প্রসাদ ঘোষণা করেছিলেন, ছ’মাস তিনি চুপ করে থাকবেন। সরকারের কাজকর্ম পর্যবেক্ষণ করবেন। ছ’মাস কেটে যাওয়ার পরে তিনি নতুন করে বিহারের রাজনীতির ময়দানে নেমে ফারবিশগঞ্জ এবং ঔরঙ্গাবাদের ঘটনা থেকে ফায়দা তুলতে মরিয়া। ফারবিশগঞ্জে পুলিশের গুলিতে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা সকলেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। ওই অভিযানের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পাওয়ারও একটা মরিয়া চেষ্টা লালু চালাচ্ছেন বলে আরজেডি সূত্রে খবর। সেই লক্ষ্যেই আজ দলের নেতা, বিধায়ক এবং সাংসদদের নিয়ে ‘ফারবিশগঞ্জ চলো’ অভিযান শুরু করেছেন লালু প্রসাদ। রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করতে করতে আজ বিকেলে আরজেডি নেতা-সমর্থকদের কনভয় গিয়ে পৌঁছেছে পূর্ণিয়ায়। আগামী কাল সকালে সেখান থেকে তাঁরা ফারবিশগঞ্জ যাবেন। লালু ঘোষণা করেছেন ফেরার পথে তিনি ঔরঙ্গাবাদে যাবেন।
উল্লেখ্য, ঔরঙ্গাবাদে গত মাসে ইন্দিরা আবাস যোজনায় দুর্নীতির জেরে অর্থ খুইয়ে এক দলিত পরিবারের পাঁচ জন একসঙ্গে আত্মহত্যা করে। লালুর অভিযোগ, নীতীশ সরকারের শাসনে নিচু স্তর অবধি সরকারি অফিসারেরা দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে রয়েছে। তারই বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলন তিনি ঔরঙ্গাবাদ থেকেই শুরু করতে চান। |