উইকিলিকসের তথ্য নিয়ে বিতর্ক দেশ জুড়ে
হেডলির প্রত্যর্পণ নিয়ে অভিযোগ খারিজ নারায়ণনের
ডেভিড কোলম্যান হেডলিকে ভারতে নিয়ে আসার ব্যাপারে কেন্দ্র আদতে ‘আন্তরিক’ ছিল না বলে দাবি করল উইকিলিকসের একটি নথি। সেই নথিতে দাবি, ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ভারতের তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এম কে নারায়ণন মার্কিন রাষ্ট্রদূত টিমোথি রোমারকে বলেছিলেন, প্রকাশ্যে যাই বলা হোক, হেডলির প্রত্যর্পণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তেমন ভাবে চিন্তা করছে না।
উইকিলিকসের দাবি, নারায়ণনের কাছ থেকে রোমার আশ্বাস চেয়েছিলেন যে, হেডলির প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারত চাপাচাপি করবে না। নারায়ণন টেলিফোনে রোমারকে জানান, ২৬/১১ মামলায় অভিযুক্ত হেডলিকে ভারতে আনার ব্যাপারে সরকারকে প্রকাশ্যে আগ্রহ দেখাতেই হবে। যদি কেন্দ্র তা না করে, তা হলে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। বেকায়দায় পড়বে সরকার। নারায়ণনের বক্তব্য ছিল, হেডলির প্রত্যার্পণ নিয়ে কেন্দ্র আপাতত তেমন আগ্রহী নয়। তাই আমেরিকা যেন এ বিষয়ে অযথা চিন্তা না করে।
রোমারের যুক্তি ছিল, যদি হেডলিকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়, তা হলে হেডলি তদন্তে আর কোনও ভাবেই সহায়তা করবে না। শুধু তাই নয় রোমার বলেন, “হেডলির বিষয়ে অভূতপূর্ব ভাবে ভারত সরকারকে তথ্য দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই তথ্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে বা আরও কিছু জানার থাকলে সে ব্যাপারেও আমেরিকা সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।” একই সঙ্গে রোমার বলেন, ভারত সরকারকে দেওয়া তথ্যসমূহ খুবই স্পর্শকাতর। তাই সেই নথির গোপনীয়তা রক্ষা করতে ভারত সরকারকে আরও তৎপর হতে হবে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে তেমন ভাবে চর্চা হলে, পরবর্তী কালে হেডলির বিষয়ে সহযোগিতা করা কঠিন হয়ে পড়বে। রোমারের এই বক্তব্যের জবাবে নারায়ণন বলেন, ভারত বিষয়টির ‘গুরুত্ব’ বোঝে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে যা বেরিয়েছে তা একদমই ‘হাস্যকর’। রোমার আরও জানান, যদি আমেরিকায় হেডলি দোষী সাব্যস্ত হয়, তা হলে তার সাজার মেয়াদ ফুরোনোর আগে ভারত হেডলিকে হাতে পাবে না।
আজ এই নথি ফাঁসের পরে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এম কে নারায়ণন এর প্রতিবাদ করে বলেন, “হেডলির প্রত্যপর্ণের বিষয়টি কোনও ‘রাজনৈতিক ভণিতা’ নয়। ভারত সরকার খুব গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। হেডলির ব্যাপারে তথ্য জানতে সরকার সব রকম চেষ্টা করছে। ভারতের ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে কারও মনে কোনও সন্দেহ নেই।” রোমারের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন নিয়ে নারায়ণন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, এ বিষয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে সেটা মার্কিন কর্তাদের জিজ্ঞাসা করা উচিত। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করুন। মার্কিনরা তাদের যা মনে হয়েছে, তাই লিখেছে। তাই একমাত্র তারাই বলতে পারবে, কেন এ রকম লেখা হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্রও আজ দাবি করে যে, নারায়ণন যদি এই ধরনের কোনও মন্তব্য করেও থাকেন, সেটা তাঁর নিজের মতামত। সরকারের নয়। তবে উইকি-নথি নিয়ে আজ ইউপিএ সরকারকে জোরদার আক্রমণ করে বিরোধীরা। বিজেপির বক্তব্য, এই নথি থেকে প্রমাণিত যে সন্ত্রাস দমনের বিষয়ে ইউপিএ সরকার একদমই আন্তরিক নয়। একই সুরে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট বলেন, “মার্কিন চাপের মুখে সরকার যে নতি স্বীকার করেছে, তা বোঝা যাচ্ছে।” এ ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছ থেকে জবাবদিহিও চায় সিপিএম।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.