লগ্নি করার পরে খোলা
রাখতে হবে চোখ-কান
গ্নি করে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার দিন আর নেই। বিনিয়োগের দুনিয়ায় পরিবর্তন আসছে যখন-তখন। সজাগ-সক্রিয় না-থাকলেই লোকসানের সম্ভাবনা। এমনকী, ব্যাঙ্ক আমানতেও সুদের হার পালটাচ্ছে ঘনঘন। আর যাঁরা শেয়ারে লগ্নি করেন, তাঁদের জন্য পরিবর্তন আসছে প্রতি ঘণ্টায়।
সকালে বাজার খুলছে এশিয়ার অন্যান্য বাজারের ইঙ্গিত অনুযায়ী। দুপুরে প্রভাব ফেলছে ইউরোপীয় বাজার। ভারতে যখন সন্ধ্যা, তখন খুলছে মার্কিন বাজার। ডাও জোন্স এবং ন্যাসডাক সূচকের ওঠাপড়া ভাল রকম প্রভাব ফেলছে পরদিনের এশীয় বাজারে। অর্থাৎ মাছের মতো নজর রাখতে হয় সব দিকেই। সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ যদি এক বার নিক্কেই, হ্যাং সেং, কোসপি ইত্যাদি সূচকের উপর চোখ বুলিয়ে নেন, তা হলে ইঙ্গিত পাবেন ওই দিন সেনসেক্স ও নিফটি কেমন খুলতে পারে।
নজর রাখতে হবে অপরিশোধিত তেলের বাজার দরের উপর। মাথায় রাখতে হবে সাপ্তাহিক মূল্যবৃদ্ধির হার কী রকম পালটাচ্ছে সে দিকেও। খোঁজ-খবর রাখতে হবে বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব বর্তায় শেয়ার বাজারের উপর। খবর রাখতে হবে রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, এমনকী ধর্মীয় ব্যাপারেও।
সব খবরই রাখতে হবে তাৎক্ষণিক ভাবে। দেরি করলে চলবে না। শুধু খবর রাখলেই চলবে না। কোন খবরের প্রভাব বাজারের উপর কতটা পড়তে পারে এবং তা কত দিন স্থায়ী হতে পারে, সে সম্পর্কেও অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। সেনসেক্স ১৬ হাজারের নীচে তলিয়ে যাওয়ার পর গত সোমবার হঠাৎই তেতে ওঠে অণ্ণা হজারে অনশন তোলায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর বন্ড পুনঃক্রয় না-করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়।
অণ্ণা অনশন প্রত্যাহার করায় চাপ এবং অনিশ্চয়তামুক্ত হয় ভারত সরকার। অন্য দিকে মার্কিন সরকারের সিদ্ধান্ত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পক্ষে সহায়ক বলে মনে করা হয়। মার্কিন সরকার বন্ড পুনঃক্রয় করলে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে টাকার জোগান বেড়ে মুদ্রাস্ফীতিকে উসকে দিত। একই দিনে একটি দেশি ও একটি আন্তর্জাতিক ঘটনার মিশ্রিত প্রভাবে সেনসেক্স ওঠে ৫৬৮ অঙ্ক (৩.৫৮ শতাংশ)। ২০০৯-এর মে মাসের পর এক দিনে এটিই সূচকের সব থেকে বড় উত্থান। পরের দিন বাজার ওঠে আরও খানিকটা।
শেয়ার বাজার হঠাৎ তেতে ওঠায় সোনার দামে কিছুটা নিম্নচাপ দেখা দেয়। এ সব ঘটনা যাঁরা আগেভাগে অনুমান করতে পেরেছেন, তাঁদের কেউ কেউ সময় মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে লাভবান হয়েছেন। সজাগ থাকতে হবে বিশেষ কতকগুলি দিনে। যেমন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি পর্যালোচনা করার দিন, মুদ্রাস্ফীতি ঘোষণার দিন, মাসিক সেট্লমেন্টের দিন ইত্যাদি।
খবর রাখতে হবে বিশেষ বিশেষ শেয়ার সম্পর্কিত ঘটনার উপরও। যেমন মারুতি কারখানায় ধর্মঘট এবং তা প্রত্যাহারের ঘটনা ভাল প্রভাব ফেলেছিল মারুতি শেয়ারের বাজার দরের উপর। এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যার প্রভাবে সংশ্লিষ্ট শেয়ারের বাজার দর সাময়িক ভাবে পড়লেও তা আবার উঠতে শুরু করে ওই প্রভাব কেটে গেলে। সন্ত্রাসবাদীদের হঠাৎ হানায় বাজার পড়েছে বেশ কয়েক বার। কিন্তু প্রত্যেক বারই দ্রুত ফিরে এসেছে আগের জায়গায়।
লগ্নিকারীদের নিয়মিত নজর রাখতে হবে গোটা দেশে বর্ষা কেমন হচ্ছে তার উপর। বর্ষার বড় প্রভাব রয়েছে শিল্প ও শেয়ার বাজারের উপর। এ বার জুলাইয়ে কিছুটা ঘাটতি থাকলেও অগস্টে কিন্তু বৃষ্টিপাত প্রায় স্বাভাবিকের কাছাকাছি। বাজারের জন্য এটি একটি ভাল খবর।
শুধু বাজার নয়, সক্রিয় থাকুন নিজের অ্যাকাউন্টের ব্যাপারেও। যেমন ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্টে ১২ সংখ্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর জানানো হয়েছে কি না, যাতে ডিভিডেন্ড সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। দেখে নিন ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্টে নমিনেশন করা আছে কি না। ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট সময় মতো রিনিউ করা হয়েছে কি না। স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম সময় মতো জমা পড়ল কি না। এস আই পি করা থাকলে অথবা ই এম আই-এর দায় থাকলে অ্যাকাউন্টে পরিমাণমতো টাকা আছে কি না।
দেখে নিন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালান্স আছে কি না। না থাকলে মাসুল গুনতে হবে। ক্রেডিট কার্ডে কিছু কেনার পর সুদমুক্ত মেয়াদের মধ্যে ওই ঋণ শোধ না- করলে চড়া সুদের খপ্পরে পড়তে হবে। নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে ন্যূনতম টাকা জমা না-করলে সুদের পাশাপাশি লেট-ফি বাবদ মাসুল গুনতে হতে পারে। এ সব ব্যাপারে সদা সজাগ থাকলে লোকসান এড়ানো সম্ভব। অর্থাৎ হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার দিন আর নেই। সক্রিয় থাকতে হবে সব সময়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.