‘দলবিরোধী কাজ’, তৃণমূল পুরপ্রধান বহিষ্কৃত গুসকরায়
ছর তিনেক আগেই দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশক বামেদের দখলে থাকা গুসকরা পুরসভা দখল করেছিল তৃণমূল। পুরপ্রধান হন চঞ্চল গড়াই। রবিবার সেই পুরপ্রধানকেই দলবিরোধী কাজ, স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা কোর কমিটির সভাপতি তথা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক রবিবার জানান, এ দিনই দলের তরফে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চঞ্চলবাবু অবশ্য জানান, দলের তরফে এখনও তাঁকে কিছু জানানো হয়নি।
এ দিন বীরভূমের বোলপুরে একটি অনুষ্ঠানে চঞ্চলবাবুকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানান মলয়বাবু। দলবিরোধী কার্যকলাপ, দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের কারণে এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। এই খবর জানার পরেই গুসকরায় তৃণমূলের অফিসে ভিড় জমান বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক। সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাত ৮টা নাগাদ শহরে একটি ধিক্কার মিছিলও হয়।
বছর তিনেক আগে পুরভোটে গুসকরায় ১৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৮টি, বিজেপি দু’টি ও সিপিএম ৫টি পায়। সে বার সিপিএমের হাত থেকে পুরসভা দখলে এক জোট হয়ে লড়াই করেছিলেন চঞ্চলবাবু ও দলের নেত্রী মল্লিকা চোঙদার। উপ-পুরপ্রধান হন মল্লিকাদেবী। পরে গুসকরা কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও জেতে টিএমসিপি। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটের পরেই থেকেই চঞ্চলবাবু ও মল্লিকাদেবীর অনুগামীদের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। স্কুল ভোট-সহ বিভিন্ন বিষয়ে দু’পক্ষের বিবাদ সামনে চলে আসছিল। দলের এই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয় কয়েকটি গ্রামে। তবে মল্লিকাদেবী দাবি করেছিলেন, “কিছু লোক ইচ্ছাকৃত ভাবে গোলমাল পাকাচ্ছে। চঞ্চলদার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। প্রতি দিনই আমরা পুরসভা ভবনে বসে উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করি।’’ চঞ্চলবাবুও বলেছিলেন, “আমাদের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই।”
রবিবার মলয়বাবু জানান, চঞ্চলবাবুর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপ, স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে দলের তরফে তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কী ধরনের দুর্নীতি বা স্বজনপোষণে চঞ্চলবাবু জড়িয়ে পড়েন, তা তিনি বলেননি।
এ দিন রাতে চঞ্চলবাবু বলেন, “সংবাদমাধ্যমের কাছে জেনেছি, দল আমাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ বিষয়ে দলের তরফে আমাকে কেউ কিছু জানাননি।” তাঁর দাবি, “শুনেছি, দলবিরোধী কাজ, স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির দায়ে এই বহিষ্কার। কী ধরনের দলবিরোধী কাজ আমি করেছি, জানি না। দুর্নীতি করে থাকলে তা তো প্রমাণ করতে হবে। দল চাইলে তদন্ত করুক। স্বজনপোষণও কী করেছি জানি না। পুরবোর্ড দখলের পরে দলেরই নির্দেশে আমি এক জনকে চাকরি দিয়েছিলাম। তিনি গুসকরা কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় সিপিএমের হাতে খুন হওয়া এক ব্যক্তির পরিবারের সদস্য। তাহলে কী স্বাজনপোষণ আমি করলাম?”
সন্ধ্যায় চঞ্চলবাবুকে বহিষ্কারের খবর পেয়ে তৃণমূল অফিসে জড়ো হওয়া দলীয় কর্মী পার্থ হাজরা, মোহন চৌধুরী, আশিস নায়েকদের দাবি, “চঞ্চলবাবুকে দল কেন সরিয়ে দিল, তা জানতে চাই আমরা। দলের উচিত এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা।” এ দিকে, এই খবর শুনে সিপিএমের গুসকরা জোনাল কমিটির সম্পাদক অচিন্ত্য মজুমদারের মন্তব্য, “আমাদের কাছে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের নির্দিষ্ট কোনও খবর নেই। তবে ওদের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত। দলের কাছে নিশ্চই ওঁর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। তাই বহিষ্কার করা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.