খোঁজ নেই দলীয় কর্মীর, গুসুম্বয় কংগ্রেস নেতারা
কাটোয়ার গুসুম্ব গ্রামে নিখোঁজ কংগ্রেস কর্মীকে উদ্ধারে পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয় প্রদেশ কংগ্রেস। রবিবার দুপুরে প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য ও রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া গুসুম্ব গ্রামে গিয়ে এই অভিযোগ করেন। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর অবশ্য বলেন, “আমরা তদন্ত করছি। খুব তাড়াতাড়ি নিখোঁজের সন্ধান মিলবে।” এ দিনই গ্রাম থেকে ফেরার পথে অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যান প্রদীপবাবু।
এ দিন গুসুম্বয় তিনি বলেন, “আমাদের নিখোঁজ কর্মীকে উদ্ধার করার ব্যাপারে পুলিশের তদন্তে আমরা খুশি নই। আমরা দেখতে চাই পরিবর্তিত সরকারে পুলিশের ভূমিকার পরিবর্তন হচ্ছে কি না।” গুসুম্ব গ্রামের নিখোঁজ ওই কংগ্রেস কর্মীর নাম নিমাই সাহা। প্রদীপবাবুর পাশেই ছিলেন রাজ্য মন্ত্রিসভার সেচ ও কুটির শিল্পমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি বলেন, “পরিবারের লোকেরা বুঝতেই পারছেন না নিমাইবাবু মৃত না জীবিত। পুলিশ শিথিলতা করছে কি না সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ নিয়ে রিপোর্ট জমা দেবেন তিনি।
ইতিমধ্যেই কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় গত শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে নিখোঁজ কর্মীকে উদ্ধার করার দাবি জানিয়েছেন। তবে পুলিশের অনুমান, নিমাইবাবুকে খুন করে তাঁর দেহ লোপাট করা হয়েছে। বর্ধমানের জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “আমাদের ধারণা, গাড়ি করে তাঁর দেহ নিয়ে পগারপার হয়েছিল দুষ্কৃতীরা। আমরা গুসুম্ব গ্রাম থেকে একটি সন্দেহভাজন গাড়ি আটক করেছি। গাড়ির মালিক পলাতক।”
নিমাই সাহার বাড়িতে প্রদীপ ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
গত ২৬ অগস্ট সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন নিমাই সাহা। ওই দিন তিনি পাশের গ্রাম বরমপুর থেকে গুসুম্ব ফিরছিলেন। আলমপুর-বনকাপাশি রাস্তার ধারে তাঁর রক্ত মাখা কালো রঙের চটি ও মিষ্টি পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরিবারের লোকেদের সন্দেহ হয়, খুন করে তাঁর দেহ লোপাট করা হয়েছে। এর পরে নিমাইবাবুর ভাই শান্তনু সাহা কাটোয়া থানায় সিপিএমের ২১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। পর দিন শনিবার খুন হন সিপিএম কর্মী নারায়ণ দাস। নারায়ণবাবুর দুই ভাইয়ের বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়। তার পর থেকেই এলাকা থমথমে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, নিমাইবাবু খুন হওয়ার কয়েক মাস আগে পরেশ ঘোষ ওরফে কলেজ-কে বাস থেকে নামিয়ে পিটিয়ে খুন করে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা। সেই সময় ভয়ে কাটোয়া থানায় এফআইআর করতে পারেননি পরিবারের সদস্যেরা। এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস প্রতিনিধিদের কাছে কলেজবাবুর দাদা মাধাইবাবু বলেন, “ভাইকে খুন করার পরেও সিপিএম দুষ্কৃতীদের ভয়ে থানায় যেতে পারিনি।” পরেশবাবুর বিবাহিতা কন্যা পম্পা ঘোষও বলেন, “দুষ্কৃতীরা আমাকেও ভয় দেখিয়েছিল।” কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ বার আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে খুনের বিচার চাইব।”
এ দিকে, কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম। দলীয় নেতা তথা মঙ্গলকোটের বিধায়ক শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “গুসুম্ব গ্রামে আমরাই কংগ্রেসের হাতে দীর্ঘ দিন ধরে আক্রান্ত। আমাদের নিহত কর্মীর স্ত্রী এখনও পর্যন্ত গ্রামে ঢুকতে পারেনি।”
নেতারা ফিরে যাওয়ার পরে সন্ধ্যায় গুসুম্ব গ্রামে এক সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে বোমা ফাটে। স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের অভিযোগ, কলকাতা থেকে আসা নেতাদের উপরে হামলা চালাবে বলেই বোমা মজুত করেছিল সিপিএম। সিপিএম অবশ্য ওই অভিযোগ ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
অন্য দিকে, ফেরার পথে এ দিন মঙ্গলকোটের বনকাপাশির কাছে এক ভবঘুরে প্রদীপবাবুর কনভয়ে পাইলট জিপের উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়লে তাঁকে বাঁচাতে জিপটি ব্রেক কষে। প্রদীপবাবুর গাড়ি সেই পাইলট কারে ধাক্কা মারলে তাঁর ডান পায়ে চোট লাগে বলে জানান কংগ্রেস নেতা কাশীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেও কোর্ট চত্বরে ল্যান্ড অ্যান্ড ল্যান্ড রিফমর্স কর্মচারী ইউনিয়নের সভায় প্রদীপবাবু বলেন, “সরকার যে জমি ব্যাঙ্ক তৈরির কাজ শুরু করেছে, তাতে দফতরের কর্মীদের সাহায্য ও পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কোন জমি উর্বর, কোনটি অনুর্বর তা নিয়ে এঁদেরই উপযুক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.