শতবর্ষের উদযাপনে মেতেছে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের পূর্ব রেলওয়ে বয়েজ হাইস্কুল। শুক্রবার থেকে পাঁচ দিনের এই শতবর্ষ উৎসব শুরু হয়েছে স্কুল মাঠে। ছাত্র ও শিক্ষাকর্মীরা তো বটেই উৎসবে মেতে উঠেছেন স্কুলের প্রাক্তন পড়ুয়ারাও। উৎসবের সূচনা হয় প্রভাত ফেরি ও শহর পরিক্রমা দিয়ে। বিকালে মুক্তমঞ্চে হয় মূল অনুষ্ঠান।
স্কুলের অধ্যক্ষ তুষারকান্তি ঘোষ জানান, স্কুলের পঠন-পাঠন শুরু হয় ১৮৯৯ সালে। সেই থেকেই পথচলা শুরু। নিয়ম অনুসারে ১২ বছর আগেই স্কুলের একশো বছর পূণর্র্ হয়েছে। কিন্তু সে’বছর বিভিন্ন কারণে উৎসব হয়নি। বৃহস্পতিবার থেকেই ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা একসঙ্গে স্কুল সাজানোর কাজ শুরু করেন। অষ্টম শ্রেণির অভিনব বিশ্বাস জানায়, প্রস্তুতির জন্য স্কুল ছুটি ছিল বৃহস্পতিবার। স্যারেরা যেমন বলছেন, হাতে হাতে সব কিছু সাজিয়ে দিচ্ছে পড়ুয়ারাই। |
স্কুলের শতবর্ষ পুর্তি উৎসবের খবর পেয়েছেন প্রাক্তন ছাত্র ৮৭ বছরের চণ্ডীচরণ সরকার। তিনি শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই স্কুলে এসে প্রস্তুতি দেখে গিয়েছেন। তিনি জানালেন, ১৯৪৩ সালে স্কুল ছেড়েছেন। বললেন, “আমি যখন পড়েছি তখন এত বড় স্কুল ছিল না। আমার স্কুলের ১০০ বছর পূণর্র্ হল। ভেবে রোমাঞ্চ হচ্ছে।” এই স্কুলে প্রাক্তন ছাত্রদের কোনও সংগঠন গড়ে ওঠেনি। তাই শতবর্ষ উদযাপনকে সামনে রেখে তৈরি হয়েছে প্রাক্তন ছাত্র সঙ্ঘ। সঙ্ঘের সম্পাদক নবারুণ গুহ ঠাকুরতা জানালেন, এ বার থেকে তাঁরা নিয়মিত স্কুলের সমস্যা নিয়ে ভাববেন ও যাবতীয় উন্নতির চেষ্টা করবেন।
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছেন স্কুলের প্রাক্তন বহু ছাত্ররা। প্রত্যেকের কাছে শতবর্ষ উদযাপনের খবর পাঠানোর চেষ্টা করা হছেন। অধ্যক্ষ তুষারকান্তি ঘোষ জানালেন, এখন ইন্টারনেটের যুগ। সেই মাধ্যমেই সবাইকে জানানো হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ উৎসব উপলক্ষে আড়াই লক্ষ টাকার অনুদান দিয়েছে। সেই টাকায় একটি প্রেক্ষাগৃহ বানানো হয়েছে। স্কুলের সামনে বানানো হয়েছে একটি মার্বেল পাথরের তোরণ। পাঁচ দিনের এই উৎসবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি থাকছে বিজ্ঞান, চারুকলা প্রদর্শনী ও শিক্ষা বিষয়ক আলোচনাসভা। আসানসোলের ডিআরএম জগদানন্দ ঝা জানিয়েছেন, স্কুলের শতবর্ষ উপলক্ষে এই পাঁচ দিনই তিনি ছাত্রদের সঙ্গে থাকবেন। |