বানভাসি এলাকায় বন্যা পরবর্তী ডায়েরিয়ার প্রকোপ রুখতে বাসিন্দাদের সচেতন করতে যৌথ প্রচারে নামছে মালদহের চাঁচল মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন। শনিবার থেকেই বিভিন্ন এলাকায় শিবির করে ওই প্রচার চালানো হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। শুক্রবার রতুয়ায় স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের যৌথ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সচেতনতার প্রচার চালাতে গড়া হয়েছে ৫টি দল। দলে স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, পঞ্চায়েত সদস্য, ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধি, আইসিডিএস কর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সহ ১০ থেকে ২৫ জন সদস্য থাকবেন। প্রাথমিকভাবে রতুয়ার ১৪ টি ত্রাণ শিবিরকে কেন্দ্র করে ওই প্রচার চালানো হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। চাঁচলের সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন বিশ্বাস বলেন, “বন্যার পরে বানভাসি এলাকাগুলিতে স্বাভাবিকভাবেই নানা কারণে পেটের রোগ, ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। এ জন্য বাসিন্দাদের অসাবধানতা অনেকাংশেই দায়ী। কিছু নিয়ম মেনে চললেই তা এড়ানো সম্ভব। সেজন্য যৌথ উদ্যোগে ওই প্রচার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি, বানভাসি এলাকার জলের উৎসগুলিও পরিস্রুত করার কাজে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর।” সাম্প্রতিক বন্যায় রতুয়া ও হরিশ্চন্দ্রপুরে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। নলকূপগুলিও জলের তলায় তলিয়ে যায়। প্রশাসনের তরফে দুর্গত এলাকাগুলিতে পাউচে ভরা জলের প্যাকেটও দেওয়া হয়। আপাতত বিভিন্ন এলাকা থেকে জল নামতে শুরু করেছে। জেগে উঠছে নলকূপগুলি। দূষিত হয়ে পড়া ওই নলকূপগুলির জল খেয়ে ডায়েরিয়ার মতো রোগে আক্রান্তের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, অপরিষ্কার, অপরিচ্ছন্নতাও ডায়েরিয়া, পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার জন্য অনেকাংশেই দায়ী। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, বানভাসি এলাকার ত্রাণ শিবিরগুলোতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে সভা ডাকা হবে। তাদের ব্লিচিং, হ্যালোজেন ট্যাবলেট দেওয়ার পাশাপাশি কীভাবে পরিস্রুত করে পানীয় জল খেতে হবে তারও প্রচার করা হবে। এছাড়াও যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ না করা, এই পরিস্থিতিতে কীভাবে কোনও খাবার খেতে হবে তাও বলা হবে। খাবার পর হাত দিয়ে সাবান ধোয়াও জরুরি জানানো হবে সেই কথাও। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সামান্য হলেও বানভাসি এলাকাগুলিতে ডায়েরিয়া দেখা দিয়েছে। ফলে পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের বাইরে না চলে যায়, সেই জন্যই জল নামতেই ওই এলাকায় প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচারের পাশাপাশি নলকূপগুলোও পরিস্রুত করার কাজ শুরু হয়েছে। বাড়ির নলকূপ পরিস্রুত করতে স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ, এক দেশলাই বাক্স ব্লিচিং এক লিটার জলে গুলে আধ ঘণ্টা রাখলে চুন তলায় পড়ে যাবে। ব্লিচিং-এ থাকা ক্লোরিন জলে মিশে যাবে। ওই জল রাতে নলকূপের চেক ভাল্ব খুলে পাইপে দিলে পরদিন ওই নলকূপ পরিস্রুত হয়ে যাবে। মাসে দু’বার তা করতে হবে। |