সরকারের দুই জোট শরিক কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে ‘তিক্ততা’ যাতে তৈরি না-হয়, তার জন্য উদ্যোগী হলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য বিধানসভার দফাওয়াড়ি বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের প্রতিনিধিদের বৈঠকে দু’দলের শীর্ষ পরিষদীয় নেতাদের উপস্থিতিতেই মমতা স্পষ্ট বলেছেন, তাঁদের মধ্যে ‘ভেদাভেদ তৈরি’র চেষ্টা চলছে। কিন্তু রাজ্যে একটা ‘যৌথ পরিবারের’ মতো তাঁরা সরকার চালাচ্ছেন। সেখানে মানুষের সামনে দু’দলের ‘ঐক্যবদ্ধ ছবি’ তুলে ধরতে হবে বলেই মমতা দু’দলের নেতাদের জানিয়েছেন।
সম্প্রতি রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় তাঁদের কর্মীদের উপরে তৃণমূলের একাংশ হামলা করছে বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। বিভিন্ন এলাকায় সরকারি কমিটিতে তাঁদের দলের প্রতিনিধিদের স্থান দেওয়া হচ্ছে না, শরিক দল হিসাবে তাঁদের ‘মর্যাদা’ দেওয়া হচ্ছে না বলেও কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ অভিযোগ তুলেছেন। বৈঠকের পরে কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ জানান, সিপিএম ছেড়ে যারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, তারাই মূলত ‘হামলা’ ও ‘সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে’ বলে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁদের ‘সতর্ক’ করে জানিয়েছেন, সিপিএমের সরকার চলে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু এখনও কিছু কিছু জায়গায় তাদের ‘প্রভাব’ রয়েছে। তারা জোট সরকারকে নানা ভাবে ‘বিব্রত’ করবে। ফলে, জোট শরিক দু’দলের নেতা-কর্মীদেরই সজাগ থাকতে হবে।
পরিষদীয় মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও বৈঠকে ছিলেন। পরে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা মহম্মদ সোহরাব ও রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানান, কোনও সমস্যা হলেই তাঁকে জানাতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ‘ব্যস্ত’ থাকলে তাঁদের সমস্যার কথা পার্থবাবু বা সুব্রতবাবুকে জানানো যেতে পারে।
মানসবাবুর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, গত তিন মাসে সরকার যে কাজ করেছে, তা মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে।” পার্থবাবুর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেছেন, আমরা দু’দল ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজ্যকে চালাতে চাই।” বিধানসভায় তাঁর কক্ষে মমতা এ দিন দুই ২৪ পরগনার তৃণমূল বিধায়কদের সঙ্গেও জেলার রাজনৈতিক ও সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। অন্য দিকে, শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বা আছেন, দলের এমন ১২ জন বিধায়ককে সোমবার শিক্ষক দিবসে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের শিক্ষা বিভাগ। |