মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা পুস্তিকা সিপিএমের |
তাঁর সরকারের ৯০ দিনের সাফল্যের খতিয়ান দিয়ে রঙিন বই প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তার পাল্টা ‘১০০ দিনের পরিবর্তন’ নামে পুস্তিকা প্রকাশ করল সিপিএম। শুক্রবার আলিমুদ্দিনে পুস্তিকাটি প্রকাশ করে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, “এই সময়ে ৩২ জন বামপন্থী মানুষ খুন হয়েছেন। রাজ্যের গণতান্ত্রিক অধিকার আক্রান্ত। রাহাজানি, লুটপাট বাড়ছে। শহরে আবার সাট্টা, হেরোইন ফিরে এসেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আকাশছোঁয়া। গোটা দেশের মধ্যে খাদ্যসামগ্রীর দাম পশ্চিমবঙ্গেই সর্বাধিক বেড়েছে। যা অতীতে কোনও দিন হয়নি। এমনকী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও হয়নি।” সরকারি কোষাগারে অর্থ না থাকলেও তিন মাসের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস সাজানোর ‘বিপুল খরচ’ থেকে শুরু করে শিক্ষায় ‘নৈরাজ্য’, কৃষকের জমি ‘লুঠ’, টেন্ডার ছাড়া ল্যাপটপ কেনা, বিধানসভায় বাজেট পেশ না করা, নতুন করে মদের দোকান ও কারখানার লাইসেন্স দেওয়া, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ ইত্যাদি নানা বিষয়ে ওই পুস্তিকায় তথ্য দেওয়া হয়েছে। সেলিমের আরও অভিযোগ, বন্যাত্রাণে সরকারি সাহায্য পর্যাপ্ত নয়। সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে এক এক সময় এক এক রকম তথ্য দেওয়া হচ্ছে। প্রথম মাসে বলা হয়েছিল, এক লক্ষ মানুষের চাকরি হয়েছে। তিন মাস বাদে বলা হচ্ছে, ৯০ হাজার জনের চাকরি হয়েছে। তবে কোথায় কত চাকরি হয়েছে, তা নিয়ে কোনও তথ্য কখনওই দেওয়া হচ্ছে না। চাকরি না পেয়ে মমতার গাড়ির সামনে যে ছেলেটি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তাকে বলা হচ্ছে ‘অবসাদগ্রস্ত’।
|
বৃষ্টি-বন্যায় কৃষির ক্ষতি ৬৫৪ কোটি |
রাজ্যের সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতিতে ৬৫৪ কোটি টাকার কৃষিপণ্যের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি দফতরের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টে বলছে, প্লাবিত হয়েছে আমন ধানের পাঁচ লক্ষ ৯৯ হাজার হেক্টর জমি। সাত লক্ষ ২৭ হাজার ৭১৩ মেট্রিক টন ধান নষ্ট হয়েছে। রাজ্যের ২২২টি ব্লকের ১২ হাজার ১৫৭টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্ত। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং মালদহ-সহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ধানের সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে রাজ্যের কৃষি অধিকর্তা সার্থককুমার বর্মা শুক্রবার মহাকরণে জানান। কৃষি অধিকর্তা জানান, ৬ থেকে ১৯ অগস্ট পর্যন্ত প্রবল বর্ষণে শুধু ধান নয়, ক্ষতি হয়েছে সব্জি চাষেরও। রাজ্যে মোটামুটি এক লক্ষ হেক্টর জমিতে সব্জি চাষ হয়। তার মধ্যে ৩৫ হাজার হেক্টর জমির বেগুন, পটল, ঝিঙে, উচ্ছে, লঙ্কার চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অতিবর্ষণে। কৃষি দফতরের রিপোর্ট বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে পাঠানো হয়। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান জানান, কৃষিপণ্যের ক্ষয়ক্ষতির ওই রিপোর্ট নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
|
আসন ফাঁকা থাকবে বেসু ও যাদবপুরে |
খালি আসনে ছাত্র ভর্তির সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপত্তি তুলেছিল বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি বা বেসু এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। টানাপোড়েনের পরে শেষ পর্যন্ত ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ফাঁকা আসনে ছাত্র ভর্তি না-করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর ফাঁকা আসনগুলি ফাঁকা রাখারই সিদ্ধান্ত হয়েছে।” এই সিদ্ধান্তের কথা এ দিনই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধা-তালিকার ভিত্তিতে কাউন্সেলিংয়ের শেষে বেসু-তে ৩২টি এবং যাদবপুরের ৫৭টি আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে। ওই আসনগুলিতে জয়েন্টের মেধা-তালিকার পিছনের সারির বা জয়েন্ট না-দেওয়া ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু দুই বিশ্ববিদ্যালয়ই তাতে আপত্তি জানায়। তাদের বক্তব্য ছিল, এ ভাবে পিছনের সারির পড়ুয়াদের নিলে প্রতিষ্ঠানের মানের সঙ্গেই আপস করা হবে। তার পরেও সরকারি সিদ্ধান্ত মানতে হবে বলে বেসু-কে চিঠি দিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। কিন্তু বেসু ও যাদবপুর নিজেদের যুক্তিতে অনড় থাকে। জট কাটানোর জন্য উচ্চশিক্ষা দফতর তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে। শেষ পর্যন্ত দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তি মেনে নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত বদল করল রাজ্য সরকার। |