অনুদানের টাকা পেয়েছেন বেশ কয়েক দিন আগে। অনেকে হয়তো এর মধ্যে তা পুরো খরচও করে ফেলেছেন।
কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ-কর্মীদের সেই টাকার বেশিটাই ফেরত দিয়ে দিতে হবে! কারণ, কর্মীদের উৎসব-অনুদান দিয়েও এ বার তা আংশিক ভাবে ফেরত নিয়ে নিতে চাইছে রাজ্যের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি। বিদ্যুৎ-কর্তাদের বক্তব্য, চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েই তাঁদের এটা করতে হচ্ছে। তবে একবারে নয়, সংশ্লিষ্ট কর্মীদের বেতন থেকে ধাপে ধাপে টাকাটা কেটে নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম এবং বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি মুসলিম কর্মীদের ঈদের আগে উৎসব-ভাতা হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা করে দিয়ে দিয়েছিল, গত বারের মতো। কিন্তু তার পরেই প্রশ্ন ওঠে, লোকসান ও ঋণভারে জর্জরিত বিদ্যুৎ সংস্থাগুলোর এ বছর আদৌ কোনও অনুদান দেওয়া সাজে কি না।
বস্তুত বণ্টন কোম্পানির আর্থিক অবস্থা এতটাই ‘শোচনীয়’ যে, বৃহস্পতিবার সংস্থার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে দৈনন্দিন ব্যয়নির্বাহের জন্য স্বল্পকালীন ঋণ গ্রহণের ঊর্ধ্বসীমা আরও চারশো কোটি বাড়িয়ে ১২০০ থেকে ১৬০০ কোটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সব কর্মীকে যে পাঁচ হাজার টাকা হারে উৎসব-ভাতা দেওয়া সম্ভব নয়, তা পরিষ্কার হয়ে যায় ওই বৈঠকে। স্থির হয়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা যে হারে উৎসব-অনুদান পেয়ে থেকেন, সেই একই হারে বিদ্যুৎ-কর্মীদের ওই ভাতা দেওয়া হবে। অর্থাৎ ২১০০ টাকা।
এবং তখনই প্রশ্ন ওঠে, ঈদের আগে যাঁদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা কেন বেশি পাবেন? সে ক্ষেত্রে অন্যদেরও একই হারে ভাতা দেওয়ার দাবি ওঠে। বিস্তর তর্কের পরে সিদ্ধান্ত হয়, সব কর্মীর ভাতাই হবে ২১০০ টাকা। অর্থাৎ যাঁরা পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছেন, তাঁদের থেকে ‘বাড়তি’ ২৯০০ টাকা ফেরত নিয়ে নেওয়া হবে।
কর্মী সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে দিয়েছে। সিটু-র রাজ্য সহ সভাপতি প্রশান্ত নন্দী চৌধুরী শুক্রবার বলেন, “এক দিকে রাজ্যের শ্রম দফতর বেসরকারি সংস্থাকে অনুরোধ করছে উৎসবের অনুদান যেন আগের বছরের চেয়ে কম না হয়। অন্য দিকে সরকারি সংস্থাই উৎসব অনুদান অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে দিচ্ছে! এ তো দ্বিচারিতা!” |