শহরের টানে ঘরছাড়া দুই খুদে আরপিএফের হাতে
ঘুরতে বেড়ানোর জন্য না বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিল ওরা। পুরুলিয়া স্টেশনে বৃহস্পতিবার রাতে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আরপিএফ কর্মীরা ওই দুই খুদেকে পাকড়াও করে। খবর যায়, ওদের বাড়িতে। এ দিন আরপিএফের কর্মীরা বাড়ির লোকজনের হাতে তাদের তুলে দিলেন।
এক জন বছর দশেকের আফসারউদ্দিন। অন্য জন, ছয় বছরের মিনাজ মণ্ডল। পাড়া থানার হরিহরপুর গ্রামে ওদের পাশাপাশি বাড়ি। আফসারউদ্দিন রাঁচিতে বাবার কাছে থাকে। মিনাজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তবুও ওদের কথায়, “আমরা আচ্ছা দোস্ত”। ঈদের ছুটিতে আফসারউদ্দিন হরিহরপুরে এসেছিল। মিনাজের স্কুলেও ছুটি। আফসারউদ্দিনের কথায়, “ছুটিতে বাড়িতে থাকতে ভাল লাগছিল না। রাঁচি যাওয়ার সময় পুরুলিয়া স্টেশন লাগোয়া ফুলের বাগান দেখেছিলাম। সেই বাগান ধুরে দেখার ইচ্ছা ছিল। তাই, দুই বন্ধুতে বাড়ি থেকে পুরুলিয়া স্টেশনে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করি। সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরে আসব ঠিক করেছিলাম।”
ওদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, হরিহরপুর থেকে সরাসরি পুরুলিয়ায় বাস আসে না। নেই ট্রেন যোগাযোগও। বৃহস্পতিবার সকালে বড়দের নজর এড়িয়ে তারা বাড়ি থেকে বের হয়। ট্রেকারে চেপে ঝাঁপড়া মোড়ে নামে। সেখান থেকে বাসে চেপে পুরুলিয়ায় আসে। আফসারের কথায়, “পুরুলিয়ায় যখন নামি তখন দুপুর গড়িয়ে গিয়েছিল। প্রচণ্ড খিদে পেয়েছিল। কিন্তু, পকেটে টাকা ছিলনা। মোবাইল ফোনের ‘মেমারি কার্ড’ বিক্রি করে কিছু টাকা পাই। সেই টাকা দিয়ে একটা হোটেলে ঢুকে দু’জনে এক প্লেট ভাত খাই। শহরের রাস্তায় ঘোরাঘুরি করি। বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিলাম। লোক জনকে জিজ্ঞাসা করে পুরুলিয়া স্টেশনে যাই।”
সেখানে কী করলে? মিনাজের জবাব, “স্টেশনের সাজানো বাগান ঘোরার পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবির প্রদর্শনী ট্রেনও ঘুরে দেখি। এসব দেখতে দেখতে কখন সন্ধ্যা পয়ে গিয়েছিল বুঝতে পারিনি। সন্ধ্যা নামার পরেই কী ভাবে বাড়ি ফিরব তা ভেবে চিন্তায় পড়ে যাই।” রেল পুলিশ সূত্রে জানা দিয়েছে, কী করবে ভেবে না পেয়ে ওরা পুরুলিয়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ঘোরাঘুরি করছিল। ওদের সঙ্গে বড় কেউ না থাকায় রেল পুলিশ কর্মীদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসা করে সব জেনে ওদের বাড়িতে ফোন করে খবর দেওয়া হয়।
আরপিএফের পুরুলিয়ার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ অজয়কুমার গরাই বলেন, “ওরা পালিয়ে এসেছে জেনে বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। রাতে খাবার দিই।” বৃহস্পতিবার দুপুরে আফসারের বাবা অসিউদ্দিন কাজী মিনাজের বাবা আমরুল মণ্ডল বলেন, “ওরা না বলে বাড়ি ছাড়ায় সারা দিন খুব উদ্বেগের মধ্যে ছিলাম। রাতে খবর পেয়ে স্বস্তি পাই। এবার ওদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরতে চাই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.