|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা
নেই পরিকাঠামো |
ধুঁকছে স্বাস্থ্য |
স্বপন দাস |
বহির্বিভাগে উপচে পড়া ভিড়। সামলাচ্ছেন এক জন চিকিৎসক। স্ত্রীরোগ ও শিশুবিভাগে কোনও চিকিৎসক নেই। প্যাথলজি বিভাগের একমাত্র টেকনিশিয়ান (রক্ত) অবসর নেওয়ার পরে কেউ আসেননি।
সুপার নেই। বিএমওএইচ-ও নেই। এই অবস্থায় চলছে বজবজ ২ নম্বর ব্লকের লক্ষ্মীবালা দত্ত গ্রামীণ হাসপাতাল।
সাতের দশকের গোড়ায় দশ বিঘা জমির উপর তৎকালীন বিধায়ক প্রভাস রায়ের উদ্যোগে স্থানীয় দত্ত পরিবারের দান করা জমিতে লক্ষ্মীবালা দত্ত গ্রামীণ হাসপাতালের সূচনা করেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী গোবিন্দ নস্কর। প্রথমে এটি ছিল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। পরে এখানে ১০টি শয্যা চালু হয়। এখন ২০টি শয্যা রয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবাও শুরু হয়।
|
|
এখন হাসপাতালের চার পাশে জল জমে থাকে। আগাছায় ভরা। চারপাশ অপরিচ্ছন্ন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। চিকিৎসকদের থাকার জন্য কোয়ার্টার রয়েছে। কিন্তু সেগুলির খুবই খারাপ অবস্থা। তাই কেউ থাকেন না। জরুরি বিভাগ থাকলেও পরিকাঠামোর সমস্যায় রোগীদের অন্য হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। এমনকী গ্রামীণ এলাকার সন্তানসম্ভবাদের প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে টালিগঞ্জের এমআর বাঙ্গুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কোনও অপারেশন থিয়েটার তৈরি হয়নি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, “চিকিৎসকের সংখ্যা কম থাকায় চাপ বেড়ে যাচ্ছে। ইচ্ছে থাকলেও ভাল পরিষেবা দেওয়া যায় না।”
হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রতি দিন গড়ে প্রায় ৩০০ জন রোগী আসেন। চিকিৎসক থাকার কথা ১১ জন। পাঁচ জন চিকিৎসক বদলি হয়ে গিয়েছেন। দু’জন পোয়ালি ও রানিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন। এখন চার জন চিকিৎসক ২০ শয্যার এই হাসপাতালটি
চালান। অধিকাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন। ফলতা থেকে চিকিৎসা করাতে আসা শিবাণীদেবী বলেন, “ডাক্তার নেই। খালি বলে, কলকাতায় গিয়ে বিদ্যাসাগরে দেখাও। আমাদের পয়সা নেই। যাব কী করে?” অ্যাম্বুল্যান্স খুঁজতে ব্যস্ত সাদিক বলেন, “বউয়ের প্রসব যন্ত্রণা উঠেছে। শুরু থেকে এখানেই দেখায়। এখন বলছে এখানে কিছু হবে না। বিদ্যাসাগর কিংবা বাঙ্গুরে যাও। বউ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। এত দূরের রাস্তা। জানি না কী হবে?” |
|
এই হাসপাতালের কর্মী ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল প্রভাবিত হেল্থ ফেডারেশনের জেলা সম্পাদক মৃণাল মজুমদার বলেন, “চিকিৎসক নেই। পরিকাঠামোয় সমস্যা রয়েছে। বহু মানুষ আসেন। অন্তর্বিভাগে শয্যা ফাঁকা পড়ে থাকে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিখা অধিকারী বলেন, “চিকিৎসকের সমস্যা মিটছে। আমরা অনেক জায়গায় নতুন চিকিৎসক পাঠাচ্ছি। তবে ল্যাব-টেকনিশিয়ানের সমস্যা আছে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল। |
|
|
|
|
|