|
খুশিতে বাঁচুন |
|
কেট্ল বেল
ফিরে আসছে শরীরচর্চার পুরনো অনেক পদ্ধতি।
তেমনই একটি নিয়ে আলোচনায় রণদীপ মৈত্র |
|
পুরনো চাল ভাত বাড়ে। শরীরচর্চার জগতে এখন এই প্রবাদটি বেশি করে খাটে। গতানুগতিক যন্ত্র নির্ভর শরীরচর্চার বদলে ‘ইন্ডিয়ান ক্লাবস’, ‘স্যান্ড ব্যাগ’ বা ‘কেট্ল বেল’-এর মতো পুরনো পদ্ধতি দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। সুফলও মিলছে। এই পদ্ধতি যন্ত্রনির্ভর পদ্ধতি থেকে অনেকটাই আলাদা। এই সব ব্যায়ামে কোনও একটি অংশের উপরে গুরুত্ব না দিয়ে সমগ্র শরীরের উপরে নজর দেওয়া হয়। এ বার কেট্ল বেল নিয়ে
কথা বলব।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ডাম্বেল, বারবেল ও ডান্ডা নিয়ে শরীরচর্চাই বেশি প্রচলিত ছিল। ৭০-এর দশকে জিমের যাত্রা শুরু। ডাম্বেল ও বারবেলের জায়গায় এল নানা যন্ত্র। তার পরে ধীরে ধীরে সমস্ত ব্যবস্থাটিই যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়ে। এই ব্যবস্থার নানা সমস্যা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই শরীরের সুস্থ বিকাশ হয় না। যদিও এখনও এই ব্যবস্থাই প্রধান। আশার কথা শরীরচর্চায় আগ্রহীদের একাংশ কিন্তু এখন পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাইছেন।
বিশেষজ্ঞরা পুরনো আখড়ার শরীরচর্চার পদ্ধতিকে ‘ডাইনোসর’ পদ্ধতি বলেন। এতে কঠিন পরিশ্রমে সুগঠিত শরীর তৈরি হয়। তবে যাঁরা সৌন্দর্য নিয়ে বেশি আগ্রহী তাঁদের এ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত নয়। কারণ, আখড়ায় সৌন্দর্যের থেকে শক্তির দিকে বেশি নজর দেওয়া হত। কেট্ল বেল এ ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
কেট্ল বেল হল ওজন নিয়ে ব্যায়াম। কেট্ল বেল দেখতে কামানের গোলার মতো। সঙ্গে কেটলির মতো হাতল লাগানো। |
|
কেট্ল বেল নিয়ে ব্যায়াম আগেই প্রচলিত ছিল। তবে এ দেশে নয়। অনেকে মনে করেন জারের রাশিয়ায় এই ব্যায়ামের প্রচলন হয়। পরে রাশিয়ার অলিম্পিক দলের অনুশীলনেও এই ব্যায়াম করা হত। জনপ্রিয়তা এতই বাড়ে যে অতলান্তিক পার হয়ে আমেরিকায়ও এই ব্যায়ামের চর্চা শুরু হয়। এখন এ দেশে অনেকেই এই ব্যায়ামটির চর্চা করছেন, বিশেষ করে ক্রীড়াবিদরা।
এই ব্যায়াম করার সময়ে ভারসাম্য কেন্দ্র স্থির থাকে না। ফলে আলাদা করে কোনও একটি অঙ্গ নয়, সমগ্র শরীরের ব্যায়াম হয়। একই সঙ্গে অনেকগুলি মাংসপেশির ব্যায়াম হয়। এ ক্ষেত্রে শরীরে স্থিতিস্থাপকতায় চাপ পড়ে। এই ব্যায়ামে শরীরের মূল পেশিগুলিও অংশ নেয়।
|
|
কেট্ল বেল নিয়ে ব্যায়াম করার আগে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিতে হবে। ঠিক পদ্ধতি না জানলে আঘাত পেতে পারেন। প্রাথমিক পদ্ধতিগুলি জানার পরে জটিল ব্যায়ামগুলি করা উচিত। শরীর নমনীয় হলে এবং ‘লিফ্টিং’-এর পদ্ধতি ঠিকমতো জানলে আঘাত লাগার আশঙ্কা কম থাকে। তবে জিমে ব্যবহৃত কয়েকটি যন্ত্রের থেকে কেট্ল বেল নিরাপদ।
কেট্ল বেল নিয়ে ব্যায়াম করলে বিপাকের হার বেড়ে যায়। এক বারের চর্চায় প্রচুর ক্যালরি খরচ হয়। ফলে মেদ কমে।
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|