ভারত যে রকম গাড্ডায় পড়ে আছে তাতে একমাত্র বাঁচার রাস্তা হচ্ছে, ইতিবাচক ভাবা। আমার মতে, এক কোণে বসে আগের হারগুলো নিয়ে বিলাপ করার কোনও মানে হয় না। সেটা করলে তো সামনে যে নতুন যুদ্ধ আসছে, সেটা শুরু হওয়ার আগেই তুমি হেরে বসে থাকছ।
গর্ব পুনরুদ্ধার তো করতেই হবে। পাশাপাশি ধোনিদের মনে রাখতে হবে যে, মাত্র কয়েক মাস আগে ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৫-তে পরের বিশ্বকাপের জন্য ওদের আগে থেকে ভাবতে হবে। পরের বিশ্বকাপে কিন্তু সচিন, রাহুল, লক্ষ্মণ, জাহিরের মতো ক্রিকেটাররা আর ক্রিকেট খেলবে না।
যার মানে হচ্ছে, এখন থেকেই দল নির্বাচন নিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভারতের নির্বাচনী প্রথাটা কিন্তু সাংঘাতিক ভুলে ভরা। সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে, চার জন নির্বাচক চারটে অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করে। এই পদ্ধতিতে প্রথমেই এমন একটা সুর তৈরি হয়ে যাচ্ছে যে, গুণগত মানের চেয়ে অঞ্চলভিত্তিক নির্বাচন বেশি প্রাধান্য পাবে। রাজনৈতিক ভাবে এটা সঠিক স্ট্র্যাটেজি হতে পারে। কিন্তু এই প্রথায় কোনও ভাবেই সেরা একাদশ বেছে নেওয়া সম্ভব নয়। |
কোনও কোনও মহল থেকে আমি শুনেছি যে, অনিল কুম্বলেকে প্রধান নির্বাচক করার কথা উঠেছে। আমার মতে, এটা দুর্দান্ত ভাবনা। অনিলের সততা, পরিশ্রমী মনোভাব, ক্রিকেটীয় ভাবনা আর অলরাউন্ড যোগ্যতার উপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে। অনিল হচ্ছে এমন এক জন পুরুষ যে চুপচাপ হাত গুটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী যেটা করা দরকার সেটা করেই ছাড়বে।
চলতি সিরিজে ইংল্যান্ড যে এত ভাল করছে তার অন্যতম কারণ কিন্তু ওরা দল নির্বাচনটা ঠিক-ঠাক করছে। বোঝাই যাচ্ছে নির্বাচকেরা আগে থেকে ভেবেছে। যার জন্য প্লেয়ারদের একটা পুলও ওরা তৈরি রাখতে পেরেছে। এখন ওদের রিজার্ভে কারা আছে দেখুন। ট্রেমলেট, ফিন, পানেসর। যে কেউ যে কোনও মুহূর্তে জাতীয় দলে ঢুকতে পারে।
সেই তুলনায় ভারত এখনও ওদের সিনিয়রদের উপর ভর করে এগোচ্ছে। ওরা যেন বুঝতেই চাইছে না যে, নতুন রক্ত আমদানি করার সময় হয়েছে। তাতে টিমে একটা নতুন স্ফূর্তি যোগ হবে। এনার্জি অনেক বাড়বে। বিশেষ করে এক দিনের ক্রিকেটে ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক তফাত তৈরি করে দেবে। তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ দাও, ওদের উপর আস্থা দেখাও, তার পর দেখো টিম কী রকম পাল্টে গিয়েছে। এই তো হওয়া উচিত ফর্মুলা। সেখানে বার বার বদল ঘটাতে থাকলে দলটা তো আরও দুমড়ে-মুচড়ে যাবে। যে ধরনের ক্রিকেটই হোক, নির্বাচকদের উচিত সব সময় সেরা টিমটাকে বাছা। তার জন্য স্মার্ট চিন্তাভাবনা দরকার। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করার মতো মস্তিষ্ক থাকা দরকার। |