জিকো থেকে মেসি মহাতারকাদের সামনে যুবভারতীর লজ্জার ছবি আর বদলাল না। সরকার পরিবর্তনেও যুবভারতীর বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ছবির পরিবর্তন হল না।
শুক্রবার ম্যাচের প্রায় আধ ঘণ্টা পরে যুবভারতীতে তখন ভেনেজুয়েলার কোচের সাংবাদিক বৈঠক শেষ পথে। লিওনেল মেসি, সের্জেই আগুয়েরো-রা নিজেদের ড্রেসিংরুমে। আর্জেন্তিনার মিডিয়া অফিসার আগেই জানিয়েছিলেন, ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে আসবেন মেসি।
তখনই হঠাৎ লোডশেডিং।
আড়াই মিনিটের মধ্যে আলো ফিরে এল ঠিকই। কিন্তু ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। যুবভারতী ও সরকারি প্রশাসনের উপর কালো দাগ পড়ে গিয়েছে। বিরক্ত ভেনেজুয়েলান কোচ সিজার ফাবিয়াস সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে চলে যান। আর্জেন্তিনা কোচ সাবেইয়া এলেন কিছু পরে। কিন্তু মেসি আর আসতে চাননি।
২০০৪ সালে প্রাক্-বিশ্বকাপে জিকো জাপান টিম নিয়ে খেলতে আসার সময় লোডশেডিং হয়েছিল মাঠের মধ্যে। খেলা বন্ধ করতে হয়েছিল। তবে তখন ফুটবলাররা ততটা ভয় পাননি। কেননা সামনে অত লোক। এ বার ড্রেসিংরুম হঠাৎই অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় চমকে যান আর্জেন্তিনা ও ভেনেজুয়েলার ফুটবলাররা। ভয় পেয়ে যান। দুই দলই দ্রুত ড্রেসিংরুম ছাড়ে। গত বছরও মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে এক বার আলো নিভে গিয়েছিল।
তার আগেও এক বার একই ঘটনা ঘটেছে বড় ম্যাচে। এ বার বিশ্বের অন্যতম সেরা জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদের সামনে একই ঘটনা।
কেন এই লোডশেডিং? ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র ছিলেন স্টেডিয়ামেই। বললেন, “ওটা এমন কিছুই নয়। ট্রান্সফর্মার গরম হয়ে যাচ্ছিল বলে বন্ধ করে দিতে বলেছিলাম।” বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় যে কোনও বিদ্যুৎ-বিভ্রাট এড়াতে স্টেডিয়াম-এর গ্যালারির বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছিল তিনটি জেনারেটরের সাহায্যে। খেলা হয়ে যাওয়ার পর ভেনেজুয়েলা দলের সাংবাদিক বৈঠক চলার সময় স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ স্থির করেন, এ বার জেনারেটর বন্ধ করে তাঁরা গ্রিডেরবিদ্যুৎই ব্যবহার করবেন। এই বিদ্যুৎ লাইনের অদল-বদলের সময়েই কোনও ভুলে সব অন্ধকার হয়ে যায়। বণ্টন কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলেন, কেন যে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনে বিদ্যুৎ লাইনের অদল-বদল করতে গেলেন সেটা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। তাঁদের আগে জিজ্ঞাসা করা হলে এই অদল-বদল করতে তাঁরা নিষেধই করতেন।
খেলার মাঠে আঁধার-লজ্জা আগেও দেখেছে কলকাতা। কখনও বিক্ষুব্ধ কর্মীরা বন্ধ করে দিয়েছেন সরবরাহ। কখনও ইঁদুরে কেটেছে তার। আতঙ্কে বৃহস্পতিবার তো সল্টলেকে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সাব স্টেশনের আশপাশে ইঁদুরের গর্তও খুঁজে বেরিয়েছেন সংস্থার লোক জন! এ বার ইঁদুর আর বিভ্রাট ঘটায়নি ঠিকই, কিন্তু লজ্জার আঁধারে সেই ঢাকাই পড়েছে যুবভারতী। মেসিদের কাছে মান সেই গেলই কলকাতার!
|
আবার বিশৃঙ্খলার চরম উদাহরণ। মেসি-ম্যাচে ঘটে গেল জাতীয় সঙ্গীত-বিভ্রাট। ম্যাচ শুরুর আগে সংগঠকদের ভুলে আর্জেন্তিনা দলের নাম ঘোষণার পর বেজে ওঠে ভেনেজুয়েলার জাতীয় সঙ্গীত। যা নিয়ে মেসিদের যথেষ্ট বিব্রত হতে হয়। |