ফ্লাশিং মেডোর নৈশালোককে আরও বর্ণময় করে তুললেন যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের দুই শীর্ষ বাছাই। নোভাক জকোভিচ এবং ক্যারোলিন ওজনিয়াকি।
সেই ১৯৮৭-তে ব্যারি মোইরের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে শেষ বার ‘ট্রিপল ব্যাঙ্গেল’ করার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন ইভান লেন্ডল। ৬-০, ৬-০, ৬-০! জকোভিচ অল্পের জন্য সেই বিরল নজির ছুঁতে পারলেন না। মেসির দেশের টেনিস প্লেয়ার কালোর্র্স বার্লক-কে দ্বিতীয় রাউন্ডে হারালেন ৬-০, ৬-০, ৬-২। টানা ১৪টা গেম হারার পর তৃতীয় সেটের তৃতীয় গেমে, তা-ও বিশ্বের এক নম্বরের সার্ভিস ভেঙে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ৭৪ নম্বর আর্জেন্তেনীয় আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামের ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডে নিজের নামের পাশে প্রথম পয়েন্ট লিখতে সমর্থ হন। এ মরসুমে ৬১ ম্যাচের মধ্যে ৫৯টি জয়ী জকোভিচ অবশ্য বলেছেন, “তৃতীয় সেটের মাঝে কিংবা ম্যাচ শেষে আমি মোটেই স্কোরলাইন নিয়ে ভাবিনি। কিন্তু দর্শকেরা ব্যাপারটার মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন। ‘ট্রিপল ব্যাঙ্গেল’-এর জন্য আমাকে আরও বেশি উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাতে আবার আমার চেয়ে আমার প্রতিপক্ষই যেন বেশি তেতে উঠেছিল। তৃতীয় সেটে কার্লোস বেশ ক’টা ভাল উইনার মেরেছে। সত্যি বলতে কী, তৃতীয় সেটের ওই সময়টা দারুণ উপভোগ করেছি। বিশ্বাস করুন, প্রচণ্ড চাপেও ছিলাম। মনে হচ্ছিল ৫-৫ স্কোরে খেলা চলছে, এতটাই উত্তেজনা ছিল! কিন্তু দর্শকদের আশা পূরণ হল না।” |
মেয়েদের বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর ওজনিয়াকি আবার ৬-২, ৬-০ আরাঞ্জা রুস-কে উড়িয়ে দিয়ে তৃতীয় রাউন্ডে ওঠার পর সেরেনা উইলিয়ামসের শরণাপন্ন হয়েছেন সাহায্যের জন্য। তবে বিষয়টা টেনিস নয়বরং প্রেম! ডেনমার্কের বছর একুশের ওজনিয়াকির সঙ্গে প্রেমপর্ব চলছে ইউ এস ওপেন গল্ফ চ্যাম্পিয়ন নর্দান আয়ার্ল্যান্ডের ররি ম্যাকলেরয়-এর। ইউ এস ওপেন টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম খেতাব ওজনিয়াকি তুলতে পারেন কি না সেটা পরের কথা। এই মুহূর্তে ওজনিয়াকি ১৩ গ্র্যান্ডস্লাম চ্যাম্পিয়ন সেরেনার কাছে নাকি জানতে চেয়েছেন, প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে। আর ম্যাকলেরয়ের প্রেমিকা ওজনিয়াকিকে সেরেনার পরামর্শ, “পুরুষ বন্ধুর মোবাইলের দিকে কখনও তাকাবে না। ওর চেয়ে খারাপ কাজ আর কিছু হতে পারে না। সম্পর্ক সফল ভাবে টিকিয়ে রাখতে গেলে ওই কাজটি কখনও কোরো না।” লকাররুমে সেরেনার সঙ্গে আচমকা নিজের প্রেমিক প্রসঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনাকে ওজনিয়াকি অবশ্য “স্রেফ রসিকতা” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
এ সবের মধ্যেই নিঃশব্দে তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছেন রজার ফেডেরার, মারিন চিলিচ, নিকলো ডাভিডেঙ্কো, কার্লোস ফেরেরো, শিয়াভোনে, কুজনেৎসোভা, ইভানোভিচরা। ভারতীয়দের জন্য ভাল-খারাপ দুই খবরই রয়েছে। পুরুষ ডাবলসে ইন্দো-ফিলিপিন্স জুটি সোমদেব-হুই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছেন। রুশ জুড়ি আন্দ্রিভ-কুনিৎসিনকে ৬-৩, ৬-৪ হারিয়ে। তবে মিক্সড ডাবলসে মহেশ-সানিয়া জুটি প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গেলেন। চেক জুড়ি চার্মাক-হ্রাদেকার কাছে ৩-৬, ৬-৭ (৫-৭) হেরে।
|
যুক্তরাষ্ট্র ওপেন থেকে শারাপোভার বিদায় |
এ বারের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে এখন অবধি বৃহত্তম অঘটন। মেয়েদের তৃতীয় বাছাই ও ২০০৬-এর চ্যাম্পিয়ন মারিয়া শারাপোভা তৃতীয় রাউন্ডে ৩-৬, ৬-৩, ৪-৬ হেরে গেলেন ইতালির ফ্লাভিয়া পেনেত্তার কাছে। যাঁকে সানিয়া মির্জারও এক বার হারানোর নজির আছে। ডাবলসে সানিয়া-ভেসনিনা প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন ৬-১, ৭-৬ স্যাভচুক-দিয়াচেঙ্কোকে হারিয়ে। পুরুষ ডাবলসে গতবারের ফাইনালিস্ট বোপান্না-কুরেশি শেষ ষোলোয় পৌঁছেছেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে মার্কস-সেরেটারি জুটিকে ৭-৬, ৭-৬ হারায় ইন্দো-পাক জুটি। |