রাতের চুঁচুড়া
সন্ধ্যা নামলেই গঙ্গার ঘাট চলে যায় নেশাড়ুদের দখলে
য়েক মাস আগে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে জেলাশাসকের বাংলোর অদূরে দিদির শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে মদ্যপ যুবকদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছিল তরতাজা তরুণ রাজীব দাসকে। তার পর রাজ্যজুড়েই রাতের মৌতাত থামাতে নড়েচড়ে বসেছিল পুলিশ-প্রশাসন। মদ-গাঁজার ঠেকে লাগাতার পুলিশি অভিযান চলেছিল। হয়েছিল ধড়পাকড়ও। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন সাধারণ মানুষ, বিশেষত মহিলারা।
এর ব্যতিক্রম ছিল না হুগলি জেলার সদর শহর চুঁচুড়াও। কিন্তু সাধারণ মানুষের মন থেকে ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এই শহরের পরিস্থিতি আবার যে কে সেই! বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে, সরকারি দফতরের আশপাশের গলিঘুঁজিতে, গঙ্গার ঘাটে সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয়ে যাচ্ছে নেশার রমরমা। টহলদারি পুলিশের চোখের আড়ালেই চলে বিভিন্ন রকম অসামাজিক কার্যকলাপ। রাতের আসরে আনাগোনা চলে বহিরাগতদেরও।
ডিএসপি (ট্রাফিক) সুভাষ রক্ষিত বলেন, “সারা দিনের মতোই সন্ধ্যা এবং রাতেও নিয়মিত পুলিশের টহল চলে। গাড়িও পরীক্ষা করা হয়। তবে, তা সত্ত্বেও অসামাজিক কাজ হয়ে থাকলে, পুলিশ সে ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেবে।”
সন্ধ্যা থেকেই চুঁচুড়া স্টেশন সংলগ্ন জায়গায় মদের ঠেক রমরমিয়ে চলতে থাকে। মদ্যপ অবস্থায় চলতে থাকে অকথ্য গালিগালাজ। কখনও কখনও মারামারিও বেধে যায় নেশাখোড়দের মধ্যে। নিত্যযাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে বাড়ি ফেরার পথে এই দৃশ্য দেখতে অভ্যস্ত। মহিলা যাত্রীরা দ্রুত বেগে পা চালিয়ে ওই এলাকা পেরোন। স্টেশন রোডের বিভিন্ন দোকানের আড়ালেও ছোট ছোট ঠেক বানিয়ে চলে রাতের মজলিস। হুগলি ও ব্যাণ্ডেল স্টেশনেও চলে অল্প বয়সীদের নেশার আড্ডা। খাদিনামোড়ে আইল্যান্ডের মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বাতিস্তম্ভ। তা থেকে ভেপার ল্যাম্পের আলোর বিচ্ছুরণে জ্বলজ্বল করে গোটা চত্ত্বর। সেই আলোতে চোখ রাখলে দেখা যায়, ধরমপুর পুলিশ ফাঁড়ির চার দিকে রমরমিয়ে চলছে মদ ব্যবসায়ীদের কারবার। রিক্সাচালক থেকে মধ্যবিত্ত পরিবারের যুবক কে নেই সেখানে! টাকা ফেললেই এখানে হাজির একের পর এক রঙিন বোতল। সরকারি দফতরগুলির সামনে ছুটির পরে অন্ধকারের সুযোগে জুয়া-আর মদের কারবার চলে। যদিও, পুলিশের পা পড়ে না এখানে।
ঐতিহ্যবাহী ঘড়ির মোড়ের কাছে বার লাইব্রেরির পিছনে পরিত্যক্ত একটি সরকারি বাড়িতে সকাল দিন-রাত জুয়ার আড্ডা বসে। বলা বাহুল্য, সেই আড্ডাও নেশাবর্জিত নয়। অথচ পাশেই, পুলিশ সুপারের অফিস, জেলাশাসকের দফতর, জেলা আদালত-সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দফতর। উত্তর ২৪ পরগনা থেকে গঙ্গা পেরিয়ে এসেও দুষ্কৃতীরা চষে বেড়ায় এই সব এলাকায়। অভিযোগ, সব জেনেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না পুলিশকে। সেই সুযোগে সংগঠিত হয় নানা অপরাধ। দিনের বেলাতেই চুরি-ছিনতাই হয়। জেলাশাসকের অফিসের পিছনে যে তিনটি মাঠ আছে, সেখানে নেশাগ্রস্ত যুবকদের পাশাপাশি রাতে দেখা মেলে তরুণীদেরও। অনেক কমবয়সী ছেলেমেয়েও জড়িয়ে পড়ে নেশার আবর্তে। তার উপর, বিকেল থেকেই গঙ্গার ঘাটে চলে দেহ ব্যবসা। এ জন্য গঙ্গা পেরিয়েও অনেক মহিলা আসে। ঘাটে ইটের দেওয়ালে লেখা ‘সতর্কবাণী’কে যেন পরিহাস করে ওই সমস্ত কার্যকলাপ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.