|
|
|
|
অতিরিক্ত যাত্রী তোলা নিয়ে প্রশ্ন |
চণ্ডীতলায় বাস-ট্রেকারে ধাক্কা লেগে বৃদ্ধার মৃত্যু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
চলন্ত ট্রেকারে মিনিবাসের ঘষা লেগে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে হুগলির চণ্ডীতলার নৈটিতে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম আম্বিয়া বেগম (৬৪)। বাড়ি জনাই চিকরণ্ডের ডানবতীপুর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে চণ্ডীতলা-শ্রীরামপুর রুটের একটি ট্রেকারে চেপে বড়ায় মেয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন আম্বিয়া বেগম। তিনি ট্রেকারের ধারে কোনওরকমে বসেছিলেন। তাঁর শরীরের অনেকটা অংশই বাইরে ঝুলছিল। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নৈটি পোলের কাছে উল্টোদিক থেকে আসা শ্রীরামপুর-ডোমজুড় রুটের একটি মিনিবাসের সঙ্গে ট্রেকারটির ঘষা লাগে। তাতেই জখম হন ওই বৃদ্ধা। স্থানীয় মানুষজন তাঁকে উদ্ধার করে চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায় চণ্ডীতলা থানার পুলিশ।
ঘটনার পরেই অবশ্য বেগতিক বুঝে দু’টি গাড়িই গতি বাড়িয়ে এগিয়ে যায়। কিছুদূরে গিয়ে ট্রেকার ফেলে সেটির চালক পালিয়ে যান। ট্রেকারটিকে আটক করে পুলিশ। বাসটি অবশ্য পালিয়ে যায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “বাসটিকে ধরার চেষ্টা চলছে। দু’টি গাড়ির চালককেই গ্রেফতার করা হবে। মৃতার ছেলে দু’টি গাড়ির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।”
হুগলি জেলা জুড়ে ট্রেকারগুলি যে ভাবে যাত্রী তোলে, তাতে যে কোনও দিন বড় বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়। ট্রেকারের ভিতরে গাদাগাদি করে যাত্রীরা বসে থাকেন। তার পরেও ২০-২৫ জন পর্যন্ত অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়, যাঁরা ট্রেকারের পাদানিতে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলতে থাকেন। অনেকে আবার ট্রেকারের ছাদের উপর ওঠে থাকেন। বস্তুত একটা গাড়ি চলে যাবার পর দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হয় পরেরটির জন্য। পথে বের হওয়া মানুষ সময় বাঁচাতে বিপদের ঝুঁকি নেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত যানবাহণের অভাবেই এ ভাবে চলাফেরা করতে বাধ্য হন সাধারণ মানুষ। স্কুল পড়ুয়া থেকে মহিলা বা বৃদ্ধ সকলেই এই ভাবে প্রাণ হাতে করে যাওয়া-আসা করেন। বহু জায়গাতেই রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরা থাকে। ফলে, ভাঙাচোরা রাস্তায় ট্রেকার উল্টে যাওয়ার ঘটনা বিরল নয়।
তার উপর, রেষারেষি লেগেই আছে। দিনের পর দিন এই পরিস্থিতি চললেও জেলা প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই বলে অভিযোগ। যাত্রীদের অভিজ্ঞতা, বহু সময়েই বাস বা ট্রেকার অকারণেই অত্যন্ত ঢিমেতালে চলতে থাকে। কিন্তু বিকল্প কোনও গাড়ি চলে এলেই তার গতি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে গাড়ির চালক বা কন্ডাক্টরদের সঙ্গে বচসাও বাধে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। গাড়ির লোকজন কোনও তোয়াক্কাই করেন না বলে অভিযোগ। যদিও, দুর্ঘটনা ঘটলে বলি হয় সাধারণ মানুষ। এ দিনের ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই এই বিষয়গুলি সামনে চলে এসেছে। পুলিশের বক্তব্য, পরিস্থিতির কথা তাদের অজানা নয়। কিন্তু, গাড়িঘোড়া কম থাকায় গন্তব্য পৌঁছতে মানুষ এ ভাবেই যাতায়াত করেন। অফিস-টাইমে এই চাপ আরও বেশি থাকে। তা ছাড়া জেলা প্রশাসনের যে বিভাগের বিষয়টি দেখভাল করার কথা, তাদের এ নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। |
|
|
|
|
|