বকেয়া কর মেটানোর জন্য অণ্ণা হজারের সহযোগী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গত মাসে নোটিস পাঠিয়েছিল আয়কর দফতর। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে টিম অণ্ণা। জানা গিয়েছে, শক্তিশালী লোকপাল বিল আনার দাবিতে গত ১৬ অগস্ট অণ্ণা অনশনে বসার এক সপ্তাহ আগেই আয়কর দফতরের নোটিস গিয়েছিল কেজরিওয়ালের কাছে। কেজরিওয়ালকে আয়কর দফতর অবিলম্বে বকেয়া ৯ লক্ষ টাকা জমা দিতে বলে। কেজরিওয়াল এখনও আইআরএস-এর কর্মী। ২০০৬ সালেই তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়নি। গত কয়েক বছর বিশেষ চুক্তিপত্রে সই করে কাজ করছেন তিনি। কেজরিওয়াল বলেন, “ওঁদের (আয়কর কর্তা) বলেছি আমি কোনও ভাবে চুক্তি ভঙ্গ করে থাকলে দেখান। কিন্তু তা ওঁরা দেখাতে চাননি।” অণ্ণার আন্দোলনে যুক্ত থাকার জন্যই তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে বলে মনে করছেন কেজরিওয়াল। |
কেজরিওয়ালকে আয়কর দফতরের নোটিস পাঠানো এবং সেই খবর এখন রটিয়ে দেওয়ার মধ্যে সরকারের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন টিম-অণ্ণার অন্যতম সদস্য বিচারপতি সন্তোষ হেগড়ে। তিনি বলেছেন, “অণ্ণার আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা নেওয়ার জন্যই সম্ভবত কেজরিওয়ালের ব্যাপারে প্রতিহিংসাপরায়ণ নীতি নিয়েছে সরকার।” একই সুরে বিজেপি-র মুখপাত্র রাজীবপ্রতাপ রুডি বলেছেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ গলা তুললেই তাকে নিশানা করে নিচ্ছে সরকার।” |
বিতর্কে অরবিন্দ |
|
কংগ্রেস তথা সরকারের তরফে অবশ্য সলমন খুরশিদ জানিয়েছেন, আয়কর দফতরের নোটিস পাঠানোর মধ্যে প্রতিহিংসার কোনও ব্যাপার থাকতেই পারে না। কর বকেয়া থাকলে দেশের যে কোনও নাগরিককেই নোটিস দিতে পারে আয়কর দফতর। খুরশিদ বলেন, “উনি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে দেশের দুর্নীতি দূর করতে চাইছেন ভাল কথা। কিন্তু সে জন্য বাড়ির বিদ্যুতের বিল জমা দিতে হবে না এমন তো নয়। আয়কর বাকি থাকলে তা তো দিতেই হবে।” এ দিকে, অণ্ণাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার শুনানি শুনতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেন আইনজীবী ভীম সিংহ। কেন অণ্ণাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার উত্তর চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী কপিল সিব্বলকে নোটিস পাঠানোর আবেদনও করেন ভীম। সর্বোচ্চ আদালতের দুই বিচারপতি পি সদাশিবম ও বি এস চৌহানকে নিয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে যার হয়ে বা যার বিরুদ্ধে এই মামলা তাদের অনুপস্থিতিতে শুনানি হওয়া উচিত নয়।
বেঞ্চের আরও বক্তব্য, গ্রেফতারি নিয়ে সরকার এবং অণ্ণার মধ্যে আর কোনও বিবাদ নেই। বিষয়টি মিটমাট হয়ে গিয়েছে। তাই গ্রেফতারি নিয়ে শুনানি অর্থহীন। বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, “দুই পক্ষই তো ব্যাপারটা নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নিয়েছে। এখন আর শুনানির প্রয়োজন নেই।” অভিযোগকারী ভীম সিংহকে বেঞ্চ জিজ্ঞাসা করেছে, “অণ্ণা নিজেই বলেছেন এখন তিনি স্বস্তিতে আছেন। তা হলে আপনি কেন মিছিমিছি ব্যাপারটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন?” |