মিড-ডে মিলের রান্না করাকে কেন্দ্র করে রানিগঞ্জের জেমারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সিপিএম-তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এর জেরে শুক্রবার তৃণমূল কর্মীরা স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নার কাজ বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবারও ওই তৃণমূল কর্মীরা স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নার উনুনে জল ঢেলে রান্নার কাজ বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ।
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা জেমারি পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এর আগে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ১৫ জন এই স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার কাজ করতেন। তাঁদের মধ্যে ১২ জন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে ঝামেলা হওয়ায় ইস্তফা দিয়ে কাজ ছেড়ে চলে যান। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে ৯ জন কর্মী ফের মিড-ডে মিলের কাজ করতে ইচ্ছুক। গত ১৬ অগস্ট বিডিও, বিদ্যালয় অবর পরিদর্শক-সহ সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি সর্বদলীয় বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ওই ৯ জন কর্মীকে ফের স্কুলের মিড-ডে মিল রান্নার কাজে বহাল করা হবে। ঠিক হয়, প্রতি সপ্তাহে চার জন করে কর্মী স্কুলে মিড-ডে মিল রান্নার কাজ করবেন। সেই মতো বৃহস্পতিবার চার জন কর্মী ওই বিদ্যালয়ে রান্নার কাজ করতে যান। তবে তৃণমূল নেতা সঞ্জিত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা এ দিন উনুন ভেঙে দিয়ে রান্নার কাজে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার উনুন সারানোর পরে ওই চার কর্মী ফের কাজ করতে যান। এ দিন তৃণমূল নেতা পাঁচু রুইদাসের নেতৃত্বে এক দল তৃণমূল সমর্থক স্কুলের উনুনে জল ঢেলে দেয় বলে অভিযোগ। এর জেরে পরপর দু’দিন স্কুলে মিড-ডে মিল বন্ধ থাকে। জেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা সিপিএম নেতা নিমাই ঘোষ জানান, পর পর দু’ দিনই তাঁরা বিডিও-র সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তবে তাঁর কাছ থেকে কোনও আশ্বাস মেলেনি বলে নিমাইবাবুর দাবি।
নিমাইবাবুর অভিযোগ, ১২ জন কর্মী কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে যে তিন কর্মী স্কুলে রান্নার কাজ করতেন তাঁদেরই অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে তৃণমূলের দাবি। এক মাস অন্তর ওই তিন জন কর্মী এবং পুনর্নিযুক্ত ৯ কর্মী স্কুলে রান্নার কাজ করবেন। এই দাবিতেই পরপর দু’দিন ধরে রান্নার কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।
তৃণমূল নেতা তথা আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ বিষয়টি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। অবিলম্বে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মহকুমাশসককের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। কোনও ধরণের অন্যায্য দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে না। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা পাঁচু রুইদাস ও সঞ্জিত মুখোপাধ্যায় অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁদের দাবি, সিপিএম ১৬ অগস্টের বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানছেন না। এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই। বিডিও সুবোধ ঘোষ বলেন, আগামী মঙ্গলবার একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে স্কুলের এই সমস্যা সমাধান করবেন মহকুমাশাসক। আমার আর কিছু বলার নেই। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুপ্রীতি সিংহ বর্মনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। |